HSC পদার্থ বিজ্ঞান ২য় পত্র ১০ম অধ্যায়( ইলেকট্রনিক্স) খ প্রশ্ন ও উত্তর

দশম অধ্যায়ঃ(খ)

১। একটি ট্রানজিস্টরের বেস-অ্যামিটার বায়াসিং কি রকম হওয়া উচিৎ? ব্যাখ্যা কর।[রা.বো.-১৯]

উত্তরঃ একটি ট্রানজিস্টরের বেস-অ্যামিটার বায়াসিং সম্মুখী হ্ওয়া উচিৎ। অর্থাৎ ট্রানজিস্টরটি যদি হয় তবে তার ১ম প্রান্ত ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করে বর্তনী সংযোগ দেওয়া উচিৎ। অপরদিকে ট্রানজিস্টরটি হলে এর ১ম প্রান্ত ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্ত এবং প্রান্ত ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত করে বর্তনী সংযোগ দেওয়া উচিৎ।

২। তাপমাত্রার পরিবর্তন সাপেক্ষে অর্ধপরিবাহী ও পরিবাহীর রোধের মধ্যে ভিন্নতা কিরুপ দেখা যায়?[সি.বো.-১৫]

উত্তরঃ তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে অর্ধপরিবাহী ও পরিবাহীর রোধের পরিবর্তন ঘটে। আমরা জানি, পরিবাহীতা রোধের ব্যস্তানুপাতিক। কাজেই, তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর রোধ হ্রাস পাবে এবং তাপমাত্রা কমলে অর্ধপরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পাবে। আবার, তাপমাত্রা বাড়লে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ায় অণু পরমাণুগুলোর কম্পন বেড়ে যায়, ফলে মুক্ত ইলেকট্রনগুলোর সাথে এদের সংঘর্ষ বৃদ্ধি পায় এবং প্রবাহ চলার পথে বেশি বাধার সৃষ্টি হয়- এতে করে পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পায়। কাজেই, তাপমাত্রা বাড়লে পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি পাবে এবং তাপমাত্রা কমলে পরিবাহীর রোধ হ্রাস পাবে।

৩। ট্রানজিস্টরের ইমিটার ও বেস সমপরিমাণ ডোপায়িত থাকে না কেন? [সকল.বো.-১৮]

উত্তরঃ একটি ট্রানজিস্টরের তিনটি অংশের মধ্যে মাঝের অংশটিকে বলা হয় ভূমি বা বেস। ট্রানজিস্টরের এ বেস অংশটি খুব পাতলা রাখা হয় অর্থাৎ পুরুত্ব খুব কম রাখা হয় এবং খুবই সামান্য পরিমাণে অপদ্রব্য মিশ্রণ করা হয়, যাতে এমিটার বা নিঃসারক থেকে বাহক আধান প্রবাহের সময় কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং বিপরীত আধানের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিরপেক্ষ না হয়। এ কারণেই ট্রানজিস্টরের ইমিটার ও বেস সমপরিমাণে ডোপায়িত থাকে না।

৪। একটি ডিজিটাল ও একটি এনালগ সিগনাল অঙ্কন কর।[ঢা.বো.-১৭]

উত্তরঃ নিচে একটি ডিজিটাল ও একটি এনালগ সিগনাল অঙ্কন করা হলো- চিত্র

৫। টাইপ অর্ধপরিবাহীর আধান বাহক হোল-ব্যাখ্যা কর।[কু.বো.-১৭]

উত্তরঃ টাইপ অর্ধপরিবাহীতে বিভব প্রয়োগ করা হলে হোল তার পার্শ্ববর্তী পরমাণু থেকে একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ফলে পার্শ্ববর্তী পরমাণুতে হোল সৃষ্টি হয়।এভাবে হোল পরমাণু থেকে পরমাণুতে সঞ্চালিত হয়ে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে অর্থাৎ হোল তড়িৎ প্রবাহে আধান বাহকের কাজ করে। এজন্য টাইপ অর্ধপরিবাহীর আধান বাহক হোল।

 

 

 

 

 

 

 

