পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের পারস্পরিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের পারস্পরিক গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

ভূমিকা: পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধ উভয়টিই ইংরেজদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এবং উভয় যুদ্ধেই বাংলার নবাবগণ পরাজিত হন। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ আর ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষ।বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

 

পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের পারস্পরিক গুরুত্ব: স্যার জেমস স্টোফেন বলেছেন, “The battle of Buxar deserves for more credit their of palassey as the drigin of the British power in India.” অর্থাৎ, ব্রিটিশ শক্তির উৎপত্তি হিসেবে ভারতে পলাশী অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আবার ঐতিহাসিক মজুমদার রায় চৌধুরী বলেছেন, “পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা মীর কাসিমের সাথে সংঘর্ষ বাংলার বিজেতা হিসেবে ইংরেজদের দাবিকে প্রকৃত অর্থে প্রতিষ্ঠিত করে।”

 

পলাশীর যুদ্ধ ইংরেজদিগকে বাংলায় প্রভুত্ব স্থাপনে সাহায্য করে। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ইংরেজদিগকে শুধু বাংলায় দৃঢ় স্থায়িত্ব দান করে নি বরং সমগ্র বঙ্গ-ভারতে নিরাপত্তা দান করে ভারতবর্ষ ছাড়াও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সহায়তা লাভ হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় সমগ্র অংশে তারা ২০০ বছরের ব্রিটিশ রাজত্বের ইতিহাস এর সূচনা করে বক্সারের যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমে। বক্সারের যুদ্ধের সাথে সমগ্র ভারতের স্বাধীনতা জড়িত ছিল। স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে উদ্বুদ্ধ যুদ্ধে পলাশী অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধে অধিক সংখ্যক সৈন্য হতাহত হয় এবং মৃত্যুবরণ করে। এ যুদ্ধে ভারতীয়রা তাদের স্বদেশপ্রেমের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনে সামর্থ্য হয়।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধ মূলত মীর কাসিম বাংলার স্বাধীনতার শেষ আশা আর ইংরেজ কোম্পানির রাজদণ্ড দখলের চূড়ান্ত যুদ্ধ। আর ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধ ছিল কেবল ষড়যন্ত্রের মহড়া মাত্র।