আলীবর্দী খান কিভাবে মারাঠা দমন করেন?
ভূমিকা: বাংলার ইতিহাসে আলীবর্দী খানের শাসনামল এক বিশেষ অধ্যায়। অসামান্য যোগ্যতা ও বিচক্ষণতার অধিকারী ছিলেন তিনি। তাঁর কঠোরতার কারণে শত্রুপক্ষ সহজে তাঁর রাজ্য আক্রমণ করার সাহস পেত না। ষোল বছরের রাজত্বকাল তিনি বীরের মতোই অতিবাহিত করে গিয়েছেন।
মারাঠা দমন : মারাঠাদের দমনে নবাব আলীবর্দী খান ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৭৪৯ সালে শারীরিক অসুস্থতার মধ্য দিয়েও নবাব আলীবর্দী খান মারাঠা আক্রমণ প্রতিরোধের উদ্দেশ্য মেদেনীপুর নামক স্থানে এক স্থায়ী শিবির স্থাপন করেন। এ অবস্থা দেখে মারাঠা দস্যুরা পালাতে থাকে। এভাবে কৌশলে নবাব মেদেনীপুর, বর্ধমান ও বীরভূম থেকে মারাঠা দস্যুদেরকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হন। এরপর রঘুজি ভোঁালে নবাবের সাথে শান্তিচুক্তি করতে আগ্রহী হয়। ভোঁসলে এ মীর হাবীব, মীরজাফরের মধ্যস্থতায় নবাবের কাছে সন্ধি। প্রস্তাব পাঠায়। নাবব বাস্তব অবস্থা বুঝে মারাঠা দস্যুদের আক্রমণ হতে বাংলার মানুষ ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে কিছু শর্তে চুক্তি করতে সম্মত হন। শর্তগুলো হলো:
১. মীর হাবিব নাবব্ব আলীবর্দী খানের অধীনে উড়িষ্যার নায়েব নাজিম নিযুক্ত হবেন।
২. প্রতি বছর রঘুজিকে বাংলার রাজস্ব থেকে চৌথ বাবদ বারো লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। ৩. সুবর্ণরেখা নদী পার হয়ে কোন দিন আর মারাঠা সৈন্যরা বাংলায় প্রবেশ করতে পারবে না ইত্যাদি।এ শর্তগুলো মারাঠাদের অবশ্যই মেনে নিতে হবে বলে আলীবর্দী খান বলেন।
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, আলীবর্দী খানের শাসনামলে বাংলায় এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছিল। বৃদ্ধ বয়সেও যে সফলভাবে রাজ্যশাসন করা যায় আলীবর্দী খান ছিলেন তাঁর মূর্ত প্রতীক।