৬। ট্রানজিস্টরে ডিসি বায়াসিং অবস্থায় বেস করেন্ট খুব কম হয় কেন? [কু.বো.-১৭]

উত্তরঃ ডিসি বায়াসিং এর ক্ষেত্রে অঞ্চল অঞ্চলের তুলনায় বেশি ধনাত্মক হয়। এর ফলে অঞ্চলের ইলেকট্রনগুলো সহজেই অঞ্চলে চলে আসতে পারে। অর্থাৎ অ্যামিটার থেকে ইলেকট্রনগুলো বেসে চলে আসে। ফলে অ্যামিটার নিঃসারক প্রবাহ সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনগুলো টাইপ বেসে প্রবেশ করার ফলে সেখানকার হোল এর সাথে মিলতে চায়, কিন্ত বেস খুব পাতলা হওয়ার কারণে সামান্য কিছু ইলেকট্রন হোল-এর সাথে মিলিত হয়ে ক্ষুদ্র বেস প্রবাহ সৃষ্টি হয়।

 

৭। -টাইপ অর্ধ-পরিবাহী তড়িৎ নিরপেক্ষ কি-না ব্যাখ্যা কর।[ব.বো.-১৭]

উত্তরঃ আমরা জানি, টাইপ অর্ধ-পরিবাহীতে অতিরিক্ত কিছু ইলেকট্রন থাকে। কিন্ত এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা পরমাণু। এই ইলেকট্রনগুলো মুক্তভাবে চলাচল করতে পারলেও দাতা পরমাণু ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মকভাবে আহিত থাকে। ফলে -টাইপ অর্ধ-পরিবাহীটি প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ নিরপেক্ষ থাকে।

৮। ট্রানজিস্টর কি ডায়োড? ব্যাখ্যা কর।[ব.বো.-১৭]

উত্তরঃ একটি টাইপ ও একটি টাইপ অর্ধ-পরিবাহীকে বিশেষ ব্যবস্থায় সংযুক্ত করলে সংযোগ পৃষ্ঠকে জাংশন ডায়োড বলে। যা রেকটিফায়ার ও সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অপরপক্ষে ট্রানজিস্টর হচ্ছে তিন প্রান্ত বিশিষ্ট একটি অর্ধপরিবাহী ডিভাইস যার অন্তর্মুখী প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে বহির্মূখী প্রবাহবিভব পার্থক্য ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে করা হয়। দুটি অর্ধপরিবাহী ডায়োডকে পাশাপাশি যুক্ত করে একটি অর্ধপরিবাহী ট্রায়োড বা ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়। তই ট্রানজিস্টরকে দুটি ডায়োডের সমন্বয় বলা হয়।

৯। -টাইপ অর্ধ পরিবাহী তড়িৎ নিরপেক্ষ কি-না ব্যাখ্যা কর।[ঢা.বো.-১৫, ব.বো.-১৭]

উত্তরঃ সাধারণভাবে আমরা জানি, টাইপ বস্তুতে অতিরিক্ত কিছু হোল আছে। কিন্ত এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা অপদ্রব্য। এই দাতা অপদ্রব্য নিজে তড়িৎ নিরপেক্ষ। যখন অপদ্রব্য মেশানো হয় তখন যাকে ‘অতিরিক্ত ইলেকট্রন’ বলা হয় প্রকৃতপক্ষে তা সেমিকন্ডাক্টর কেলাসে সমযোজী বন্ধন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক হোলের অতিরিক্ত। এই অতিরিক্ত হোল মুক্ত হোল এবং এরা সেমিকন্ডাক্টরের পরিবাহিতা বৃদ্ধি করে। তাই বলা যায়, -টাইপ সেমিকন্ডাক্টর তড়িৎ নিরপেক্ষ।

 

১০। ট্রানজিস্টর ট্রানজিস্টরের চেয়ে বেশি কাযকর-ব্যাখ্যা কর।[য.বো.-১৭]

উত্তরঃ ট্রানজিস্টর ট্রানজিস্টরের কার্যনীতি একই রকম হলেও এদের পার্থক্য হলো আধান বাহকে। ট্রানজিস্টরের আধান বাহক ইলেকট্রন অন্যদিকে ট্রানজিস্টরের আধান বাহক হোল। ইলেকট্রন, হোল অপেক্ষা অধিক দ্রুত পরিবাহক। ফলে ইচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি বা কম্পউটার বর্তনীতে ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়। এজন্য ট্রানজিস্টর ট্রানজিস্টরের চেয়ে বেশি কাযকর।

 

 

 

 

 

 

 

১১। তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায় কেন? [কু.বো.-১৬]

উত্তরঃ আমরা জানি, পরম শূন্য তাপমাত্রায় অর্ধ পরিবাহীর ইলেকট্রনগুলো পরমাণুতে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। এই তাপমাত্রায় সহযোজী অনুবন্ধনগুলো খুবই সবল হয় এবং সবগুলো যোজন ইলেকট্রনই সহযোগী অনুবন্ধন তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে কিছু সংখ্যক সহযোজী অনুবন্ধন ভেঙে যায় এবং কিছু ইলেকট্রন পরিবহন ব্যান্ডে প্রবেশ করার মতো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করে এবং মুক্ত ইলেকট্রনে পরিণত হয়। এসময় সামান্য বিভব পার্থক্য প্রয়োগে মুক্ত ইলেকট্রনগুলো তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করে অর্থাৎ এর পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায়।

১২। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ চার বিট কেন দরকার হয়? [চ.বো.-১৬]

উত্তরঃ হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির বেস 16 । হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতির সর্বোচ্চ ডিজিট , যার মান দশমিকে 15 এবং বাইনারিতে 1111 । অর্থাৎ সর্বোচ্চ 4টি বিটের প্রয়োজন।

১৩। কে সার্বজনীন গেইট বলা হয়? [রা.বো.-১৫]

উত্তরঃ গেইট এবং গেইটদ্বয়ের সমন্বয়ে গেইট এর উৎপত্তি। গেইটকে সার্বজনীন গেইট বলা হয়, কারণ শুধু গেইট ব্যবহার করে দুই বা ততোধিক ইনপুট এর মৌলিক অপরেশনগুলো করা সম্ভব।

১৪। ট্রানজিস্টরের বেস পীঠ বা ভূমি অংশ পাতলা হয় কেন? ব্যাখ্যা দাও।[য.বো.-১৫, ব.বো.-১৫]

উত্তরঃ একটি ট্রানজিস্টরের তিনটি অংশের মধ্যে মাঝের অংশটিকে বলা হয় ভূমি বা বেস। ট্রানজিস্টরের এ বেস অংশটি খুব পাতলা রাখা হয় অর্থাৎ পুরুত্ব খুব কম রাখা হয় এবং খুবই সামান্য পরিমাণে অপদ্রব্য মিশ্রণ করা হয়, যাতে এমিটার বা নিঃসারক থেকে বাহক আধান প্রবাহের সময় কম দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং বিপরীত আধানের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিরপেক্ষ না হয়।

১৫। অর্ধ-পরিবাহী ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত কি-না ব্যাখ্যা কর।[রা.বো.-১৯]

উত্তরঃ আমরা জানি, -টাইপ অর্ধ-পরিবাহীতে অতিরিক্ত কিছু ইলেকট্রন থাকে। কিন্ত এই অতিরিক্ত ইলেকট্রন সরবরাহ করে দাতা পরমাণু। এই ইলেকট্রনগুলো মুক্তভাবে চলাচল করতে পারলেও দাতা পরমাণু ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মকভাবে আহিত থাকে। ফলে -টাইপ অর্ধ-পরিবাহীটি প্রকৃতপক্ষে তড়িৎ নিরপেক্ষ থাকে। অর্ধ-পরিবাহীতে আধান ইলেকট্রন হলেও এটি ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত নয়।

 

 

 

 

 

 

 

১৬। অর্ধ-পরিবাহীকে তাপ দিলে পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করে-ব্যাখ্যা কর।[রা.বো.-১৬]

উত্তরঃ অর্ধ-পরিবাহীকে তাপ দিলে পরিবাহীর ন্যায় আচরণ করে। কারণ আমরা জানি, পরিবাহীতা রোধের ব্যস্তানুপাতিক। কাজেই, তাপমাত্রা বাড়লে অর্ধপরিবাহীর রোধ হ্রাস পাবে। এর কারণ হলো তাপমাত্রা বাড়ালে অতিরিক্ত শক্তি পাওয়ায় অণু পরমাণুগুলোর কম্পন বেড়ে যায়। ফলে এরা বন্ধন ভেঙ্গে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে যা পরিবাহীতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

 

১৭। এনালগ পদ্ধতি এবং ডিজিটাল পদ্ধতি এক না ভিন্ন? ব্যাখ্যা কর।[চ.বো.-১৯]

উত্তরঃ এনালগ পদ্ধতি এবং ডিজিটাল পদ্ধতি ভিন্ন। এনালগ পদ্ধতিঃ যে বর্তনী বা সিস্টেমের মান সময়ের সাথে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তন হয় তাকে এনালগ সিস্টেম বলে। ডিজিটাল পদ্ধতিঃ যে বর্তনী বা সিস্টেমের মান নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তিত না হয়ে দুটি নির্দিষ্ট মান গ্রহণ করে চলে তাকে ডিজিটাল পদ্ধতি বলে।

১৮। বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে অপদ্রব্য মিশ্রিত করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।[ব.বো.-১৯]

উত্তরঃ বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে যথোপযুক্ত কোনো অপদ্রব্য খুব সামান্য পরিমাণ(প্রায় দশ কোটি ভাগের এক ভাগ) সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে মেশানো হলে অর্ধপরিবাহীর রোধ অনেকগুণ কমে যায়। এ ধরনের মিশ্রণ প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীকে দূষিত অর্ধপরিবাহীতে পরিণত করাকে ডোপিং বলে। ডোপিং মৌলের প্রকৃতি থেকে নির্ধারিত হয় অর্ধপরিবাহীটি টাইপ না টাইপ হবে। ডোপায়নের জন্য ত্রিযোজী মৌল হিসেবে পযায় সারণির তৃতীয় সারির মৌল বোরন, অ্যালুমিনিয়াম, গ্যালিয়াম ইত্যাদি এবং পঞ্চযোজী মৌল হিসেবে পযায় সরণির পঞ্চম সারির মৌল ফসফরাস, আর্সেনিক, এন্টিমনি, বিসমাথ ইত্যাদি অপদ্রব্য ব্যবহৃত হয়।

১৯। -এ বিভব প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়-ব্যাখ্যা কর।[দি.বো.-১৯, ১৫]

উত্তরঃ বিমুখী ঝোঁকে কোষের ধনাত্মক প্রান্ত -টাইপ এবং ঋণাত্মক প্রান্ত -টাইপ বস্তুর সাথে সংযুক্ত থাকে। এক্ষ্রেত্র -টাইপ বস্তুর মুক্ত ইলেকট্রন ধনাত্মক প্রান্তের আকর্ষণের ফলে -টাইপ বস্তুতেই থেকে যায় এবং জাংশন পার হয়ে কিছুতেই -টাইপ বস্তুতে যেতে পারে না। একই কারণে -টাইপ বস্তুর হোলও -টাইপ বস্তু অংশেই থেকে যায়। ফলে ডিপ্লেশন লেয়ারের প্রশস্থতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ বিভব প্রাচীরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।

২০। ডায়োড কেন একমুখীকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ডায়োড একমুখীকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয় কারণ, এ.সি সিগনালের প্রথম ধনাত্মক অর্ধচক্রে ডায়োডটি সম্মুখী ঝোঁক লাভ করে। ফলে এটি শর্ট সার্কিট হিসেবে কাজ করে এবং তড়িৎ সহজেই এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে ঋণাত্মক অর্ধচক্রের ক্ষেত্রে বিমুখী ঝোঁক লাভ করে। ফলে এটি খোলা বর্তনী হিসেবে কাজ করে এবং তড়িৎ এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পারে না। অন্যভাবে বলা যায়, ধনাত্মক অর্ধচক্রের সময় জাংশনের ডিপ্লেশন স্তরে প্রশস্থতা কমে যায় এবং তড়িৎ সহজেই এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঋণাত্মক অর্ধচক্রের সময় ডিপ্লেশনের প্রশস্থতা বৃদ্ধি পায় ফলে তড়িৎ এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না। তাই বলা যায় ডায়োড একমুখীকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

 

 

 

 

 

 

২১। অন্তর্গামীতে সম্মুখ বায়াস দিলে বিভব প্রাচীরের কী পরিবর্তন হয়?

