১৭১৭ খ্রিস্টাব্দের ফরমান হতে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধের আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কী ছিল?

১৭১৭ খ্রিস্টাব্দের ফরমান হতে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধের আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কী ছিল?

ভূমিকা: ভারতবর্ষে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধিপত্য বিস্তার ব্রিটিশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক সাফল্যের অকাট্য প্রমাণ এবং এ সাফল্যের স্বাক্ষর বহন করছে ইঙ্গ-ফরাসি সংঘর্ষে ইংরেজদের জয়লাভ।

 

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: ১৭১৭ সালের ফরমান হতে ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধের আগ পর্যন্ত বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হলো:

 

  1. ১. কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও কুঠি স্থাপন দাক্ষিণাত্য ব্যতীত বাংলায় ইংরেজগণ তাদের সুরক্ষিত কুঠি ও দুর্গ স্থাপন করে ব্যবসায় বাণিজ্য সম্প্রসারণে মনোনিবেশ করে এবং অর্থনৈতিক অনুপ্রবেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক তৎপরতা ও পক্ষান্তরে আধিপত্য বিস্তারের প্রয়াস পায়।

 

মুর্শিদকুলী খান: আওরঙ্গজেবের রাজত্বকালে ১৭০৫ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলী খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। ১৭০৭ খ্রিস্টাগে বাদশাহের মৃত্যুর পর তিনি এক প্রকার স্বাধীনভাবে রাজত্ব করতে থাকেন। তাঁর শাসনামলে ইংরেজ বণিকদের পূর্বের ফরমান অনুযায়ী নিয়মিত বাণিজ্য শুল্ক প্রদানে বাধ্য করা হয়। এর ফলে ইংরেজগণ সারমন ও হ্যামিলটনকে দিলিতে মুঘল সম্রাট ফররুখ শিয়ারের দরবারে বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের জন্য প্রেরণ করেন।

 

যদরুণ শিয়ারের ফরমান (১৭১৭ খ্রিস্টাব্দ): সম্রাটের দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা করে হ্যামিলটন তাঁকে সুস্থ করে তোলেন। ইংরেজদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে ফররুখ শিয়ার ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে ফরমান জারি করে প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের তা গালন করতে নির্দেশ দেন। এ ফরমান অনুযায়ী ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় বিনা শুল্কে বাৎসরিক ৩,০০০ টাকা প্রদানে অবাধ বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। স্বাধীনচেতা ও সুদক্ষ বাংলার সুবাদার মুর্শিদকুলী খান ফররুখ শিয়ারের এ ফরমান অবজ্ঞা করেন এবং তাদের নিকট থেকে শুল্ক আদায় করতে থাকেন। উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, ফররুখ শিয়ার কোম্পানির ম্যাগনাকার্টা হিসেবে পরিচিত। ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দের ফরমান মোতাবেক ইংরেজগণ ব্যবসায় বাণিজ্য করে সমৃদ্ধি লাভ করে এবং কলকাতার গুরুত্ব এরূপ বৃদ্ধি পায় যে, মাত্র ১৭ বৎসরে (১৭১৭-৩৫) ইহা জনসংখ্যায় এক লক্ষে পৌঁছায়।