অনুপাত একটি ভগ্নাংশ, এর কোনো একক নেই। ‘:’ চিহ্নটি অনুপাতের গাণিতিক প্রতীক। যেমন, ১২ : ১৯।
দুইটি রাশি p ও q এর অনুপাতকে p : q = p/q লিখা হয়। p ও q রাশি দুইটি সমজাতীয় ও একই এককে প্রকাশিত হতে হবে। অনুপাতে p কে পূর্ব রাশি এবং q কে উত্তর রাশি বলা হয়।
অনেক সময় আনুমানিক পরিমাপ করতেও আমরা অনুপাত ব্যবহার করি। যেমন, সকাল 8 টায় রাস্তায় যে সংখ্যক গাড়ী থাকে, 10 টায় তার দ্বিগুণ গাড়ী থাকে। এ ক্ষেত্রে অনুপাত নির্ণয়ে গাড়ীর প্রকৃত সংখ্যা জানার প্রয়োজন হয় না। আবার অনেক সময় আমরা বলে থাকি, তোমার ঘরের আয়তন আমার ঘরের আয়তনের তিনগুণ হবে। এখানেও ঘরের সঠিক আয়তন জানার প্রয়োজন হয় না। বাস্তব জীবনে এরকম অনেক ক্ষেত্রে আমরা অনুপাতের ধারণা ব্যবহার করে থাকি।
অনুপাতের বৈশিষ্ট্য
১) অনুপাত হলো ভাগের সংক্ষিপ্ত রূপ।
২) অনুপাত লেখার সময় রাশিগুলিকে এককে প্রকাশ করতে হয়।
৩) যদি কোনো অনুপাত এর দুটি রাশিকে 0 ছাড়া অন্য কোনো একই সংখ্যা দিয়ে গুণ বা ভাগ করলে অনুপাতের মানের কোনো পরিবর্তন হয় না।
৪) অনুপাত একটি শুদ্ধ সংখ্যা যার কোনো একক নেই।
৫) ভিন্ন জাতীয় দুটি রাশির অনুপাত গঠন করা সম্ভব নয়।
অনুপাত পড়া ও লেখার নিয়ম
i) 3:5 = তিন অনুপাত পাঁচ
=Three is to five
3:5=3/5=3÷5
এই অনুপাত হল ভাগের সংক্ষিপ্ত রূপ।
2) অনুপাত লেখার সময় রাশি গুলিকে একই এককে প্রকাশ করতে হয়।
3) যদি কোনো অনুপাত এর দুটি রাশিকে 0 ছাড়া অন্য কোনো একই সংখ্যা দিয়ে গুণ বা ভাগ করলে অনুপাতের মানের কোনো পরিবর্তন হয় না।
4) অনুপাত একটি শুদ্ধ সংখ্যা যার কোনো একক নেই।
5) ভিন্ন জাতীয় দুটি রাশির অনুপাত গঠন করা সম্ভব নয়।
অনুপাতের প্রকারভেদ (Types Ratio)
অনুপাত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ–
১। সরল অনুপাত : কোনো অনুপাতে দুইটি রাশি থাকলে তাকে সরল অনুপাত বলে। সরল অনুপাতের প্রথম রাশিকে পূর্ব রাশি এবং দ্বিতীয় রাশিকে উত্তর রাশি বলে। যেমন, ৩ : ৫ একটি সরল অনুপাত, এখানে ৩ হলো পূর্ব রাশি ও ৫ হলো উত্তর রাশি।
২। মিশ্র বা যৌগিক অনুপাত : একাধিক সরল অনুপাতের পূর্ব রাশিগুলোর গুণফলকে পূর্ব রাশি এবং উত্তর রাশিগুলোর গুণফলকে উত্তর রাশি ধরে প্রাপ্ত অনুপাতকে মিশ্র বা যৌগিক অনুপাত বলে। যেমন, ২ : ৩ এবং ৫ : ৭ সরল অনুপাতগুলোর মিশ্র অনুপাত হলো (২ × ৫) : (৩ ×) = ১০ : ২১।
৩। ধারাবাহিক অনুপাত : দুটি অনুপাতের মধ্যে প্রথম অনুপাতের উত্তর রাশি ও দ্বিতীয় অনুপাতের পূর্ব রাশি পরস্পর সমান হলে, তাকে ধারাবাহিক অনুপাত বলে। যেমন, ১ : ৩ ও ৩ : ৫ দুইটি অনুপাত হলে, এদের ধারাবাহিক অনুপাত হবে ১ : ৩ : ৫।
৪। বহুরাশিক অনুপাত : তিন বা ততোধিক রাশির অনুপাতকে বহুরাশিক অনুপাত বলে।
৫। গুরু অনুপাত : কোনো সরল অনুপাতের পূর্ব রাশি, উত্তর রাশি থেকে বড় হলে, তাকে গুরু অনুপাত বলে। যেমন, ৫ : ৩, ৭ : ৪, ৬ : ৫ ইত্যাদি গুরু অনুপাতের উদাহরণ।
৬। লঘু অনুপাত : কোনো সরল অনুপাতের পূর্ব রাশি, উত্তর রাশি থেকে ছোট হলে, তাকে লঘু অনুপাত বলে। যেমন, ৩ : ৫, ৪ : ৭ ইত্যাদি লঘু অনুপাতের উদাহরণ।
৭। একক অনুপাত : যে সরল অনুপাতের পূর্ব রাশি ও উত্তর রাশি সমান সে অনুপাতকে একক অনুপাত বলে। যেমন, আসিফ ১৫ টাকা দিয়ে একটি বলপেন ও ১৫ টাকা দিয়ে একটি খাতা কিনল। এখানে বলপেন ও খাতা উভয়টির মূল্য সমান এবং মূল্যের অনুপাত ১৫ : ১৫ বা ১ : ১। অতএব, এটি একক অনুপাত।
৮। ব্যস্ত অনুপাত : কোনো সরল অনুপাতের পূর্ব রাশিকে উত্তর রাশি এবং উত্তর রাশিকে পূর্ব রাশি করে প্রাপ্ত অনুপাতকে পূর্বের অনুপাতের ব্যস্ত অনুপাত বলে। যেমন, ১৩ : ৫ এর ব্যস্ত অনুপাত ৫ : ১৩।