
সবাইকে মহা দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী। প্রিয় ‘দাদা’র চিকিৎসার জন্য দেশ-বিদেশের ডাক্তাররা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কলকাতায় ডেকে আনা হয় ভুবনবিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠীকে। মঙ্গলবার বিমানে করে কলকাতায় এসে সৌরভকে পরীক্ষা করে তিনি ইতিবাচক কথাই বলেছেন। দেবী শেঠীর মতে, সৌরভ এখন পুরোপুরি ফিট। চাইলে ক্রিকেট খেলতে পারবে, ম্যারাথনে দৌড়তেও পারবে।





সৌরভের হৃদপিণ্ডের বাকি দুটি ধমনীতে এখনই কোনো স্টেন্ট বসানো হবে না। বুধবারই(৫ ডিসেম্বর) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন সৌরভ। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে উডল্যান্ডস হাসপাতালের পক্ষ থেকে। এদিনই হাসপাতালে আসেন দেবী শেঠি। দীর্ঘক্ষণ তিনি সৌরভের সঙ্গে কথা বলেন। সৌরভের কাছ থেকে খুঁটিনাটি পুরো বিষয় আরও একবার মন দিয়ে শোনেন তিনি। দেখেন সব রিপোর্ট।





পাশাপাশি ‘দাদা’র চিকিৎসার জন্য গঠন করা মেডিকেল বোর্ডের নয়জন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেন দেবী শেঠী। সেই আলোচনাতেই সৌরভের বাকি দুই ব্লকড ধমনী নিয়ে মত বিনিময় হয় চিকিৎসকদের মধ্যে। তারপরই ঠিক হয়, ওই দুই ধমনীতে এখনই স্টেন্ট কিংবা বাইপাস সার্জারি করা হবে না। প্রয়োজন নেই ‘দাদা’কে হাসপাতালে রাখার। ফলে সৌরভকে বুধবারই হাসপাতাল থেকে করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।





সাংবাদিকদের দেবী শেঠী বলেন, ‘হার্ট অ্যাটাক হলেও সৌরভের হৃদযন্ত্রে কোনো সমস্যা নেই। শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। সৌরভ ধূমপান করেন না। অন্য কোনো বদভ্যাসও নেই। নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। সৌরভ সবই করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন কোনো শারীরিক পরীক্ষা করাননি। যে পরীক্ষা এই দেশের রাস্তার পাশের যে কোনো ল্যাবরেটরিতেও করানো যায়। ফলে আগে থেকে তার অসুখের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। ‘





এদিকে হাসপাতালের সিইও রূপালি বসু জানিয়েছেন, সৌরভের বাকি দুটি ধমনীতে স্টেন্ট বসানো হবে। তবে তা এখনই হচ্ছে না। চিকিৎসকরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এনজিওপ্ল্যাস্টি করা হবে, তবে তা কবে এবং কহখন তা নিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।





শনিবার (০২ জানুয়ারি) বেলা ১টায় বুকে ব্যথা নিয়ে আচমকা হাসপাতালে ভর্তি হন সৌরভ গাঙ্গুলী। তাকে দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি উডল্যান্ডস হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার শারীরিক ব্যাপারে বিস্তারিত খতিয়ে দেখে জানান ‘মাইল্ড কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়েছে সৌরভের।





ভর্তির সময় সৌরভের পালস ছিল মিনিটে ৭০ এবং প্রেসার ছিল ১৩০ বাই ৮০। ইকোকার্ডিওগ্রাম ও এনজিওগ্রাম করে তার ধমনিতে ব্লকেজ ধরা পড়ে। এরপর একটি ধমনীতে এনজিওপ্ল্যাস্টি করা হয় তার। একইদিন বিকেলে এনজিওপ্ল্যাস্টি হয় প্রিন্স অব ক্যালকাটার। বসানো হয় একটা স্টেন্ট। এরপর থেকে তিনি ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠছেন।টিবিটি