ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী

ওয়াহাবি আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী

 

 

ভূমিকা: ব্রিটিশ শাসনামলে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সভ্যতার প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু ও মুসলিম সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করতে বেশকিছু সংস্কার আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। এ সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মুসলিম সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করে আধুনিকতার দিকে ধাবিত করার ক্ষেত্রে সৈয়দ আহমদ এর পরিচালিত ওয়াহাবি আন্দোলন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইসলামের আদর্শে মুসলিম সমাজকে গঠন করে তাদেরকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার অভিপ্রায়ে ওয়াহাবি আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অবশ্য এ আন্দোলনের গতি সামাজিক সংস্কার থেকে রাজনৈতিক রূপ লাভ করে এবং ভারতীয় মুসলমানদের জাতীয় আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হতে উৎসাহিত করে। তাই পরবর্তী সময়ে সংঘটিত অপরাপর আন্দোলনগুলোতে ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট।

 

১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন: ব্রিটিশ শাসনামলে মুসলিম ধর্মে বেশকিছু কুসংস্কার বিরাজমান ছিল। আর এ কুসংস্কারের প্রভাবে সমাজে এক ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সৈয়দ আহমদ এ কুসংস্কারপূর্ণ মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রকৃত ইসলামের আদর্শে ফিরিয়ে আনতে তাঁর পরিচালিত ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ঘোষণা করেন যে, প্রত্যেক মুসলমানকে এক আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।

 

২। অনৈসলামিক রীতিনীতি বর্জন: ইংরেজ শাসনামলে মুসলমান প্রচলিত অনৈসলামিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে ওয়াহাবিরা তাদের মতবাদ প্রচার করতে থাকে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম সমাজ থেকে সর্বপ্রকার বিধর্মীয় ও বিজাতীয় রীতিনীতি বর্জন করে প্রকৃত ইসলামি আদর্শ বাস্তবায়ন করা।

 

ঘোর ৩. পৌত্তলিকতা দূরীকরণ: ওয়াহাবিরা সকল প্রকার পৌত্তলিকাতার বিরোধী ছিলেন। তারা জড় বস্তুকে পূজা করার বিরোধী ছিলেন এবং একে পাপ বলে ঘোষণা করেন। ওয়াহাবিদের লক্ষ্য ছিল সমাজ হতে সর্বপ্রকার পৌত্তলিকতা দূর করে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা কায়েম করা।

 

৪. বিশ্বাসী শাসকের শাসনব্যবস্থা কায়েম করা: সৈয়দ আহমদ এর মতে, শাসককে অবশ্যই বিশ্বাসী হতে হবে। কেননা একজন বিশ্বাসী শাসকই পারে জাতির কল্যাণ করতে। এ কারণেই আমরা দেখি ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রসারে খলিফা বা স্থানীয় প্রতিনিধি প্রেরণের সময় তিনি তাঁর অত্যন্ত বিশ্বাসী চারজন সহযোগীকে নির্বাচন করেছিলেন।