কোরবানির পশু চুরি হলে বা মারা গেলে যা করতে হবে

 

 

 

 

কোরবানির পশু চুরি হলে বা মারা গেলে যা করতে হবে

 

 

ঈদুল আজহার অবিচ্ছেদ্য অংশ কোরবানি। আর কোরবানির অবিচ্ছেদ্য অংশ সুস্থ-সবল পশু। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার ইবাদতের জন্য এই পশু জবাই করার নামই কোরবানি। যা প্রতিটি সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নির্ধারিত তিন দিন পশু জবাই করা জায়েজ। বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমাদের দেশেও মহান আল্লাহর এই মহান ইবাদত বেশ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়।

 

 

বাংলাদেশে এবার আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে। কোরবানি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ফজিলতময় ইবাদত। কোরবানির সঙ্গে আত্মত্যাগের মহিমা মিশে আছে। কিন্তু কোরবানি সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে এর সঙ্গে অনেক ভুল ধারণাকেও আমরা গুলিয়ে ফেলি। তার মধ্যে একটি হলো কোরবানির পশু চুরি হয়ে গেলে বা মারা গেলে করণীয় কী?

 

 

কোরবানির পশু যদি চুরি হয়ে যায় বা মারা যায় আর কোরবানিদাতার ওপর পূর্ব থেকে কোরবানি ওয়াজিব থাকে তাহলে আরেকটি পশু কোরবানি করতে হবে। তবে যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় তার জন্য আরেকটি পশু কোরবানি করাও ওয়াজিব নয়। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯)

 

 

 

কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব

 

এক বাক্যে বলতে গেলে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব, যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।

 

 

 

 

নিসাব কী?

 

সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি সোনার মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে, আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন জিনিস যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।

 

 

 

 

কারো কাছে যদি সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে; কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)

 

যেমন কারো কাছে কোরবানির দিনগুলোতে দুই ভরি সোনা ও পাঁচশ’ টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু দুই ভরি সোনার মূল্য ও পাঁচশ’ টাকাকে একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের বেশি হয়ে যায়। তাই তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।

 

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব