কুরবানী কার উপর ফরজ | কুরবানীর পশু কেমন হতে হবে?

 

 

 

 

 

 

 

 

কুরবানী কার উপর ফরজ | কুরবানীর পশু কেমন হতে হবে?

 

কুরবানী কার উপর ফরজ এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল মুসল্লিদের মধ্যে একটি বিভ্রান্তি কাজ করেন। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য কুরবানী কার উপর ফরজ এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য এসেছি, যাতে করে আপনারা কুরবানি দেয়ার পূর্বে কোরবান এর সকল খুঁটিনাটি বিষয়বস্তু গুলো জেনে নিতে পারেন। তবে একজন মুসলমান হিসেবে কুরবানী দেয়ার পূর্বে অবশ্যই কোরবানির সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক।

 

 

 

 

 

 

 

Homeশিক্ষা

কুরবানী কার উপর ফরজ

শিক্ষা

কুরবানী কার উপর ফরজ

By Asikur Rahman Naim Last updated May 5, 2023

0

Share

Rate this post

কুরবানী কার উপর ফরজ | কুরবানীর পশু কেমন হতে হবে?

 

কুরবানী কার উপর ফরজ এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল মুসল্লিদের মধ্যে একটি বিভ্রান্তি কাজ করেন। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য কুরবানী কার উপর ফরজ এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য এসেছি, যাতে করে আপনারা কুরবানি দেয়ার পূর্বে কোরবান এর সকল খুঁটিনাটি বিষয়বস্তু গুলো জেনে নিতে পারেন। তবে একজন মুসলমান হিসেবে কুরবানী দেয়ার পূর্বে অবশ্যই কোরবানির সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক।

 

RELATED POSTS

মাশাআল্লাহ অর্থ কি?

 

Jun 10, 2023

How About You এর বাংলা অর্থ কি?

 

Jun 10, 2023

পূর্ণ সংখ্যা কাকে বলে? | পূর্ণ সংখ্যা বের করার নিয়ম

 

May 19, 2023

ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং কাকে বলে?

 

May 18, 2023

যখন কোন মুসলমান ব্যক্তির মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদাত পালন করেন তখন অবশ্যই সেই ইবাদতের নিয়ম এবং ইবাদাতের করার ফলে মহান আল্লাহতালা তার বান্দার প্রতি কিভাবে সন্তুষ্ট হবেন তার সকল বিষয়গুলো জেনে নিতে হয়। নতুবা শুধু শুধু কষ্ট করে ইবাদাত করা হবে কিন্তু তার কোন পুরস্কার পাওয়া যাবে না। ফলে সেই ইবাদাত আর ইবাদাত থাকবে না হয়ে যাবে কাজ। আমরা সকলেই জানি যে কোরবানি দেয়া হচ্ছে এবাদতের অংশ তাই অবশ্যই এই এবাদত করার পূর্বে আমাদের কুরবানী সম্পর্কে জেনে নিতে হবে এবং কুরবানী কার উপর ফরজ অবশ্যই জেনে নিতে হবে। তাহলে চলুন আমরা এবার জেনে নেই কুরবানী কার উপর ফরজ সম্পর্কে।

 

 

 

 

 

 

আত্মত্যাগ মহান আল্লাহতালা খুশি হয়ে যান এবং আল্লাহর কুদরত শিশুপুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়ে যায়।

 

মহান আল্লাহতালার নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তার প্রানপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর ধৈর্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এই অনন্য ত্যাগের মহিমা স্মরণ করে রাখার জন্য পবিত্র ঈদুল আযহার দিন পশু কোরবানির মাধ্যমে তা পালন করা হয়।

 

যে মুসলমান ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে সে মুসলমান ব্যক্তির ওপর পশু কোরবানি দেয়া ওয়াজিব। আরে ইবাদত পালন করার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করাই হচ্ছে সেই মুসলমান ব্যক্তির মূল উদ্দেশ্য। কুরবানী কার উপর ফরজ? এ বিষয়টি সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন-

 

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অর্থাৎ যে ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ রয়েছে সে যেন কোরবানি করে। এবং তিনি সামর্থের ব্যাপারটি বিস্তারিতভাবে জানাননি। এবং তিনি আরো বলেছেন কোরবানি করা ফরয না কিন্তু কোরবানি দেয়া ওয়াজিব জানিয়েছেন”।

 

সুতরাং কুরবানী কার উপর ফরজ এবিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে না জড়িয়ে আপনাদের উচিত হাদিস এবং ইসলামিক স্কলারদের মতামত অনুসারে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে অবশ্যই মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দেয়া।

 

 

 

 

 

 

কোরবানি সুন্নাত না ওয়াজিব

ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গিয়েছেন যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ঈদুল আযহার পশু কোরবানি দিতে হয়। কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোরবানি দেয়া হচ্ছে ওয়াজিব কিন্তু কোরবানি দেয়া ফরজ না সুন্নত নয়।