উত্তরঃ কোন জাংশনের অন্তর্গামীতে সম্মুখ বায়াস দিলে বিভব প্রাচীর অর্থাৎ ডিপ্লেশন স্তরের প্রশস্ততা কমে যায়। কারণ এক্ষেত্রে ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্ত -টাইপ প্রান্তে এবং ঋণাত্মক প্রান্ত -টাইপ প্রান্তে যুক্ত থাকে। ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্ত -অঞ্চলের হোলগুলোকে বিকর্ষণ করে এবং ঋণাত্মক প্রান্ত -অঞ্চলের ইলেকট্রনগুলোকে বিকর্ষণ করে। সুতরাং জাংশনের ডিপ্লেশন স্তর ভিতরের দিকে চলে যায় অর্থাঃ প্রশস্থতা হ্রাস পায়।

২২। ডোপিং করলে অর্ধ পরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায়? [য.বো.-১৯]

উত্তরঃ সাধারণ তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে আধান বাহকের সংখ্যা খুবই কম থাকে বলে এর তড়িৎ পরিবাহীতা কম থাকে। ডোপিং করলে অর্ধপরিবাহীতে হোলের সংখ্যা বা মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এজন্য ডোপিং করলে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহীতা বৃদ্ধি পায়।

২৩। কে ‘গ্রহীতা’ অপদ্রব্য বলা হয় কেন?

উত্তরঃ জার্মেনিয়াম ও অ্যালুমিনিয়ামের যোজনী যথাক্রমে চার ও তিন। অতএব এর সাথে ডোপিং করলে পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষের তিনটি ইলেকট্রন পরমাণুর চারটি ইলেকট্রনের তিনটির সাথে যুক্ত হয়ে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে। কিন্ত এর একটি ইলেকট্রন ঘাটতি থাকায় এর চতুর্থ ইলেকট্রন সমযোজী বন্ধন তৈরি করে না। ইলেকট্রনের ঘাটতির জন্য পরমাণুতে একটি হোলের সৃষ্টি হবে। সুতরাং কেলাস ল্যাটিসের মধ্যে প্রত্যেক পরমাণুতে একটি করে হোলের সৃষ্টি হবে যা ইলেকট্রন গ্রহনে উদগ্রীব থাকবে। এজন্য কে ‘গ্রহীতা’ অপদ্রব্য বলা হয়।

 

 

 

 

 

 

 

২৪। কে দাতা অপদ্রব্য বলা হয় কেন?

উত্তরঃ জার্মেনিয়াম ও আর্সেনিকের যোজনী যথাক্রমে চার ও পাঁচ। অতএব এর সাথে ডোপিং করলে পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষের পাঁচটি ইলেকট্রনের মধ্যে চারটি ইলেকট্রন এর চারটি ইলেকট্রনের সাথে যুক্ত হয়ে সমযোজী বন্ধন তৈরি করে। প্রতিটি পরমাণুর উদ্বৃত্ত একটি ইলেকট্রন মুক্ত থেকে যায় এবং এ ইলেকট্রনটি কেলাসের মধ্যে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। এভাবে প্রতিটি পরমাণু একটি করে মুক্ত ইলেকট্রন দান করে বলে একে ‘দাতা’ অপদ্রব্য বলে।

