তৃতীয় কর্ণাটের যুদ্ধের উপর একটি নিবন্ধ লিখ।
উত্তরঃ
ভূমিকা: ইউরোপের যুদ্ধের প্রভাব ভারতবর্ষে ইঙ্গ-ফরাসি দ্বন্দ্বের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছিল। ইউরোপীয়রা করমস্তল উপকূল এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকার নাম দেন কর্ণাটক। ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে এ কর্ণটিক অঞ্চল ভারতে ইঙ্গ-ফরাসি দ্বন্দ্বের মূলকেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।
তৃতীয় কর্ণাটের যুদ্ধ: ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে আবার ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠে। এর প্রতিক্রিয়া ভারতবর্ষেও দেখা দেয়। ইংরেজ ও ফরাসিরা পুনরায় যুদ্ধ ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন। এবার বঙ্গের দেশ ছিল ইঙ্গ- ফরাসি দ্বন্দ্বের প্রধান কেন্দ্র। ক্লাইভ ও ওয়াটসন ফরাসি অধিকৃত চন্দননগর অধিকার করলেন। এসময় ফ্রান্স হতে আগত নবাগত ফরাসি সেনাপতি কাউন্ট ডি লালী সেন্ট ডেভিট দুর্গ অধিকার করলেন বটে। কিন্তু তাঞ্জোর আক্রমণ করে বিফল মনোরথ হন। ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা মসুলিপট্টম দখল করে নেয়। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে লালী ইংরেজ সেনাপতি স্যার আয়ারকুটের হাতে বন্দিবাসের যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এরপর ইংরেজগণ এক এক করে ফরাসি উপনিবেশগুলো, অধিকার করেন। পরে ইংরেজগণ পণ্ডিচেরী অধিকার করে লালীকে বন্দি করেন। পরে ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে প্যারিসের সন্ধির ফলে যুদ্ধের অবসান হয়। এ যুদ্ধের ফলাফলস্বরূপ দেখা যায় ফরাসিরা তাদের হারানো স্থানগুলো ফিরে পান। কিন্তু এদেশে সাম্রাজ্য স্থাপনের স্বপ্ন ফরাসিদের জন্য চিরতরে মুছে যায়। এভাবে ভারতবর্ষ থেকে দুটি শক্তিশালী পক্ষ, যথা: ফরাসি ও ইংরেজদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদের অবসান হয়।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, এ সংঘর্ষের ফলে ইংরেজরা লাভবান হন। তাই পরবর্তীতে ফরাসিরা অপসারিত হলে ভারতে ইংরেজদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সহজ হয়।