আলিনগরের সন্ধি কী?

আলিনগরের সন্ধি কী?

ভূমিকা: সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন একজন শান্তিপ্রিয় নবাব। রাজ্যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তিনি সর্বদা ইংরেজদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করতেন। কারণ ইংরেজরা তাকে নানাভাবে প্রতারিত করতো। তাই দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কথা চিন্তা করে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ইংরেজদের সাথে আলিনগর নামক স্থানে একটি সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হন।

 

আলিনগরের সন্ধি: কলকাতা দখলের পর ইংরেজরা হুগলীতে উপস্থিত হলে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় নবাবের বাহিনীর সাথে ইংরেজদের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এতে কোন পক্ষেরই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয় নি। এদিকে ক্লাইভ নবাবকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েকজন সাহসী সেনাসহ রাতের আঁধারে নবাবের শিবির আক্রমণ করেন। কিন্তু নবাব দৈবক্রমে বেঁচে যান, তবে ১৩০০ সৈন্য এ অতর্কিত আক্রমণে নিহত হয়। এ আক্রমণের ফলে নবাব তার সাহস হারিয়ে ফেলেন। তাছাড়া তিনি বুঝতে পারেন যে, তার সভাসদ ও সেনাপতিদের মধ্যে অনেকেই ইংরেজদের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এদিকে তিনি সংবাদ পান যে, আফগান আক্রমণকারী আহমদ শাহ আবদালী আগ্রা, মথুরা বিধ্বস্ত করে বাংলার দিকে এগিয়ে আসছেন। সামনে ইংরেজ পিছনে আফগান তাই, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে কতকগুলো শর্তের বিনিময়ে আলিনগরে এক সন্ধিতে স্বাক্ষর করেন, যা ‘আলিনগরের সন্ধি’ নামে পরিচিত। এ সন্ধির মাধ্যমে ইংরেজরা তাদের বাণিজ্যিক অধিকার ও পূর্বের কুঠিগুলো ফেরত পায়।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা আলিনগরের সন্ধির মাধ্যমে ইংরেজদের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা করলেও বাস্তবে তা হতে বিপরীত হয়েছিল। সত্যিকার অর্থে এ সন্ধির অধিকাংশ শর্তই ছিল ইংরেজদের পক্ষে।