কালেক্টরের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর।

কালেক্টরের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর।

 

ভূমিকা: ব্রিটিশদের সময় প্রত্যেক জেলায় রাজস্ব আদায়ের জন্য একজন করে কালেক্টর নিয়োগ করেন। তাকে সাহায্য করার জন্য একাধিক অ্যাসিস্টেন্ট কালেক্টর নিয়োগ দেন। কালেক্টরের অফিসিয়াল উপাধি ছিল Collector of the Revenue of Zillah-১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রত্যেক জেলায় ইপারভাইজারের পদ তুলে দিয়ে কালেক্টর পদের সৃষ্টি করেন। পঞ্চসনা বন্দোবস্ত ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তুকে বাস্তবায়ন করতে কালেক্টরগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

 

কালেক্টরের ক্ষমতা ও কার্যাবলি: কালেক্টরগণ গভর্নর জেনারেলের কাছে রাজস্ব সংক্রান্ত সকল বিষয়ে তথ্য জানাতেন। যেমন: রাজস্বের পরিমাণ কেমন হবে, কাদের কাছে জমি বন্দোবস্ত দেয়া উচিত হবে এবং জমিদারদের অত্তাচার হতে প্রজাগণকে রক্ষা করার জন্য কী ব্যবস্থা অবলম্বন করা প্রয়োজন ইত্যাদি। নিম্নে কালেক্টরের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা করা হলো:

 

ক. গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তা : ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলার ভূমি রাজস্ব আদায়ের বিষয় ও প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত করা হয়। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত পরবর্তী সময়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কোন মূল্যই ছিল না বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবে তা ভিন্ন ছিল। কারণ কালেক্টরের অবস্থান ছিল অত্যন্ত ক্ষমতা সম্পন্ন। ঢাকা জেলার না বলে মনে করা হয়। কিন্তু বুকদারের কাছে জেলার প্রধান বাজস্ব আদায়কারী হিসেবে কালেক্টর ছিলেন একজন রেজিস্ট্রি অব ডিডস’: তোলা মারামারির পাশ্বপূর্ণ দত্তর ছিল রেজিস্ট্রি অব ভিডসন বন্ধু পম্পিও শি দানির। এর তত্তাবধানে ডিচেনা : জেলা প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর দিলে। পদের বিলুপ্তির পর এ ইলিনি বিয়ে দশিক নিবন্ধীকরণের দারি দাবির বিল কালেক্টরের হাতে। সালে। রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব ছিল স পরিপ্রেক্ষিতে তাকা জমি বিক্রি, পান, পর দায়িত্ব অর্পিত হয় আদালতের রেজিস্ট্রারের উপর দলিল নিবন্ধীকরণ করা। অধিনিতে িকালে রো জেলার লোকদেরকে দলিল সাময়িক বরাদ্দ বা হস্তান্তর ইত্যাদি সংক্রান্ত পরবর্তীকালে রেজিস্ট্রারের অফিসলি কালেক্টরের অফিসের সাথে সংযুক্ত দলিল নিবন্ধীকরণের জন্য ঢাকায় আোমনে, হাকজন স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব প্রদান করেন। জেলা কালেক্টরগণ পদবি অব

গ. বোর্ড অব রৌভালে রেজিস্ট্রার অব ডিডস নিযুক্ত হন:কোর্ট অব ডাইরেক্টরকে জানানো হলে কোর্ট ইজারাদারি নিলাম ব্যবস্থা বিলোপ করেন। তারা সবাই বন্দোবস্তের ফলাধানও জমিদারের সাথে রাজস্ব বন্দোবস্ত করার ক্তিশালীরামর্শ দেন। নিলামী বন্দোবস্তের রসে কানা বাৎসরিক মেয়াদে প্রধানত আাহিয় এবং এর পরিবর্তে প্রতিষ্ঠিত হয় শক্তিশালী বোর্ড অব রেভিনিউ। কোব্রজের সঙ্গে প্রাদেশিক কাউন্সিলও উঠাইয়া দেওয়া হয়ত্যেক জেলায় কালেক্টর নিযুক্ত করিয়া বাৎসরিক মেয়াদে জমিদারদের সাথে রাজস্ব র দেবিকাতায় প্রতিষ্ঠিত হালেব বকরা হয় যে, বাৎসরিক মেয়াদে সরকারি রাজস্ব দাবি যেসব জমিদার গ্রহণ করতো জাথ বন্দোবা করে। এখানে উইজারাদারদের সঙ্গে বন্দোবস্ত করা হয়। অনেক জমিদার সরকারের উচ্চ রাজস্ব দাবিত মেনে হয় তাহাদের জমিদারি ইজারাদারা ১০ টাকা মালিকানা ভাতার পরিবর্তে জমিদারি ইজারাদারদের তত্ত্বাবধানের ছাড়িয়া দেয়।

