তরীকা-ই-মুহম্মদীয়া আন্দোলন কী?

তরীকা-ই-মুহম্মদীয়া আন্দোলন কী?

 

 

ভূমিকা: ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতীয় মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থার দিন দিন অবনতি ঘটতে থাকে। অজ্ঞতা ও কুসংস্কার মুসলিম সমাজে স্থায়ী বাসা বাঁধতে শুরু করে। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি কারণে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোপ ও বিক্ষোভ দানা বেঁধে উঠে। মুসলমানদের অজ্ঞতা ও কুংসস্কার দূরীকরণে ‘তরীকা -ই-মুহম্মদীয়া’ সংস্কার আন্দোলন পশ্চাৎপদ মুসলিম সম্প্রদায়কে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। নিম্নে তরীকা- ই-মুহম্মদীয়া আন্দোলন ব্যাখ্যা করা হলো:

 

 

তরীকা-ই-মুহম্মদীয়া: যেসব মুসলিম সমাজসংস্কারক মুসলমান সমাজের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদিত করেছিলেন তার মধ্যে সৈয়দ আহমদ শহীদ ছিলেন অন্যতম। তার পরিচালিত ধর্মীয় সংস্কারক আন্দোলনই হলো ‘তরীকা-ই- মুহম্মদীয়া’ আন্দোলন।

পশ্চাৎপদ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুসলিম সম্প্রদায়কে অবক্ষয়ের হাত হতে রক্ষা করতেই সৈয়দ আহমদ তরীকা-ই- মুহম্মদীয়া আন্দোলন পরিচালনা করেন। ১৮২২ সালে তিনি মক্কা থেকে হজ সম্পন্ন করে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও বিপথগামী মুসলিম সমাজের নবজাগরণের জন্য আত্মনিয়োগ করেন। সৈয়দ আহমদ শহীদ ছিলেন অসাধারণ সংগঠন শক্তির অধিকারী একজন প্রতিভাশালী ব্যক্তিত্ব। তার প্রেরণা ও প্রচেষ্টায় ধর্মসংস্কার আন্দোলন বেশ বেগবান লাভ করে। তিনি এ সময় তরীকা-ই-মুহম্মদীয়া নামে ধর্মীয় সংগঠনে গড়ে তোলেন। সৈয়দ আহমদ শহীদের ধর্মীয় সংস্কারের বাণী মুসলমানদের মধ্যে দারুণ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে এবং বহু মুসলমান তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। এ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করা এবং ইসলামি আদর্শ স্থাপন করে জনগণকে উৎসাহিত করা। তিনি মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন, শিখদের অত্যাচার হতে মুসলমানদের রক্ষা, জেহাদের পরিকল্পনা সংস্কার উদ্যোগ ও প্রচারণা প্রভৃতির মাধ্যমে আন্দোলনকে বেগবান করে তোলেন।

 

উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ভারতের মুসলিম জাগরণের ইতিহাসে সৈয়দ আহমদ শহীদ পরিচালিত তরীকা-ই-মুহম্মদীয়া আন্দোলন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় মুসলিম সমাজ থেকে কুসংস্কার দূরীকরণে এ আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম।