সমাজ কাকে বলে বা সমাজ কি? সমাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সমাজ বলতে একদল লোককে বোঝায় যারা একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে বসবাস করেন এবং তারা একই সংস্কৃতি মেনে চলেন।

এক কথায় “পরস্পর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীকে সমাজ বলে”। বিস্তৃত আকারে, সমাজ হলো আমাদের চারপাশের মানুষ এবং প্রতিষ্ঠান, আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক ধারনা নিয়ে গঠিত হয়।

সমাজ এমন একটি গ্রুপের লোকদের বর্ণনা করে যাঁরা একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলে থাকেন এবং যারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে এবং একই সংস্কৃতি ভাগ করে নেন। সমাজ এমন লোকদের সমন্বয়ে গঠিত হয় যারা পারস্পরিক সুবিধার মাধ্যমে একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মনীষীদের মতে সমাজ:

“সমাজ বলতে আমরা সেই জনসাধারণকে বুঝি যারা সংঘবদ্ধভাবে কোনাে সাধারণ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মিলিত হয়েছে”  —সমাজবিজ্ঞানী গিডিংস

“সমাজ মানুষের বহুবিধ সম্পর্কের এক বিচিত্র রূপ” — ম্যাকাইভার

”সমাজের নানা বিষয় নিয়ে প্রথমে বিজ্ঞানভিত্তিক অধ্যয়ন করেন ইবনে খালদুন”

“সমাজ হলাে সামাজিক সম্পর্কের নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিবর্গের সাধারণ পরিচিত” —সমাজবিজ্ঞানী কিম্বল ইয়ং

সমাজের ব্যাপ্তি ছোট পর্যায়েও হতে পারে আবার বড়ও হতে পারে, এর কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। এমনকি সমাজ বিশ্বব্যাপীও হতে পারে। যেমন: রেডক্রস সমাজ (প্রতি বছর ৮ মে বিশ্ব রেড ক্রস দিবস পালন করা হয়)।

একটি সমাজের উপাদান কি কি হতে পারে:

সমাজের প্রথম ও প্রধান উপাদান হলো মানুষ। সমাজের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পরিবার। আর অনেকগুলি পরিবার নিয়েই সমাজ তৈরি হয়। সমাজের মানুষের বসবাসের সুবিধার জন্য গড়ে উঠে স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

সমাজ কেন গুরুত্বপূর্ণ:

আমরা জানি, সমাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদেরকে বিশ্বের উন্নতির জন্য একত্রে কাজ করার একটি ব্যবস্থা এবং একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে। সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের জীবনযাত্রা ও সামাজিক অবস্থার উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা সম্মিলিত সামাজিক প্রচেষ্টার কারণে এগিয়ে চলেছি। তাছাড়া, সমাজে সামাজিক বিশ্বাস, নিয়ম এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ম রয়েছে যা মানুষকে কীভাবে আচরণ করা উচিত ও অনুচিত তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

সমাজ কিছু সুনির্ধারিত নিয়ম কানুন এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে, যার ফলে সেখানে মানুষ সহজেই বসবাস করতে পারে, একে অপরের বিপদে-আপদে এগিয়ে যায়। তাই বলা যায় সমাজ হলো সুগঠিত ও নিয়মভিত্তিক। একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগোষ্ঠী বড় হয়ে কি করবে বা না করবে, তাদের আচার-আচরণ কেমন হবে? এসব কিছু নির্ধারণ করে তারা কোন সমাজে বড় হচ্ছে। তাই প্রত্যেকের উচিত তাদের বসবাসরত সমাজকে একটি আদর্শ সমাজ হিসেবে গড়ে তোলা।