২৫। -টাইপ ও -টাইপ অর্ধপরিবাহীর মধ্যে পার্থক্য লেখ।

উত্তরঃ -টাইপ ও -টাইপ অর্ধপরিবাহীর পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো- ১. বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে পঞ্চযোজী অপদ্রব্য মিশিয়ে -টাইপ অর্ধপরিবাহী গঠন করা হয়; অপরদিকে, বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে ত্রিযোজী অপদ্রব্য মিশিয়ে -টাইপ অর্ধপরিবাহী গঠন করা হয়। ২. -টাইপ অর্ধপরিবাহীতে গরিষ্ঠ বাহক ধনাত্মক চার্জযুক্ত হোল; অপরদিকে, -টাইপ অর্ধপরিবাহীতে গরিষ্ঠ বাহক ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন। ৩. -টাইপ অর্ধপরিবাহীতে লঘিষ্ঠ বাহক ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রন; অপরদিকে, -টাইপ অর্ধপরিবাহীতে লঘিষ্ঠ বাহক ধনাত্মক চার্জযুক্ত হোল।

২৬। গতীয় রোধ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ জাংশনে সম্মুখবর্তী ঝোঁক প্রয়োগে সামান্য বিভব পার্থক্য বৃদ্ধি করলে জাংশ্রন বিদ্যুৎ প্রবাহ মাত্রা অনেক বৃদ্ধি পায়। কিন্ত ‍বিপরীত ঝোঁক প্রয়োগে বিভব পার্থক্য অনেক বৃদ্ধির জন্যও বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ প্রবাহমাত্রার বৃদ্ধি খুবই সামান্য। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, সম্মুখবর্তী ঝোঁক প্রয়োগে জাংশনের রোধ খুবই কম হয়। লেখ বৈশিষ্ট্যের যেকোনো দুটি বিন্দুর বিভব পার্থক্য এর জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহের যে পরিবর্তন হয় এর অনুপাতই জাংশনের রোধ। একে জাংশনের গতীয় রোধ বলে। গতীয় রোধ, .

২৭। বিমুখী ঝোঁকে খুব কম মানের তড়িৎ প্রবাহিত হয় কেন?

উত্তরঃ বিমুখী ঝোঁকে ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্ত -টাইপ প্রান্তের সাথে এবং ধনাত্মক প্রান্ত -টাইপ প্রান্তের সাথে সংযোগ দেওয়া হয় বলে ব্যাটারির ঋণাত্মক প্রান্ত -অঞ্চলের হোলগুলোকে এবং ঋণাত্মক প্রান্ত -অঞ্চলের ইলেকট্রনগুলোকে আকর্ষণ করে সংযোগ থেকে দুরে সরিয়ে দেয়। ফলে -অঞ্চলের ইলেকট্রন এবং -অঞ্চলের হোলগুলো বিভব প্রাচীর অতিক্রম করে বিপরীত অঞ্চলে যেতে পারে না। ফলে কোনো তড়িৎ প্রবাহিত হয় না। এজন্য -টাইপ ও -টাইপে থাকা স্বল্প পরিমাণ ইলেকট্রন ও হোলের কারণে খুব কম মানের তড়িৎ প্রবাহিত হয়।

২৮। অক্টাল নম্বরকে হেক্সাডেসিমেল নম্বরে রুপান্তরের পদ্ধতি বর্ণনা কর।

উত্তরঃ অক্টালে নম্বরকে হেক্সাডেসিমেল নম্বরে রুপান্তরের ক্ষেত্রে প্রথমে নম্বরটিকে 3টি করে বাইনারিতে রুপান্তর করতে হবে। তারপর পূর্ণ নম্বরের ক্ষেত্রে ডান দিক থেকে বাম দিকে এবং ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে বাম দিক থেকে ডান দিকে প্রতি 4টি বিট একত্রে নিয়ে একটি গ্রুপ করতে হবে। প্রতিটি গ্রুপের বাইনারি সমকক্ষ হেক্সাডেসিমেল মান লিখতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাম দিকের বা ডান দিকের সর্বশেষ গ্রুপে 4টি বিট নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক 0 বসাতে হবে।

 

 

 

 

 

 

 

২৯। ডায়োড ও দ্বিমেরু ট্রানজিস্টরের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তরঃ ডায়োড ও দ্বিমেরু ট্রানজিস্টরের পার্থক্য নিম্নরুপঃ ১. ডায়োড হলো একটি সক্রিয় কৌশল; অপরদিকে, দ্বিমেরু ট্রানজিস্টর ও হতে পারে। ২. ডায়োডের প্রতীক হলো ****; অপরদিকে, দ্বিমেরু ট্রানজিস্টরের প্রতীক হলো **** । ৩. ডায়োড একমুখীকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়; অপরদিকে, ট্রানজিস্টর সাধারণত বিবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

