কুরবানী কার উপর ফরজ | কুরবানীর পশু কেমন হতে হবে?

 

 

 

 

 

 

কুরবানী কার উপর ফরজ এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল মুসল্লিদের মধ্যে একটি বিভ্রান্তি কাজ করেন। তাই আজ আমরা আপনাদের জন্য কুরবানী কার উপর ফরজ এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য এসেছি, যাতে করে আপনারা কুরবানি দেয়ার পূর্বে কোরবান এর সকল খুঁটিনাটি বিষয়বস্তু গুলো জেনে নিতে পারেন। তবে একজন মুসলমান হিসেবে কুরবানী দেয়ার পূর্বে অবশ্যই কোরবানির সকল খুঁটিনাটি বিষয়গুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক।

 

 

 

 

 

 

 

যখন কোন মুসলমান ব্যক্তির মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদাত পালন করেন তখন অবশ্যই সেই ইবাদতের নিয়ম এবং ইবাদাতের করার ফলে মহান আল্লাহতালা তার বান্দার প্রতি কিভাবে সন্তুষ্ট হবেন তার সকল বিষয়গুলো জেনে নিতে হয়। নতুবা শুধু শুধু কষ্ট করে ইবাদাত করা হবে কিন্তু তার কোন পুরস্কার পাওয়া যাবে না। ফলে সেই ইবাদাত আর ইবাদাত থাকবে না হয়ে যাবে কাজ। আমরা সকলেই জানি যে কোরবানি দেয়া হচ্ছে এবাদতের অংশ তাই অবশ্যই এই এবাদত করার পূর্বে আমাদের কুরবানী সম্পর্কে জেনে নিতে হবে এবং কুরবানী কার উপর ফরজ অবশ্যই জেনে নিতে হবে। তাহলে চলুন আমরা এবার জেনে নেই কুরবানী কার উপর ফরজ সম্পর্কে।

 

 

 

 

 

 

কুরবানী কার উপর ফরজ

মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের জন্য মুসল্লীরা কোরবানি দিয়ে থাকেন এবং এটি একটি আর্থিক এবং আর্থিক ইবাদতের অংশ। যদি কোন মুসল্লির পরিমাণ সম্পদের মালিক হন তাহলে অবশ্যই সেই বোতলের কোরবানি দেয়া আবশ্যক।

 

 

 

 

 

 

ইসলামিক ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) তার প্রানপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)- কে মহান আল্লাহতালার নির্দেশে কোরবানি দেয়ার জন্য প্রস্তুত নিয়েছিলেন এবং তিনি মহান আল্লাহতালার নির্দেশে তার ছেলেকে কোরবানি দেয়ার জন্য তার গলায় ছুরি চালিয়েছেন। তখন মহান আল্লাহ পাকের আদেশ পালন এবং সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পিতা এবং পুত্রের আত্মত্যাগ মহান আল্লাহতালা খুশি হয়ে যান এবং আল্লাহর কুদরত শিশুপুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়ে যায়।

 

মহান আল্লাহতালার নির্দেশে হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তার প্রানপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ) এর ধৈর্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এই অনন্য ত্যাগের মহিমা স্মরণ করে রাখার জন্য পবিত্র ঈদুল আযহার দিন পশু কোরবানির মাধ্যমে তা পালন করা হয়।

 

যে মুসলমান ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে সে মুসলমান ব্যক্তির ওপর পশু কোরবানি দেয়া ওয়াজিব। আরে ইবাদত পালন করার মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করাই হচ্ছে সেই মুসলমান ব্যক্তির মূল উদ্দেশ্য। কুরবানী কার উপর ফরজ? এ বিষয়টি সম্পর্কে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন-

 

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অর্থাৎ যে ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ রয়েছে সে যেন কোরবানি করে। এবং তিনি সামর্থের ব্যাপারটি বিস্তারিতভাবে জানাননি। এবং তিনি আরো বলেছেন কোরবানি করা ফরয না কিন্তু কোরবানি দেয়া ওয়াজিব জানিয়েছেন”।

 

সুতরাং কুরবানী কার উপর ফরজ এবিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে না জড়িয়ে আপনাদের উচিত হাদিস এবং ইসলামিক স্কলারদের মতামত অনুসারে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে অবশ্যই মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দেয়া।

 

কোরবানি সুন্নাত না ওয়াজিব

ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গিয়েছেন যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ঈদুল আযহার পশু কোরবানি দিতে হয়। কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোরবানি দেয়া হচ্ছে ওয়াজিব কিন্তু কোরবানি দেয়া ফরজ না সুন্নত নয়।

 

কোরবানি দেয়া হয় সম্পূর্ণ মহান আল্লাহতালার নির্দেশে এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তাই একজন মুসলমান ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আমাদের ভাবা উচিত মহান আল্লাহতালার নির্দেশের কথা এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা। এবং সেইসাথে কোরবানি দেয়া ওয়াজিব নাকি সুন্নত নাকি ফরজ এই বিষয়ে বিভ্রান্তিতে না ভুগে শুধুমাত্র মহান আল্লাহতালার নির্দেশ অনুসারে পশু কোরবানি দেয়া উচিত। যেহেতু হাদীস শরীফে সুস্পষ্টভাবে কোথাও জানিয়ে দেয়া হয়নি যে কুরবানী দেয়া ফরজ কিন্তু মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন কোরবানি দেয়া ওয়াজিব।

 

সুতরাং কোরবানি ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে।

 

 

 

 

 

 

কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে?

