ভাজক টিস্যু কাকে বলে? ভাজক টিস্যুর প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য এবং কাজ

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

যে সব টিস্যুর কোষ বিভাজন ক্ষমতা রয়েছে সেগুলােকে ভাজক টিস্যু বলে। উদ্ভিদের বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে (যেমন – কান্ড ও মূলের শীর্ষে, কচি পাতায়), পুষ্প, কান্ডমুকুল, পর্বমধ্য ও কান্ডের পরিধিতেও ভাজক টিস্যু থাকে। ভাজক কোষ দিয়ে ভাজক টিস্যু গঠিত হয়৷ এই টিস্যুর কোষগুলো বার বার বিভক্ত হয়, ফলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ঘটে। ভাজক টিস্যু হতেই অন্যান্য স্থায়ী টিস্যু সৃষ্টি হয়৷

ভাজক টিস্যুর প্রকারভেদ
ভাজক টিস্যু অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ টিস্যু। উৎপত্তি, অবস্থান, কাজ ও বিভাজন তল ভিত্তিক এ টিস্যুকে নিচের মতো করে ভাগ করা যায়।

  • উৎপত্তি অনুসারে ৩ প্রকার
    • প্রারম্ভিক
    • প্রাইমারি
    • সেকেন্ডারি
  • অবস্থান অনুসারে ৩ প্রকার
    • শীর্ষস্থ
    • স্থায়ী টিস্যু মধ্যস্থ
    • পার্শ্বীয়
  • বিভাজন অনুসারে ৩ প্রকার
    • মাস
    • প্লেট
    • রিব
  • কাজ অনুসারে ৩ প্রকার
    • প্রোটোডার্ম
    • প্রোক্যাম্বিয়াম
    • গ্রাউন্ড মোরিস্টেম
ভাজক টিস্যুর বৈশিষ্ট্য 

  • ভাজক টিস্যুর কোষগুলো আকৃতিতে সমান ব্যাসবিশিষ্ট ও আয়তনে খুবই ছোট;
  • অপরিণত কোষে গঠিত ভাজক টিস্যু সর্বদাই বিভাজনক্ষম ও মাইটোসিস পদ্ধতিতে বরাবর বিভাজিত হয়;
  • কোষগুলো সাধারণত আয়তাকার, ডিম্বাকার, পঞ্চভুজ বা ষড়ভুজাকার হয়;
  • পেকটিন ও সেলুলোজ নির্মিত এবং পাতলা;
  • এই কোষে সাধারণত সেকেন্ডারি কোষ প্রাচীর থাকে না;
  • কোষে ঘন দানাদার সাইটোপ্লাজম ও বড় আকারের নিউক্লিয়াস থাকে;
  • কোষে সাধারণত কোনো কোষ গহ্বর থাকে না থাকলেও আকারে ক্ষুদ্র ও সংখ্যায় অগণিত যাদের প্রো ভ্যাকুওল বলে;
  • কোষগুলো আকারে ছোট এবং দৈর্ঘ্য প্রস্থের প্রায় সমান;
  • কোষে বিদ্যমান প্লাস্টিড আদি প্রকৃতির ( প্রো-প্লাস্টিড);
  • এ টিস্যু বিপাক হার বেশি বলে কোষে কোনো প্রকার বর্জ্য পদার্থ, সঞ্চিত খাদ্য ও ক্ষরিত পদার্থ থাকে না;
  • এই টিস্যু সাধারণত মূল ও কান্ডের অগ্রভাগে অবস্থান করে;
  • ভাজক কলার কোষগুলোর মাঝে সাধারণত কোনো আন্তঃকোষীয় ফাঁক থাকে না৷

ভাজক টিস্যুর কাজ
শীর্ষস্থ ভাজক টিস্যুর বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদ দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়। এতে ছােট গাছ ক্রমে উঁচু ও লম্বা হয়। পার্শ্বীয় ভাজক টিস্যুর বিভাজনের ফলে উদ্ভিদের ব্যাস বৃদ্ধি পায়। এতে সরু কাণ্ড ক্ৰমে মােটা হয়। ভাজক টিস্যু থেকে স্থায়ী টিস্যুর সৃষ্টি হয়।