কোরবানি দেয়া হয় সম্পূর্ণ মহান আল্লাহতালার নির্দেশে এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তাই একজন মুসলমান ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আমাদের ভাবা উচিত মহান আল্লাহতালার নির্দেশের কথা এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা। এবং সেইসাথে কোরবানি দেয়া ওয়াজিব নাকি সুন্নত নাকি ফরজ এই বিষয়ে বিভ্রান্তিতে না ভুগে শুধুমাত্র মহান আল্লাহতালার নির্দেশ অনুসারে পশু কোরবানি দেয়া উচিত। যেহেতু হাদীস শরীফে সুস্পষ্টভাবে কোথাও জানিয়ে দেয়া হয়নি যে কুরবানী দেয়া ফরজ কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কোরবানি দেয়া ওয়াজিব।

সুতরাং কোরবানি ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে।

কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে?

কোরবানি যেহেতু আতিক এবং আর্থিক ইবাদতের অংশ সেহেতু কুরবানি দেয়ার জন্য কত টাকা প্রয়োজন অথবা কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে এ সম্পর্কিত প্রশ্ন আপনাদের মনে আসতেই পারে এটাই স্বাভাবিক। অর্থপূর্ণ এই সাধারন প্রশ্নটি অবশ্যই উচিত। যদি সাধারণভাবে বলি তাহলে এখনি স্টুডিওতে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ বা নির্ধারিত পরিমাণ অর্থের মালিকের কোরবানি দেয়া আবশ্যক। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন আছে যে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ বা অর্থ বলতে কি বুঝিয়েছেন?

আমরা সকলেই জানি যে মুসল্লিদের অন্যতম একটি ইবাদতের অংশ হচ্ছে যাকাত প্রদান করা। যাকাত প্রদান করার জন্য অবশ্যই নিসাব পরিমাণ সম্পদের বা অর্থের মালিক হতে হয় ঠিক তেমনি কুরবানী দেয়ার পূর্বে অবশ্যই নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের বা অর্থের মালিক হতে হবে।

তবে আমরা আপনাদেরকে কুরবানী দেয়ার নির্ধারিত পর যে পরিমাণ অর্থ বা সম্পদের মালিক হতে হয় এসম্পর্কিত যে তথ্যটি দিব অবশ্যই সে তথ্যগুলো কোরআন হাদিস এবং ইসলামিক স্কলারদের থেকে পাওয়া।

কোন মুসলমান ব্যক্তির পরিবারের সমস্ত খরচ মেটানোর পর যদি জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখ এ নির্ধারিত পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপা থাকে এবং সেই স্বর্ণ এবং রুপার বর্তমান বাজারদর অনুসারে ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি দেয়া আবশ্যক হয়ে যাবে। অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখ কোরবানির পশু জবেহ করা হয় আর এই সময় যদি কোন মুসল্লির নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তির উপর কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায়।

নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝায়- যদি কারো সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ অথব ৫২ তোলা রুপা অথবা তার অমূল্য সম্পদ থাকে তাহলে অন্যদের ওপর এক বছরের মালিকানা হওয়ার পর ওই ব্যক্তির উপর কুরবানী হবে।

কিন্তু এই সম্পদের কি পরিমাণ অর্থ কোরবানির জন্য ব্যয় করা হবে তার একটি হিসাব আপনাদেরকে বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে-

যদি কোন ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি/ তোলা স্বর্ণের থাকে অথবা ৫০ তোলা রুপা থাকে  তাহলে এর বর্তমান বাজার মূল্য অনুসারে  যদি সেই স্বর্ণ অথবা রুপার মূল্য ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কোরবানি আবশ্যক হবে।

 

 

 

 

 

 

 

২০২২  সাল অনুসারে প্রত্যেক ক্যারেটের স্বর্ণের মূল্য নিম্নের একটি টেবিল এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো-

২২ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৭২ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।
২১ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৬৯ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৫ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা।
১৮ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৬০ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
সনাতন পদ্ধতি অনুসারে স্বর্ণের প্রতি ভরি ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা।

২০২২  সাল অনুসারে প্রত্যেক ক্যারেটের রুপার মূল্য নিম্নের একটি টেবিল এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো-

২২ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ৫১৬ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৭৯ হাজার ৫৯০ টাকা।
২১ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ৪৩৫টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৭৫ হাজার ৩৩৭ টাকা।
১৮ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ২২৫ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৬৪ হাজার ৩১২ টাকা।
সনাতন পদ্ধতি অনুসারে রুপার প্রতি ভরি ৯৩৩ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৪৮ হাজার ৯৮২ টাকা।

বিঃ দ্রঃ অবশ্যই আপনার নিসাব পরিমাণ সম্পদের বর্তমান বাজারমূল্য যাচাই করে নিয়ে সেই অনুসারে কোরবানি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং যদি কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই কোরবানি দিতে হবে।