মীরজাফর কে ছিলেন?

মীরজাফর কে ছিলেন?

আরোহণ করেই মীরজাফর কোম্পানির সঙ্গে গোপন চুক্তি অনুযায়ী দেড় কোটি টাকা এবং ক্লাইভকে সন্তুষ্ট

করার জন্য পঁচিশ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হয়। নিম্নে তার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো: মীরজাফরের প্রাথমিক সমস্যাবলি: ক্লাইভ বাংলায় কোম্পানির গভর্নর নিযুক্ত হলে রাজকার্যে অযথা হস্তক্ষেপ করতে থাকেন। মীরজাফর কোম্পানির প্রাপ্য টাকা প্রদানে ব্যর্থ হয়ে দেউলিয়াগ্রস্ত হড়ে পড়েন।

 

ঢাকা ও পূর্ণিয়ায় বিদ্রোহ: পূর্ণিয়া ও ঢাকায় বিদ্রোহ দেখা দিলে ঢাকার বিদ্রোহ দমন করা হয় কিন্তু বেতন হতে বঞ্চিত নবাব বাহিনী পূর্ণিয়ায় অভিযান করতে অস্বীকৃতি জানায়। সুতরাং মীরজাফর বাধ্য হয়ে ইংরেজদের সামরিক সাহায্য গ্রহণ করেন। এর ফলে কোম্পানির নিকট তাদের ঋণের মাত্রা বেড়ে যায়। মীরজাফরের সাথে রায়দুর্লভ ও রামনারায়ণের মতবিরোধ দেখা দিলে ক্লাইভের মধ্যস্থতায় মিত্রতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।

 

ওলন্দাজদের সাথে মীরজাফরের ষড়যন্ত্র: ইংরেজ কোম্পানির দুরভিসন্ধি বুঝতে পেরে মীরজাফর তাদের বিরুদ্ধে

ওলন্দাজদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। ইংরেজদের অসামান্য সাফল্যে ঈর্যায়িত হয়ে ওলন্দাজগণ ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে ৩০০

ইউরোপীয় এবং ৬০০ মালব দেশীয় সৈন্যসহ সাতটি নৌবহরে গঙ্গা নদীতে উপস্থিত হয়। ক্লাইভ ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বিদারার যুদ্ধে তাদের পরাজিত ও বিতাড়িত করেন।

 

মীরজাফরের পদচ্যুতি: ইতোমধ্যে মীরজাফরের অকর্মণ্যতা ও বিশ্বাসঘাতকতা ইংরেজদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠলে অস্থায়ী গভর্নর হলওয়েলের প্রস্তাবক্রমে তাঁকে মসনদচ্যুত করা স্থির হলো। ওলন্দাজদের সাথে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মীরজাফর মসনদচ্যুত হলেন, ড্যান্সিটার্ট ছিলেন কলকাতায় ইংরেজ গভর্নর। ইংরেজদের সাহায্যে মীরজাফরের জামাতা মীর কাসিম বাংলার মসনদে অধিষ্ঠিত হলেন।

 

উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দে বিনা রক্তপাতে বাংলার রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে। বাংলার রাজনীতিতে ইংরেজগণ যে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হলো।