মারাঠা কারা?

মারাঠা কারা?

ভূমিকা: সতের শতকের শেষার্ধে মারাঠা জাতির উত্থান মধ্যযুগের ভারতীয় ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। মারাঠা জাতির উত্থানের নেতৃত্বে ছিলেন মারাঠা বীর শিবাজী। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে মারাঠারা এক ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত হয়েছিল।

 

মারাঠাদের পরিচয়: ভারতের দাক্ষিণাত্যের মারাঠা প্রদেশের দুর্ধর্ষ সৈন্যদের মারাঠা বলা হতো। কিন্তু তারা বর্গি নামেই সমধিক পরিচিত। বাংলায় মারাঠা সৈন্যদের মধ্যে এক শ্রেণির নাম ছিল শিলাদায়। এরা নিজেদের ঘোড়া ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতো। আর যাদের নিজস্ব অস্ত্রশস্ত্র ও ঘোড়া ছিল না তাদের নাম ছিল বাগীরা। ‘বর্গি’ এ বাগীরই অপভ্রংশ। বাংলায় মারাঠা বর্গিদের আক্রমণের বৈশিষ্ট্য ছিল নারী ধর্ষণ, আবালবৃদ্ধবনিতাকে নির্বিচারে হত্যা। নগরের পর নগর এবং গ্রামের পর গ্রাম লুন্ঠন ও অগ্নিসংযোগ।

 

মারাঠা জাতির উত্থান: মারাঠাদের বাসভূমি মহারাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক পরিবেশ, অনুর্বর ভূমি ও জলবায়ুর প্রভাবে মারাঠারা কষ্টসহিষ্ণু, কঠোর পরিশ্রমী ও সংগ্রামশীল হয়ে উঠে। এসময় ভক্তি আন্দোলনের প্রভাবে মারাঠাদের মধ্যে সামা ও ঐক্যবোধ জাগ্রত হয়। তাছাড়া মারাঠাদের অন্যতম সংগঠক শিবাজীর আবির্ভাবের পূর্বেই মারাঠারা দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর, গোলকুন্ডা প্রভৃতি মুসলিম সাম্রাজ্যের বিভিন্ন বিভাগের উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থেকে সামরিক ও রাজনৈতিক দক্ষতা অর্জন করেছিল। তারা সব দিক থেকে একটি শক্তিশালী জাতির বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছিল। এসময় মহান ও দক্ষ সংগঠক শিবাজী মারাঠাদের একটি সংঘবদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে মনোযোগ দেন। তারই নেতৃত্বে মারাঠারা একতাবদ্ধ একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, মারাঠাদের উপদ্রব মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতিকে বার বার বিব্রতকর অবস্থায় মাধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশেষ করে মারাঠাদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আওরঙ্গজেবকে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পীড়া দিয়েছে।