কোরবানি যেহেতু আতিক এবং আর্থিক ইবাদতের অংশ সেহেতু কুরবানি দেয়ার জন্য কত টাকা প্রয়োজন অথবা কত টাকা থাকলে কোরবানি দিতে হবে এ সম্পর্কিত প্রশ্ন আপনাদের মনে আসতেই পারে এটাই স্বাভাবিক। অর্থপূর্ণ এই সাধারন প্রশ্নটি অবশ্যই উচিত। যদি সাধারণভাবে বলি তাহলে এখনি স্টুডিওতে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ বা নির্ধারিত পরিমাণ অর্থের মালিকের কোরবানি দেয়া আবশ্যক। কিন্তু এখানে একটি প্রশ্ন আছে যে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদ বা অর্থ বলতে কি বুঝিয়েছেন?

 

আমরা সকলেই জানি যে মুসল্লিদের অন্যতম একটি ইবাদতের অংশ হচ্ছে যাকাত প্রদান করা। যাকাত প্রদান করার জন্য অবশ্যই নিসাব পরিমাণ সম্পদের বা অর্থের মালিক হতে হয় ঠিক তেমনি কুরবানী দেয়ার পূর্বে অবশ্যই নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের বা অর্থের মালিক হতে হবে।

 

 

 

 

 

 

তবে আমরা আপনাদেরকে কুরবানী দেয়ার নির্ধারিত পর যে পরিমাণ অর্থ বা সম্পদের মালিক হতে হয় এসম্পর্কিত যে তথ্যটি দিব অবশ্যই সে তথ্যগুলো কোরআন হাদিস এবং ইসলামিক স্কলারদের থেকে পাওয়া।

 

কোন মুসলমান ব্যক্তির পরিবারের সমস্ত খরচ মেটানোর পর যদি জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখ এ নির্ধারিত পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপা থাকে এবং সেই স্বর্ণ এবং রুপার বর্তমান বাজারদর অনুসারে ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি দেয়া আবশ্যক হয়ে যাবে। অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখ কোরবানির পশু জবেহ করা হয় আর এই সময় যদি কোন মুসল্লির নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে অবশ্যই সেই ব্যক্তির উপর কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায়।

 

নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝায়- যদি কারো সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ অথব ৫২ তোলা রুপা অথবা তার অমূল্য সম্পদ থাকে তাহলে অন্যদের ওপর এক বছরের মালিকানা হওয়ার পর ওই ব্যক্তির উপর কুরবানী হবে।

 

কিন্তু এই সম্পদের কি পরিমাণ অর্থ কোরবানির জন্য ব্যয় করা হবে তার একটি হিসাব আপনাদেরকে বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে নিম্নে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে-

 

যদি কোন ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি/ তোলা স্বর্ণের থাকে অথবা ৫০ তোলা রুপা থাকে তাহলে এর বর্তমান বাজার মূল্য অনুসারে যদি সেই স্বর্ণ অথবা রুপার মূল্য ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কোরবানি আবশ্যক হবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

২০২২ সাল অনুসারে প্রত্যেক ক্যারেটের স্বর্ণের মূল্য নিম্নের একটি টেবিল এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো-

 

২২ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৭২ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।

২১ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৬৯ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৫ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা।

১৮ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ভরি ৬০ হাজার টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

সনাতন পদ্ধতি অনুসারে স্বর্ণের প্রতি ভরি ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণের দাম হবে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা।

২০২২ সাল অনুসারে প্রত্যেক ক্যারেটের রুপার মূল্য নিম্নের একটি টেবিল এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো-

 

২২ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ৫১৬ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৭৯ হাজার ৫৯০ টাকা।

২১ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ৪৩৫টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৭৫ হাজার ৩৩৭ টাকা।

১৮ ক্যারেট রুপার প্রতি ভরি ১ হাজার ২২৫ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৬৪ হাজার ৩১২ টাকা।

সনাতন পদ্ধতি অনুসারে রুপার প্রতি ভরি ৯৩৩ টাকা হলে নিসাব পরিমাণ অর্থাৎ সাড়ে ৫২ ভরি রুপার দাম হবে ৪৮ হাজার ৯৮২ টাকা।

বিঃ দ্রঃ অবশ্যই আপনার নিসাব পরিমাণ সম্পদের বর্তমান বাজারমূল্য যাচাই করে নিয়ে সেই অনুসারে কোরবানি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং যদি কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই কোরবানি দিতে হবে।

 

কুরবানীর পশু কেমন হতে হবে?

