বক্সারের যুদ্ধের ঘটনা বর্ণনা কর।
ভূমিকা: বাংলা তথা ভারতবর্ষের ইতিহাসে বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধে মীর কাসিমের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ইংরেজ শক্তি বাংলায় াংলায় সুদূরভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলা হতে দিলি পর্যন্ত আর কোন শক্তিই ইংরেজদের প্রতিরোধ করার মতো ছিল না।
বক্সারের যুদ্ধের ঘটনা: ১৭৬৩ সালে মেজর এডামসের নেতৃত্বে ১০,০০০ ইউরোপীয় ও ৪০০ দেশীয় সৈন্য নিয় ইংরেজ বাহিনী মীর কাসিমের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। মীর কাসিমের অধীনে প্রায় ২০,০০০ সৈন্য ছিল। অধিক সংখ্যক সৈয় থাকা সত্ত্বেও তাদের কোন সামরিক দক্ষতা ছিল না। মীর কাসিম কাটোয়া গিরিয়া, উদয়নালা প্রভৃতি যুদ্ধে ইংরজদের নিকট ‘পরাজিত হন। এরপর মেজর এডামস মুঙ্গেরের দিকে অগ্রসর হলে মীর কাসিম পাটনায় পলায়ন করে সমস্ত ইংরেজ বন্দিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। মেজর এডামস মুঙ্গের অভিমুখে অগ্রসর হলে মীর কাসিম নিরূপায় হয়ে অযোধ্যায় পলায়ন করে নবাব সুজা-উদ-দৌলার আশ্রয় গ্রহণ করেন।
এসময় মীর কাসিম সুজা-উদ-দৌলাসহ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি আশা করেছিলেন। যে, অযোধ্যার নবাব সিংহাসন পুনরুদ্ধারে তাকে সাহায্য করবেন। কিন্তু ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপার মেজর হেক্টর মুনরোর নিকট সম্মিলিত বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটল। শাহ আলম ইংরেজদের পক্ষে যোগ দিলেন এয় সুজা-উদ-দৌলা শর্তসাপেক্ষে স্বীয় সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। মীর কাসিম আত্মগোপন করেন। সম্ভবত ১৭৭৭ সাম অতি দরিদ্র অবস্থায় দিলির কোন জীর্ণ কুটিরে তাঁর মৃত্যু হয়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৬৪ খ্রিঃটাব্দে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধ মূলত মীর কাসিম বাংলার স্বাধীনতার শেষ আশা আর ইংরেজ বোম্পানির রাজদণ্ড দখলের চূড়ান্ত যুদ্ধ। মীর কাসিম যুদ্ধ করে বাংলার স্বাধীনতা বজ করতে ব্যর্থ হন। আর ইংরেজগণ ক্ষমতা দখল করে তাদের সাম্রাজ্যবাদ নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।