কৃষকবিদ্রোহ বলতে কী বুঝ?

কৃষকবিদ্রোহ বলতে কী বুঝ?

ভূমিকা: প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের রোষানলে পড়ে পাক-ভারত উপমহাদেশের মানুষকে চরম দুরবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করতে হয়েছিল এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের প্রতি পদে পদে বিপর্যয়ের মুখে পতিত হয়েছিল। ইংরেজ শাসকচক্রের অমানবিক অত্যাচার ও প্রাক্ত একশত বছরব্যাপী ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যায় যে, শ্রেণি তারা হলে। কৃষক। নিম্নে কৃষকবিদ্রোহ সম্পর্ক আলোচনা করা হলো: নিপীড়ন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই

 

কৃষকবিদ্রোহ: শাসক ও শোষক শ্রেণির অন্যায়, অবিচার-অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে কৃষক সমাজের সংগ্রামকেই কৃষকবিদ্রোহ বলে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় দেওয়ানি লাভের পর অবস্থা চরম আকার ধারণ করে। বাংলায় কোম্পানির নায়েব দেওয়ান রেজা খান ও বিহারের নায়েব দেওয়ান সিতার রায়ের অত্যাচারের ফলে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ঘটে। ফলে বাংলার নিরন্ন কৃষকসহ দুই-তৃতীয়াংশ লোক মারা যায়। ফলে বাঁচার জন্য কৃষকেরা দীর্ঘ শতবর্ষব্যাপী ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন পরিচালনা করে।কৃষক সমাজের সারাটি জীবন অতিবাহিত হয় সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে, কখনো বা অতিরঞ্জিত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ক্ষুধা, জরা বা ব্যাধির বিরুদ্ধে, কখনো বা ধনিক শ্রেণি, মহাজন, গ্রামের মোড়ল, জমিদারদের বিরুদ্ধে অব্যাহত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। যে কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করে অথচ তাদেরকেই কাটতে হয় মানবেতর জীবন। ঐতিহাসিকভাবেই প্রতিটি কৃষক আন্দোলন ছিল অত্যন্ত যুক্তিসংগত এবং প্রতিটি আন্দোলনই ছিল ব্রিটিশ শাসক শ্রেণি, জোতদার ও মহাজন শ্রেণির বিরুদ্ধে। মূলত কৃষকদের উপর অত্যধিক কর আরোপ, বেকার খাটানো, নির্যাতন, শোষণ ও নিপীড়ন, নীল চাষে বাধ্য করা, বিমাতাসুলভ আচরণ রাজনৈতিক অধীনতা, সাংস্কৃতিক বশ্যতা ও অসম বিনিময়ের কারণেই বিভিন্ন কৃষক আন্দোলনের তীব্রতা দানা বেঁধে উঠে।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, শাসন, শোষণ ও অত্যাচারের অবসানের প্রয়াসে ও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মানসে কৃষকরা যে আন্দোলন করে তাই কৃষক আন্দোলন নামে পরিচিত।