স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব

স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব

১৯৪৭ সালের ২২ মার্চ লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতের ভাইসরয় নিযুক্ত হয়েই এখানকার কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে মতানৈক্য, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক সংকট পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরে মনোনিবেশ করেন। কিন্তু এসময় কংগ্রেস অখণ্ড ভারত রক্ষার চেষ্টা করলেও মুসলিম লীগ পাকিস্তান দাবিতে অটল থাকে। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস মুসলিম লীগের দাবি অনুসারে ভারত বিভাগে রাজি হলেও শর্ত হিসেবে বাংলা ও পাঞ্জাবকে হিন্দু-মুসলমান অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে বিভক্ত করার দাবি জানায়। ফলে এখান থেকে নতুন ধরনের রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়, যার প্রভাব বাংলার উপরও পড়ে। কারণ বঙ্গ ভঙ্গ রদের জন্য যে হিন্দু নেতৃবৃন্দ দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলন চালিয়েছিল, তারাই সময়ের ব্যবধানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে গিয়ে এ সময় বাংলাকে বিভক্ত করার আন্দোলনে শামিল হয়। বাংলায় এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন হিন্দু মহাসভা নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী। বাংলার এমনই জাতীয় জীবনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৪৭ সালের ২৭ এপ্রিল দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অখণ্ড স্বাধীন বাংলা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এ পরিকল্পনায় বলা হয়, বাংলায় একজন মুসলমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হবে যার সদস্যদের ৫০% মুসলমান এবং বাকি ৫০% অমুসলমান থাকবেন। এরপর প্রাপ্তবয়স্কদের সরাসরি ভোটে পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ পরিষদই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যে, বাংলা স্বাধীন সার্বভৌম থাকবে, না পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হবে।