যে ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক সে ব্যক্তি কে অবশ্যই কোরবানি দিতে হবে। আর এই কুরবানী দেয়ার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট পশু বাছাই করতে হবে। তাই আপনারা যাতে কোরবানি দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পশু বাছাই করতে পারেন তার জন্য কোরবানির পশু কেমন হতে হবে তা সম্পর্কিত কিছু মাসআলা আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো-

 

 

 

 

 

 

 

১ নম্বর মাসআলা:

 

কোরবানির পশু হবে না। যদিও বন্য গরু, নীলগাই, গোয়াল এবং হরিণের মাংস হালাল কিন্তু যেহেতু এ রাবনে বসবাস করে সেহেতু এ ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি করা বৈধ হবে না। তাই এ ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া যাবে না। ( বাদায়েউস সানায়ে ৫/৬৯)।

 

২ নম্বর মাসআলা:

 

কুরবানি দেয়ার জন্য মূলত ছয় ধরনের পশু ব্যবহার করা যায়। যেমনঃ গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, উট এবং দুম্বা। এছাড়া কোন কোন পশু দিয়ে কোরবানি দেয়া সহি হবে না। ( ফতোয়ায়ে কাজী খান ৩/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫; আল হিদায়া ৪/১৫০)।

 

৩ নম্বর মাসআলা:

 

গরু এবং মহিষ কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে গরু-মহিষের বয়স কমপক্ষে ২ বছর হতে হবে এবং এর কম হলে কোরবানি দেয়া জায়েজ হবে না। (সুনানে নাসায়ী ৪৩৭৮ হাদীস; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫)।

 

৪ নম্বর মাসআলা:

 

ছাগল, ভেড়া এবং দুম্বা কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের কমপক্ষে এক বছর হতে হবে এবং তাদের বয়স যদি এক বছরের কম হয় তাহলে তাদের কোরবানি দেয়া জাহেদ হবে না। (সুনানে আবু দাউদ ২৭৯৯; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৩৯ ; ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৪৮)।

 

৫ নম্বর মাসআলা:

 

উট কুরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই উট এর বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। এরকম হলে উট কোরবানি দেয়া জায়েজ হবে না। (ইলাউস সুনান ৭/২৪৫; ফতোয়ায়ে কাযীখান ৩/৩৪৮)।

 

৬ নম্বর মাসআলা:

 

কুরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে যে ৬ টি পশু নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এই পশুগুলো অবশ্যই সুস্থ সবল এবং নির্ধারিত বয়সের হতে হবে। কুরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে কোন অসুস্থ নির্ধারণ করা যাবে না এবং এই পশুগুলোর যদি কোনো খুঁত থেকে থাকে তাহলে সেই পশু গুলো নির্ধারণ করা যাবে না। (শামী ৬/৩২৩; আল বাহরুর রায়িক ৮/৩২৪; কাজী খান কাজীখান ৩/৩৫২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৫)।

 

 

 

 

 

 

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি কুরবানী

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কুরবানী দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই জেনে নিতে হবে ওই ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ কি পরিমাণ রয়েছে তার উপর নির্ধারণ করা হবে।

 

যদি কোন ব্যক্তি কুরবানি দেয়ার সময় ঋণ পরিশোধ করে দিলে ওই ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির উপর কোরবানি দেয়া ওয়াজিব হবে না। আর যদি ওই ব্যক্তির কোরবানির সময় নির্দিষ্ট ঋণ পরিশোধ করার পর নিসাব পরিমাণ অর্থ থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির উপর কোরবানি দেয়া আবশ্যক এবং ওয়াজিব হবে।

 

তবে যদি কোন মুসলমান ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে এবং তার সামান্য কিছু ঋণ রয়েছে যা ঋণ পরিশোধ করার ফলে এই নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি দেয়া আবশ্যক হয়ে যাবে।

 

সুতরাং এখানে এক কথায় বুঝা যায় যে যদি কোন ব্যক্তির এমন ঋণ থাকে যা নিসাব পরিমাণ সম্পদ কে প্রভাবিত করে তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য কোরবানি দেয়া ওয়াজিব হবে না আর যদি ওই ব্যক্তির নিসাব পরিমাণ সম্পদ কে কোন প্রভাব না করে তাহলে অবশ্যই ব্যক্তিকে কোরবানি দিতে হবে।

 

উপসংহারঃ যে সকল মুসলিম ভাই ও বোনেরা কুরবানী কার উপর ফরজ ২০২২ বিষয়টি জানতে চেয়েছেন আশা করছি তারা সঠিক উত্তর পেয়ে গিয়েছেন এবং জানতে পেরেছেন যে কোরবানি দিতে হয় মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এবং এই এবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়াও আমরা কোরবানির অন্যান্য কিছু বিষয়ে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি। আপনারা যদি আমাদের কাছ থেকে কুরবানী সম্পর্কে আরো অন্যান্য তথ্য জানতে চান তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান।