পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের কারণ কী ছিল?

পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের কারণ কী ছিল?

ভূমিকা: পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধ ভারতের ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। মুসলিম ভারতের ইতিহাসে মারাঠা ও আহমদ শাহ আবদালীর মধ্যে সংঘটিত পানি পথের এ তৃতীয় যুদ্ধ একটি যুগান্তকারী ঘটনা।

 

এ যুদ্ধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।

 

পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের কারণ: নিম্নে পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো:

 

১. আহমদ শাহ আবদালীর পুনঃ আগমন: ১৭৫৯ সালে আহমদ শাহ আবদালী ভারতবর্ষে পুনঃআগমন করেন। তিনি অযোধ্যার নবাব এবং রোহিলাদের সাথে চুক্তিতে আবন্ধ হন। আবদালী অযোধ্যার ও রোহিলা এ ত্রিশক্তির পরম শত্রু মারাঠাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করলে পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের নাটক মঞ্চস্থ হয়।

 

২. মারাঠা নেতা বালাজী বাজীরাওয়ের অদূরদর্শিতা অকর্মণ্য মারাঠা নেতা বালাজী বাজীরাওয়ের ব্যক্তিগত অদূরদর্শিতা ছিল পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ। তাঁর প্রতি রাজপুতরা বিরক্ত হয়েছিল। পাঞ্জাবে শিখদের দলে টেনে নেয়ার মতো সুবিবেচনা মারাঠারা দেখায় নি। এমন পরিস্থিতিতে আবদালী আঘাত শনার পরিকল্পনা করলে পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে।

 

৩. আবদালীর প্রাথমিক অভিযান প্রতিহত করতে ব্যর্থতা: আফগান বীর আহমদ শাহ আবদালী যখন ভারতবর্ষে মারাঠা শক্তির বিনাশ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক অভিযান প্রেরণ করেন। ১৭৬০ সালের প্রথম দিকে তখন দিলির দশ মাইল দূরে যুদ্ধক্ষেত্রে দত্তাজী সিন্ধিয়া প্রাণ হারান। মার্চ মাসে মলহার রাও হোলকার পরাজিত হন আফগান যোদ্ধাদের নিকট। হায়দারাবাদের নিজামকে হারিয়ে প্রভৃত খ্যাতি অর্জনকারী সদাবিশ রাও ভাও পরাজয়ে বরণ করে নিতে বাধ্য হন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে আবদালীকে প্রতিরোধ করতে না পারার ব্যর্থতাই পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধ নামক নাটক মঞ্চস্থ করে তোলে।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, পলাশীতে যে বীজ বপন করা হলো (১৭৫৭) পানি পথে (১৭৬১) যেন তার বিকাশ দেখা গেল শিকড় শক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। মারাঠারা আবার ইংরেজকে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করলো বটে। কিন্তু তখন বিলম্ব হয়ে গেছে ব্যর্থতা রোধ করা সম্ভব হয় নি।