সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন?

সিরাজউদ্দৌলা কে ছিলেন?

ভূমিকা: মাতামহ আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিরাজউদ্দৌলা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার মসনদে আরোহণ করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র তেইশ বছর। নিম্নে তার পরিচিতি উলেখ করা হলো: সিরাজউদ্দৌলার প্রাথমিক পরিচয়: নবাব আলীবর্দী খানের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। তাঁর তিন কন্যা ছিল। তিন কন্যাকেই তিনি তার বড় ভাই হাজী আহমদের তিন পুত্রের সঙ্গে বিবাহ দিয়েছিলেন। ১৭৩৩ খ্রিস্টাব্দে কনিষ্ঠ কন্যা আমেনা বেগমের গর্ভে সিরাজউদ্দৌলার জন্ম হয় তার পিতা জৈনুদ্দীন আহম্মদ খান বিহারের ডেপুটি নবাব ছিলেন। ১৭৪৮ খ্রিস্টাব্দে আফগান বিদ্রোহীদের হাতে তিনি প্রাণ হারান। এসময় আলীবর্দী খান তাঁর প্রিয় দৌহিত্র সিরাজকে বিহারের ডেপুটি নবাব নিযুক্ত করেন। মৃত্যুর পূর্বে আলীবর্দী খান সিরাজকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করে যান। বাংলার নবাব পদে

অভিষিক্ত: মাতামহের মৃত্যুর পর সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে ১০ এপ্রিল বাংলার নবাব পদে অভিষিক্ত হন। এসময় সিরাজের বয়স ছিল ২৩ বছর। তিনি ছিলেন তেজস্বী ও স্বাধীনচেতা যুবক। তবে বাংলার মসনদ তাঁর জন্য ফুলশয্যাস্বরূপ ছিল না। সিংহাসনে আরোহণের পর পরই তরুণ নবাব চারদিক থেকে শত্রু পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েন। এসময় আলীবর্দী খানের আর এক দৌহিত্র পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা শওকত জঙ্গ বাংলার মসনদ লাভের জন্য লালায়িত ছিলেন। নিয়াজের বিরুদ্ধে চক্রান্ত: সিরাজের বড় খালা ঘসেটি বেগমও সিরাজের প্রতি বিরূপ ছিলেন। তিনি সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করে শওকত জঙ্গকে সিংহাসনে বসাবার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেন। আলীবর্দী খানের প্রধান সেনাপতি মীরজাফরও সিরাজের প্রতি বিদ্বেষঅবাপন্ন ছিলেন। মুর্শিদাবাদ প্রাসাদের আমত্যরা নবাব পদে সিরাজের মনোনয়ন কেমেনে নিতে পারে শি। কিন্তু সিরাজের তৎপর হস্তক্ষেপের ফলে ঘসেটি বেগমের সকল চক্রান্ত ব্যর্থ হয়।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সিরাজ পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বিহারের উদ্দেশ্যে পলায়নকালে রাজমহলের নিকট ধৃত হন এবং ২ জুলাই তাকে মুর্শিদাবাদে হত্যা করা হয়।