ফরায়েজিদের মতবাদ আলোচনা কর।
ভূমিকা: হাজী শরীয়তউল্লাহ মনেপ্রাণে ছিলেন একজন খাঁটি মুসলমান। একজন খাঁটি মুসলমান হয়ে তদানীন্তন মুসলমান সমাজের কুসংস্কারগুলোকে তিনি বরদাস্ত করতে পারেন নি। মক্কা থেকে দেশে ফিরে এসে তিনি সমাজ সংস্কারে মনোনিবেশ করেন এবং সমাজজীবন থেকে সব ধরনের কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও হতাশাচ্ছন্ন পরিবেশকে বিদূরিত করার মানসে ফরায়েজি আন্দোলনের ডাক দেন।
ফরায়েজিদের মতবাদ: ধর্মীয় সংস্কারে হাজী শরীয়তউল্লাহর মতবাদসমূহ আলোচনা করা হলো:
১. সর্বপ্রথম হাজী শরীয়তউল্লাহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ প্রচার করেন।
২. পীর ও মুরিদ শব্দগুলো প্রভু ও ভৃত্য সম্পর্ক নির্দেশ করে বিধায় তিনি উস্তাদ ও সাগরেদ শব্দ ব্যবহার করেন।
৩. তৎকালীন মুসলিম সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন অনৈসলামিক রীতিনীতি ও আচার অনুষ্ঠানকে ‘শিরক’ ও ‘বেদাত’ বলে এ দুভাগে বিভক্ত করেন।
৪. শিবপূজা, কবর পূজা, আলাহ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা দেয়া ইত্যাদি প্রচলিত রীতিকে তিনি শিরক বা পাপ বলে ঘোষণা করেন।
৫. গাজী কালুর প্রশস্তি গাওয়া, খাজা খিজিরের দোহাই দেয়া, জন্মের সময় ছুটি পালন করা। মহরমে শোক করা ইত্যাদিকে তিনি বেদাত বা ইসলামের পরিপন্থি বলে ঘোষণা করেন।
৬.তিনি শ্রমলব্ধ উপার্জনকে হালাল রুজি হিসেবে অতি উচ্চ স্থান প্রদান করেন।
উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ঐতিহাসিক জেমস ওয়াইজ বলেন, ইসলামের পুনঃজাগরণ ও মুসলমানদের নৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে হাজী শরীয়তউল্লাহ বিরাট সফলতা লাভ করেন।