‘Drain of wealth’ কাকে বলে?
ভূমিকা: বাংলার ইতিহাসের সাথে পলাশীর যুদ্ধের ইতিহাস বিশেষভাবে জড়িত। ১৭৫৭ সালের এ যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলায় নতুন এক অধ্যায়ের শুরু হয়। বাঙালির জীবনে ইংরেজদের আধিপত্যবাদ ও দুঃশাসনের সময়েরও সূচনা হয়েছিল। আর এভাবে ভূলণ্ঠিত হয়ে যায় বাঙালির মর্যাদা আর গৌরবময় ইতিহাসের।
Drain of wealth: পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজ কোম্পানি ও তার কর্মচারীরা বিনা শুল্কে ব্যাপক বাণিজ্য চালাতে থাকে। বাংলার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য কোম্পানি, কোম্পানির কর্মচারী ও ইংল্যান্ড হতে আগত বেসরকারি বণিকদের একচেটিয়া অধিকারে চলে যায়। দস্তকের এ অপব্যবহারের ফলে বাংলার বণিকদের একাংশ প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে বাণিজ্য মূলধনের টাকা জমিদারি ক্রয় ও কলকাতায় গৃহনির্মাণে বিনিয়োগ করে। বাঙালিরা বাণিজ্য লক্ষ্মীর প্রাসাদ হতে বঞ্চিত হতে থাকে। বাংলার বণিকদের একটি ক্ষুদ্র অংশ ইউরোপীয় বণিকদের গোমস্তা, সরকার, বেনিয়া হিসেবে টিকে থাকে। তবে এ কাজে তারা ছিল ইংরেজ বণিকদের ভৃত্য বা সহযোগী মাত্র। এ বিনা শুল্কে বাণিজ্য বাবদ বিরাট অঙ্কের অর্থসম্পদ বাংলা থেকে ইংল্যান্ডে চলে যেতে থাকে। নদীর জল যেমন ভাটার টানে সমুদ্রের দিকে চলে যায়, তেমনি বাংলার অফুরন্ত সম্পদ পার হয়ে ইংল্যান্ডে চলে যেতে থাকে। এ ঘটনাকে ঐতিহাসিকেরা ‘Drain of wealth’ বা সম্পদের অপহরণ বলেছেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, পলাশীর যুদ্ধের ফলে বাংলার সম্পদ বিদেশে চলে গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সাথে সাথে যে বাণিজ্য বিস্তার ঘটে তা অকল্পনীয়। এ কারণে এ ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব পেয়েছে ইতিহাসে।