১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পরাজয়ের কারণ কী ছিল?

১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজের পরাজয়ের কারণ কী ছিল?

ভূমিকা: পলাশীর যুদ্ধে হতভাগ্য নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মাধ্যমে আমরা হারাই আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, হারাই কথা বলার অধিকার। তাই ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ এক তাৎপর্যময় ঘটনা। সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় বা কোম্পানির জয়লাভের কারণ: নিম্নে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণগুলো তুলে ধরা হলো:

 

১. মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা: পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের জন্য সিপাহশালার মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতাই দায়ী। কারণ তিনি কুরআন হাতে নিয়ে শপথ করলেও নিজ স্বার্থে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। ২. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উচ্চাকাক্কা: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে বা বাংলায় বাণিজ্য করার সুবাদে দীর্ঘদিন অবস্থান করেন। এ অবস্থান করার কারণে তারা বাংলার শাসন ক্ষেত্রে যে দুর্বলতা ছিল তা উপলব্ধি করে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে পড়েন এবং সে মোতাবেক অগ্রসর হন এবং সফল হন।

৩. ক্লাইভের চতুরতা: পলাশ পলাশীর যুদ্ধ তথা সিরাজের সাথে যুদ্ধে যে ব্যক্তি বেশি লাভবান হন তিনি হলেন রবার্ট তিনি ক্লাইভ। তিনি ছিলেন কোম্পানির পক্ষে এ ঘটনার মূল নায়ক। পলাশীর যুদ্ধে তার স্বার্থপরতা ও কূটকৌশলের বাস্তব প্রয়োগ হয়েছিল। তার কূটকৌশলের কাছে নবীন নবাব সিরাজ কুলিয়ে উঠতে পারে নি।

 

৪. নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব: নবাব সিরাজের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণ- তিনি সমকালীন কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের পরিবেশ উপলব্ধি করতে পারে নি। তাই তাকে এ খেসারত দিতে হয়। স্বজনপ্রীতি: নবাব সিরাজের কাছে বাংলার মাটি ও বাংলার মানুষ ছিল প্রিয় বস্তু। তিনি

 

৫. নবাব সিরাজের অতিরিক্ত সবকিছুতে ছাড় দিতে রাজি ছিলেন কিন্তু বাংলার স্বাধীনতার জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। বাংলাকে এতো ভালোবেসে ছিলেন যে, তার কাছে কোন ষড়যন্ত্রের কথাই নিজ বিশ্বাসকে আঘাত করতে পারে নি। তাই তাকে খেসারত দিতে হয়। পরিশেষে বলা যায় যে, পলাশীর যুদ্ধ হঠাৎ করে একক কোন কারণে সংঘটিত হয় নি।

 

উপসংহার: কোম্পানির দীর্ঘদিন বাণিজ্য করার অভিজ্ঞতার সুবাদের সৃষ্টি উচ্চাকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রয়োগ।