সামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব
১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর দেশে বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অরাজকতার সুযোগ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা সমগ্র দেশে প্রথমবারের মতো সামরিক আইন জারি করে শাসনতন্ত্র, জাতীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা ও মন্ত্রিপরিষদ বাতিল এবং সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই সাথে সেনাপ্রধান জেনারেল মুহম্মদ আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত করেন। প্রকৃতপক্ষে এ দিন থেকেই আইয়ুব খান রাষ্ট্রীয় নির্দেশকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি ২৭ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট মীর্জাকে উৎখাত করে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করেন। ২৮ অক্টোবর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করে নিজেই একাধারে দেশের প্রেসিডেন্ট, সেনাপ্রধান ও প্রধান সামরিক
আইন প্রশাসক হয়ে দেশ চালাতে থাকেন। পাকিস্তানের সামরিক শাসনের প্রকৃতিকে খালিদ বিন সাইয়িদ বেসামরিক প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর এক ‘যৌথ কারবার বলে আখ্যায়িত করেছেন। বস্তুত এ ‘যৌথ কারবার’ চরম উৎকর্ষতা লাভ করে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে। যদিও আইয়ুব খান এ সামরিক অভ্যুত্থানকে ‘বিপ্লব’ বলে মনে করতেন এবং তাঁর মতে এ পরিবর্তন ও সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি ভিত্তি প্রস্তুত করা, যার মাধ্যমে তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত সুস্থ রাজনৈতিক ধারার উন্নয়ন ঘটতে পারে।