 

ঘ. তথ্যাদি সংগ্রহ: তথ্য সংগ্রহ করা কালেক্টরদের প্রধান দায়িত্ব মনে করা হয়। কারণ কালেক্টরগণের তথ্যের ভিত্তিতে গভর্নর জেনারেল রাজস্ব বৃদ্ধি বা কমাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যেমন- দুবছর কালেক্টরগণের তথ্য সংগ্রহের ভিত্তিতে লর্ড কর্নওয়ালিস দশসনা বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন। এছাড়াও দীর্ঘ সময় ধরে কালেক্টরদের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে যেসব তথ্য পান তারই উপর ভিত্তি করে দশসনা বন্দোবস্তকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে প্রবর্তন করেন।

 

ঙ. ডেপুটি কালেক্টর: ১৮৩৩ সালের রেগুলেশন ৯ এর আওতায় ভারতীয়দের মধ্য থেকে একটি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ডেপুটি কালেক্টরের পদ সৃষ্টি করা হয়। এর অধীনে যাদের নিয়োগ দেয়া হয় তারা সবাই ছিলেন বাঙালি। নতুন এক শ্রেণি হিসেবে ঢাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের অঙ্কুরায়নে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

 

চ. প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি: চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পরে কর্ণওয়ালিস কালেক্টরদের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি কালেক্টরের আগের ক্ষমতা বলবৎ রাখেন। এ নতুন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কালেক্টররা রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারবে। কিন্তু বিচারের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। কর্ণওয়ালিস এদের প্রশাসনিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। তাদের সহায়তা করার জন্য প্রত্যেক জেলায় থাকবে একটি করে দেওয়ানি আদালত।

 

ছ. পঞ্চায়েতকে দিয়ে কাজ করানো: ১৮১৩ সালের ১৩ নং রেগুলেশন পাস হওয়ার পর আয়কর ও লাইসেন্সের উপর ট্যাক্স আরোপ করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় প্রয়োজনে কিছু চৌকিদার বা নৈশপ্রহরী নিয়োগ করা। যদিও এ ট্যাক্স সংগ্রহের মূল দায়িত্ব ছিল কালেক্টরের হাতে। তিনি এ কাজটি নিজেস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে না করিয়ে মহলা পঞ্চায়েতকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতেন। তিনি কেবল তার দপ্তরে অল্প কয়েকজন কর্মচারী নিয়োগ করে চৌকিদারি ট্যাক্স সংক্রান্ত কাগজ ও হিসাব রক্ষা করতেন। যদিও মহল। পঞ্চায়েত একটি সনাতনী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চৌকিদারী ট্যাক্স সংগ্রহ করার জন্য যে মহলা পঞ্চায়েতটি গঠন করা হয় তাতে কালেক্টর মহলার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাছাই করে মনোনয়ন দিতেন।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, কালেক্টর সৃষ্টির মাধ্যমে রাজস্ব সমস্যার সমাধান করা হয়। তাদের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্রিটিশ কোম্পানির আয়ের পথ শক্তিশালী হয় এবং ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার ভিত্তিকে আরো সুদৃঢ় মজবুত কাঠামোর উপর গড়ে তুলতে সাহায্য করে। প্রশাসনের দিক দিয়েও কালেক্টর অধিক  ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারতেন।