কোতোয়ালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর।

কোতোয়ালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর।

 

 

ভূমিকা: মুঘল শাসনব্যবস্থা সুশৃঙ্খল রাখতে কোতোয়াল নামক প্রধান পুলিশ কর্মচারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক পালন করেন। সম্রাট আকবরের শাসনামলে কোতোয়াল নামক গদটি চালু হয়। রাজধানী শহরগুলোতে নিরাপত্তা বজায় রাখার লক্ষ্যে তাঁদের নিয়োগ প্রদান করা হয়। এরা সম্রাট কর্তৃক নিযুক্ত হতো। প্রাদেশিক কোতোয়াল সুবাদারের অধীনে এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব পালন করতো। তার কাজকর্ম ছিল আধুনিক পুলিশ সুপারের মতো। তাঁকে মাঝে মাঝে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করতে হতো।

 

কোতোয়ালের ক্ষমতা ও কার্যাবলি: কোতোয়াল রাজধানী নিরাপত্তা রক্ষার্থে সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করতো। শহরের নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তিনি ও তাঁর কর্মচারী অক্লান্ত পরিশ্রম করতো। নিম্নে কোতোয়ালের ক্ষমতা ও

 

কার্যাবলি আলোচনা করা হলো:

 

১. শান্তিরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন: শহরের মধ্যে যারা লুটপাট, ছিনতাই, হত্যা, রাহাজানি এবং প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করতো তাদের দমন করার কাজে কোতোয়াল লিপ্ত থাকতো। এরা শহরের শান্তিরক্ষক হিসেবে অপরাধীদের তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করতো এবং অপরাধ কর্ম অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতো। শাস্তি প্রদানের পর যেসব অপরাধী মুক্তি পেত তাদের প্রতি কোতোয়াল সবসময় নজর রাখতেন। কারণ এরা ভবিষ্যতে যেন অপরাধ কর্ম করতে না পারে। কোতোয়ালের তত্ত্বাবধানে তাঁর কর্মচারীরা নিজ নিজ এলাকার অপরাধ দমন করে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চেষ্টা করতো।

 

২. অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা: শহরকে নিরাপদ রাখার জন্য অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা করা জরুরি ছিল। ফলে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্ব গ্রহণ করতো কোতোয়াল। যেমন- হাট বাজারের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা করা, প্রত্যেক বাড়িঘরে তালিকা রক্ষা করা, চোর-ডাকাতদের সমূলে উৎপাটন করা এবং রেওয়ারিশ সম্পত্তি

 

রক্ষণাবেক্ষণ করা ইত্যাদি।

 

৩. সতীদাহ প্রথা : সতীদাহ প্রথা একটি জঘন্যতম প্রথা। এটি সমাজ বিবর্জিত গর্হিতমূলক অপরাধ। হিন্দুদের মধ্যে এ অপরাধ পালন করা হতো। সতীদাহ প্রথা হলো মৃত স্বামীর চিতায় জীবন্ত স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারা। এ প্রথা অনুযায়ী অনেক বিধবা স্ত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জীবন দিতে বাধ্য করা হয়েছে। মুঘল আমলে এটা বন্ধ করার জন্য কোতোয়াল এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তিনি গোঁড়া হিন্দুদেরকে এটা পালন না করার জন্য বার বার তাগিদ দিতেন। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও

 

কেউ তা পালন করলে তার প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। এসব ব্যবস্থার মাধ্যমে হিন্দু বিধবা রমণীগণ

 

কোতোয়ালের তত্ত্বাবধানে সতীদাহ প্রথা থেকে মুক্তি লাভ করতো। ৪. বাধ্যতামূলক অনুমতি নেয়া : অপরিচিত লোক শহরে প্রবেশ করার পূর্বে কোতোয়ালের অনুমতি নিতো। এ শহলো প্রবেশ যার প্রয়োজন হতো কারণ অপরিচিত লোকদের সাথে ওয়েবারা বীবির পূর্বে কোতোয়ালের িপারে। এরা শহরে প্রবেশ করলে জনজীবন বিপন্ন হতে পারে, বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সমাজকে কলুষিত করতে পারে। এসব ঘটনা সৃষ্টি না করার জন্য অপরিচিত সকল ব্যক্তিই কোতোয়ালের অনুমতি নিতে বাধ্য হতো।

 

। ৫. পাপকত দ্রব্য উদ্ধার: কোতোয়াল অপহৃত দ্রব্য উদ্ধার করলে তা নিজ তত্ত্বাবধানে রেখে দিত। দ্রব্যগুলোর প্রমান পেলে জনগণের কাছে ফেরত প্রদান করা হতো। রাষ্ট্রীয় মূল্যবান দ্রব্য যেন না হারায় এবং ঠিকভাবে গচ্ছিত রাখার জন্য ঐ স্থানগুলোতে কোতোয়াল নিরাপত্তা বৃদ্ধি কর