আলীবর্দী খানের সাথে ইংরেজ বণিকদের সম্পর্ক কেমন ছিল?

আলীবর্দী খানের সাথে ইংরেজ বণিকদের সম্পর্ক কেমন ছিল?

উত্তর:

ভূমিকা: আলীবর্দী খান তাঁর রাজ্যে ইউরোপীয় বণিকদের ব্যবসায় প্রসারে উৎসাহ দান করেন। কারণ তিনি মনে করতেন যে ইউরোপীয় বণিকদের শ্রীবৃদ্ধির উপর বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বহুলাংশে নির্ভরশীল।

 

আলীবর্দী খানের সাথে ইংরেজ বণিকদের সম্পর্ক: আলীবর্দী খান জানতেন ইউরোপীয় বণিকেরা বাংলা থেকে পণ্য বিদেশে রপ্তানি করলে বাংলার আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। তবে তিনি বিদেশি বণিকদের বাণিজ্যিক কার্যকলাপে উৎসাহ যোগালেও নিজের সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। বিদেশি বণিকেরা যাতে কোন অজুহাতে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ করতে না পারে সে দিকে তাঁর কড়া নজর ছিল। তিনি ইংরেজ ও ফরাসি উভয়কেই তাঁর রাজ্যে দুর্গ নির্মাণ করতে নিষেধ করেছিলেন। তিনি তাদের বলেছিলেন, “তোমরা এদেশে বাণিজ্য করতে এসেছে। তোমাদের দুর্গের প্রয়োজন কি? আমি তোমাদের নিরাপত্তা দেব।” তবে আলীবর্দী খান তাঁর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন। একজন আমির তাঁকে বাংলা থেকে ইংরেজ বিতাড়নের পরামর্শ দিলে তার উত্তরে তিনি বলেছিলেন, স্থলে আগুন লাগলে তা নিভানো যায়। কিন্তু জলে আগুন লাগলে তা নিভানো কি সম্ভব? অর্থাৎ আলীবর্দী উপলব্দি করেছিলেন যে ইংরেজদের নৌশক্তি প্রতিহত করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্যই আলীবর্দী খান ইংরেজদের প্রতি সতর্কমূলক বন্ধুত্ব নীতি অনুসরণ করেছিলেন। ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে আলীবর্দী খানের মৃত্যু হয়।

 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, আলীবর্দী খান ছিলেন একজন সুযোগ্য, সুদক্ষ ও বিচক্ষণ শাসক। স্বীয় কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতার দ্বারা তিনি বাংলাকে বর্গীদের হামলা থেকে রক্ষা করেন এবং ইংরেজদের সাথে সতর্কতামূলক মিত্রতা নীতি ও মুঘল সম্রাটের প্রতি আনুগত্য স্বীকারের মাধ্যমে স্বীয় স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখেন।