‘পদ’ কথাটির অর্থ ‘পা’। প্রাণীরা যেমন পায়ের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকে, তেমনি বাক্য পদের ওপর নির্ভর করে। আমরা মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য মুখ দিয়ে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারণ করি। যদি এ ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট অর্থ থাকে তবে এগুলোকে শব্দ বলা হয়। বাক্যের মধ্যে যতগুলো শব্দ থাকে তাদের সবগুলোই পদ।
পদের সংঙ্গাঃ বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দ বা ধাতুকে পদ বলে। আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, এক বা একাধিক বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি মিলে গঠিত শব্দ যদি পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে তবে তাকে পদ বলে। যেমন— হিমু পড়ছে। এ বাক্যে ‘হিমু’ নামপদ এবং ‘পড়ছে’ ক্রিয়াপদ।
পদের শ্রেণিবিভাগ
পদ প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত; যেমন– (ক) অব্যয় ও (খ) সব্যয়।
সব্যয় পদটি আবার দু’ভাগে বিভক্ত। যেমন– নামপদ ও ক্রিয়াপদ। নামপদ আবার তিন প্রকার। যেমন– (১) বিশেষ্য, (২) বিশেষণ ও (৩) সর্বনাম।
তবে সব মিলে পদ পাঁচ প্রকার। যথা– (১) বিশেষ্য, (২) বিশেষণ, (৩) সর্বনাম (৪) অব্যয় ও (৫) ক্রিয়া।
বিশেষ্য : বাক্যমধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোন ব্যাক্তি, বস্তু,স্থান, জাতি,কাল,ভাব ইত্যাদি নাম বোঝানো হয়, তাদের বিশেষ্য পদ বলে। ইফাদ, ঢাকা, নদী,গীতাঞ্জলি, চাল ইত্যাদি।
বিশেষণ : যে পদ দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ,অবস্থা, সংখ্যা,পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমন– নীল আকাশ।, দক্ষ কারিগর।,বেলে মাটি।
সর্বনাম : বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন – আমি, আমরা, ঐ,কেহ,অন্য,পর ইত্যাদি।
অব্যয় : ন ব্যয় = অব্যয়। যার ব্যয় বা পরিবর্তন হয় না, অর্থাৎ, যা অপরিবর্তনীয় শব্দ তাই অব্যয়।
যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভাবর্ধন করে,কখনো একাধিক পদের, বাক্যাংশের বা বাক্যের সংযোগ বা বিয়োগ সম্বদ্ধ ঘটায়, তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমন – আর, আবার, ও, এবং,কিন্তু ইত্যাদি।
ক্রিয়া : যার দ্বারা কোন কার্য সম্পাদন করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বলে। যেমন – খাই, যাই,খান ইত্যাদি।