বাংলা পাঠশালা সম্বন্ধে ধারণা দাও।
ভূমিকা: ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশরা প্রায় দুশোবছর ধরে শাসনকার্য পরিচালনা করে। এ সক তারা এগুলোর মধ্যে বাংলা পাঠশালা বাংলা পাঠশালা: নিম্নে প্রশ্নালোকে বাংলা পাঠশালা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো: প্রশ্নালোকে পাশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের অনেক স্থাপন করা হয়। এগুলোর ছিল এগুলো পরিচিতি: ইংরেজ শাসনামলো শশক্ষা দেয়ার জন্য আলাদা কিছু বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এগুলোই ভাল পাঠশালা হিসেবে পরিচিত।
২. বাংলা পাঠশালার সংখ্যা : ১৮৩৫ সালে বড়লাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক এডামকে বাংলা-বিহারের এ শিখাবার বাংলা পাঠশালার সংখ্যা : ১৮৯৩৫। তিনি কয়েকটি জেলায় পাঠশালার যে হিসাব দিকটি মেদেনীপুরে ৫৪৮টি, মুর্শিদাবাদে ৬২টি, বীরভূমে ৪০৭টি, বর্ধমানে ৪২৯টি এবং দিনাজপুরে ১১৯টি পাঠশালা ছিল।
দনীপুরে ৫৪৮টি, মুশিদালানেশীয় মুসলামানরা হিন্দুদের তুলনায় অনেক পিছনে পড়েছিল। কয়েকটি জেলার বাপ। পাঠশালায় হিন্দু ও মুসলমান ছাত্রদের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে মুর্শিদাবাদ ১৯৯৮ ও ৬২, বর্ধমান -১২, ৪০৮ ও ৭৬৯ এ বীরভূম ৬১২৫ ও ২৩২ জন।
৪. শিক্ষাব্যবস্থা: বাংলা পাঠশালায় সংস্কৃত উদ্ভূত বাংলা শিক্ষা দেয়া হতো এবং প্রায় সকল শিক্ষকই হিন্দু ছিল। এডাম এদের পাঠ্যতালিকার উলেখ করে বলেছেন যে, ছাত্রদেরকে প্রতিদিন সকালে হাঁটু গেড়ে নত মস্তকে সরস্বতী বন্দনা আবৃত্তি করতে হবে। তারা শুভসঙ্করের গণিতের নিয়মগুলোও সমস্বরে আবৃত্তি করে শিক্ষা করতো। তাদেরকে বাড়াপিছু গভাকিয়া, কাঠাকিয়া, শতকিয়া, যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ এবং কৃষি ও বাণিজ্য বিষয়ক হিসাবের নিয়মগুলোও মুখস্ত করয়ে হতো। পত্র লিখা, মনসামঙ্গল প্রভৃতি তাদের পাঠ্যতালিকাভূক্ত ছিল।
৫. মুসলমানদের অনাগ্রহ: কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সংস্কৃত ও বাংলার পণ্ডিতগণ সংস্কৃত ভাষার সাথে মিল রেখে বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন। এগুলো বাংলা পাঠশালায় শিক্ষা দেয়া হতো। পূর্ব বাংলার মুসলমানগণ সংস্কৃত উদ্ভূত বাংলার সাথে পরিচিত ছিল না। পাঠ্যপুস্তকগুলো হিন্দুধর্ম ও উপকথা সম্বন্ধীয় ছিল। এজন্য মুসলমানগণ সাধারণত পাঠশালাগুলোতে শিক্ষা লাভের সুযোগ গ্রহণ করতে খুব একটা আগ্রহী ছিল না।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় বাংলা পাঠশালাগুলো ছিল বাংলা ও আসামের মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদয়ের জন্য বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্পর্কিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে এ সকল প্রতিষ্ঠানে মুসলমানগণ হিন্দুদের তুলনায় কম লেখাপড়া করতো।