দক্ষিণাত্যের কৃষক বিদ্রোহের বর্ণনা দাও।

দক্ষিণাত্যের কৃষক বিদ্রোহের বর্ণনা দাও।

 

 

 

ভূমিকা : ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধের পর ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ শুরু হয়। এরপর ১৭৫৭ সাল থেকে ১৭৬৫ সাল পর্যন্ত ‘নবাব’ নামধারী গীরজাফরের বংশধর কয়েক জন শাসককে সামনে

 

রেখে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসন ও শোষণ চালাতে থাকে। ইংরেজদের শোষণমূলক রাজস্বনীতি, চিরাচরিত

 

রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন, দেশীয় বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ, দেশীয় রীতিনীতি বিরোধী কার্যকলাপের কারণে বাংলার

 

জনজীবন দুঃসহ হয়ে উঠে। ফলশ্রুতিতে মাঝে মাঝে বিভিন্ন স্থানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এ • বিদ্রোহগুলোই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ নামে পরিচিত। দাক্ষিণাত্যের কৃষক বিদ্রোহ: ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে দাক্ষিণাত্যের কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এ বিদ্রোহ কোন ধর্মীয়

 

প্রভাব বা উপজাতিক স্বাতন্ত্র্যবাদ ছিল না। এ বিদ্রোহের প্রধান কারণ ছিল মহারাষ্ট্রে রায়ত ওয়ারী ভূমি রাজস্বের প্রবর্তন করা। দাক্ষিণাত্যের কৃষক বিদ্রোহকে সরকার উপেক্ষা করতে পারে নি। অবশেষে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে ডেকার এগ্রিকালচারাল রিলিফ আইন পাস করা হয়। এ আইন দ্বারা মহাজনদের নাম রেজিস্ট্রি করা ও আইন মাফিক হিসাবপত্র রক্ষা করা বাধ্যতামূলক করা হয়। কৃষকের জমি যাতে সহসা হাতছাড়া না হয় সেজন্য ব্যবস্থা করা হয়। সুদের হার যাতে মাত্রাতিরিক্ত না হতে পারে সেজন্য আইন প্রণয়ন করা হয়।

 

উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায় যে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ শুরু হলে বাংলার জনজীবনে চরম দুর্দিন নেমে আসে। ইংরেজদের শোষণমূলক রাজস্বনীতি, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি কারণে এ দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। তাই বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তার সহচর জমিদার জনগোষ্ঠীর অত্যাচার অনাচারের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহগুলো যে আপসহীন সংগ্রামের মহান ঐতি। সৃষ্টি করেছিল তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব কোনদিনই স্পন হবে না।