৩০। ঝোঁক ব্যতীত জাংশনে দুই প্রান্তের বিভব মাপা সম্ভব কি? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ঝোঁক ব্যতীত জাংশনে দুই প্রান্তের বিভব মাপা সম্ভব। জাংশনের -টাইপ অঞ্চলের ইলেকট্রন সংখ্যা -টাইপ অঞ্চলের চেয়ে বেশি থাকায় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় -টাইপ অঞ্চল থেকে ইলেকট্রনসমূহ অঞ্চলে চলে আসে। আবার -অঞ্চলে হোলের সংখ্যা বেশি হলে একই পদ্ধতিতে হোলসমূহ -অঞ্চল হতে -অঞ্চলে চলে যায়। ইলেকট্রন ও হোলের আদান-প্রদানের ফলে সংযোগস্থলে ডিপ্লেশন এলাকার সৃষ্টি হয়। জাংশনের এক পাশে থাকে ধনাত্মক চার্জযুক্ত আয়ন, অন্য পাশে থাকে ঋণাত্মক চার্জযুক্ত আয়ন। এসব আয়নের ফলে সংযোগস্থলে একটি বিভব প্রাচীর গড়ে ওঠে। জাংশনকে একটি ভোল্টমিটারে সংযুক্ত করে এ বিভব পার্থক্য মাপা যাবে।

৩১। ট্রানজিস্টরকে অ্যাম্প্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন?

উত্তরঃ আমরা জানি, ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহের সামান্য পরিবর্তন সংগ্রাহক প্রবাহের বিরাট পরিবর্তন ঘটায়। ট্রানজিস্টর পীঠ প্রবাহকে 50 থেকে 100 গুণ বাড়িয়ে দিয়ে সংগ্রাহক প্রবাহ হিসেবে প্রদান করতে পারে। তাই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বর্তনীতে সংকেতকে বিবর্ধিত করার জন্য ট্রানজিস্টরকে অ্যাম্প্লিফায়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

৩২। জাংশন কীভাবে রেকটিফায়ার হিসেবে কাজ করে ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ জাংশনের সম্মুখী ঝোঁক অবস্থায় -অঞ্চল হতে ইলেকট্রন -অঞ্চলে এবং -অঞ্চল থেকে হোল -অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। ফলে হতে এর দিকে তড়িৎ প্রবাহ চলবে। আবার বিমুখী ঝোঁক অবস্থায় ইলেকট্রন জাংশন পার হয়ে -অঞ্চলে যেতে পারবে না। আর -অঞ্চলের হোলও -অঞ্চলে যেতে পারবে না। এতে জাংশন দিয়ে কোনো তড়িৎ প্রবাহ চলবে না। অর্থাৎ ভোল্টেজ প্রয়োগে জাংশন শুধু এক অভিমুখে প্রবাহের অনুমতি দেয়। এভাবে জাংশন রেকটিফায়ার হিসেবে কাজ করে।

৩৩। নিম্ন তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহী অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে-ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ নিম্ন তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহীতে ইলেকট্রনগুলো পরমাণুতে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে। এ তাপমাত্রায় সমযোজী অণুবন্ধনগুলো খুবই সবল হয় এবং সবগুলো যোজন ইলেকট্রনই সমযোজী অনুবন্ধন তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। ফলে কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না এবং অর্ধ-পরিবাহীতে কেলাস এ অবস্থায় যোজন ব্যান্ড পূর্ণ থাকে এবং যোজন ব্যান্ড ও পরিবহন ব্যান্ডের মাঝে শক্তির ব্যবধান বিরাট হয়। ফলে কোনো যোজন ইলেকট্রন পরিবহন ব্যান্ডে এসে মুক্ত ইলেকট্রনে পরিণত হতে পারে না। ফলে মুক্ত ইলেকট্রন না থাকার কারণে নিম্ন তাপমাত্রায় অর্ধপরিবাহী পদার্থ অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে।