শরৎচন্দ্র বসুর ছয় দফা

শরৎচন্দ্র বসুর ছয় দফা

(প্রাদেশিক মুসলিম লীগের অখণ্ড বাংলা গঠনের উদ্যোগের প্রতি বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের প্রধান সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, কংগ্রেস সংসদীয় দলের কিরণ শঙ্কর রায় এবং ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ভ্রাতা শরৎচন্দ্র বসু আশানুরূপ সাড়া দেন। উদার ও অসম্প্রদায়িক নেতা শরৎত্বসু অখণ্ড বাংলার সপক্ষে ১৯৪৭ সালের ১২

 

মে ছয় দফা তুলে ধরেন। এগুলো হলো:

বাংলা হবে একটি সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।

সংবিধান রচনার পর প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটে যৌথ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলার আইন পরিষদ গঠিত হবে।

এ আইন পরিষদই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যে, অবশিষ্ট ভারতের সাথে বাংলার সম্পর্ক কেমন হবে।

 

বাংলায় বর্তমানে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ মন্ত্রিপরিষদ বিলুপ্ত করা হবে এবং তদস্থলে একটি সর্বদলীয় মধ্যবর্তী মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হবে।

বাঙালি দ্বারাই বাংলার পাবলিক সার্ভিস গঠিত হবে। যেখানে হিন্দু ও মুসলমানের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে এবং

 

১৬ সংবিধান রচনার জন্য ৬১ সদস্যবিশিষ্ট একটি অস্থায়ী গণপরিষদ গঠিত হবে। যার ৩১ জন মুসলমান এবং ৩০ জন অমুসলমান সদস্য থাকবে।

 

 

 

১৯৪৭ সালের ১২ থেকে ২০ মে পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী ও শরৎবাবুর প্রস্তাব সমূহ নিয়ে বাঙালি হিন্দু-মুসলিম নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে শরৎচন্দ্র বসুর কলকাতাস্থ বাসভবনে অবিভক্ত ও স্বাধীন বাংলার সমর্থক উভয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ঐকমত্যে পৌছে একটি চুক্তি প্রণয়ন করেন যা বসু- সোহরাওয়ার্দী ফর্মূলা হিসেবেও খ্যাত ছিল। এ চুক্তিপত্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল: বাংলা একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হবে এবং ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে এ রাষ্ট্রে সম্পর্ক কেমন হবে তা সে নিজেই ঠিক করবে।

 

হিন্দু ও মুসলমানদের সংখ্যানুপাতে আসন সংরক্ষিত থাকবে। স্বাধীন ও অখণ্ড বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব ব্রিটিশ সরকার গ্রহণ করে ঘোষণা করবে, বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ব্যতীরেকে বাকিপদে সমসংখ্যক হিন্দু ও মুসলিম সদস্য নিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হবেন মুসলমান সম্প্রদায় থেকে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন হিন্দু সম্প্রদায় থেকে সকল চাকরিতে বাঙালি হিন্দু-মুসলমানদের সমান অংশ নিযুক্ত হবে এবং বঙ্গীয় আইনসভা ১৬ জন মুসলমান ও ১৪ জন হিন্দু সদস্য নিয়ে মোট ৩০ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংবিধান পরিষদ গঠন করবে