পলিমারের ধর্ম হলো প্লাস্টিসিটি। ‘প্লাস্টিক’ শব্দ দ্বারা সে সব কঠিন বস্তুকে বােঝায়, যাদের আকার বল প্রয়ােগে বিকৃত করার পর সেই আকারে থাকে, পূর্বের আকারে ফিরে যায় না। তুলনামূলকভাবে ইলাস্টিক (elastic) শব্দ দ্বারা সে সব কঠিন বস্তুকে বােঝায়, যাদের আকার বল প্রয়ােগে বিকৃত করার পরও ঐ বিকৃত আকার প্রয়ােগকৃত বল অপসারণের পর পূর্বের আকার লাভ করে।
অনেক কঠিন পলিমারকে উত্তপ্ত করে লম্বা করা যায়, বাকানাে যায়, মােছড়ানাে যায়। কিন্তু শীতল করলে সেই বিকৃত অবস্থায় থেকে যায়। এরূপে প্লাস্টিক পলিমার থেকে বিভিন্ন আকৃতির ব্যবহারের জিনিস যেমন শিশুর দুধের বােতল, গাড়ির বিভিন্ন অংশ ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
আবার পলিমার শিকলে শাখা বৃদ্ধি পেলে পলিমার শিকল ঘনিষ্ঠভাবে বিন্যস্ত হতে পারে না এবং কেলাস আকৃতিও ঘটে না। তখন ঘনত্বও কমে যায়। শাখা শিকলের মাধ্যমে বিভিন্ন শিকল যুক্ত হয়ে ক্রসলিংক জটিল পলিমার গঠন করে যেমন ব্যাকেলাইট, মেলামাইন পলিমার। এরূপ ক্রস-লিংকের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে প্লাস্টিকের ধর্মে পার্থক্য ঘটে। ক্রসলিংক কম থাকলে থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার অবস্থা লাভ করে।
এ অবস্থায় উচ্চ তাপমাত্রায় গলিত তরলে প্রবাহ ধর্ম থাকে। যদি ক্ৰসলিংক বেশি ঘটে, তখন থার্মোসেট-প্লাস্টিক হয় পলিমারে পরিণত হয়। এ অবস্থায় উচ্চ তাপমাত্রায় তরলের প্রবাহ ধর্ম থাকে, কারণ পলিমারটি একক জালিকা-বিন্যাস লাভ করে। থার্মােসেট পলিমারগুলো এদের গ্লাস অবস্থান্তর তাপমাত্রা’, Tg এর নিচে অত্যন্ত দৃঢ় (rigid) ও মজবুত (strong) হয়।
উভয় শ্রেণির বৈশিষ্ট্য হলাে থার্মো-প্লাস্টিকগুলো তাপ প্রয়ােগে নরম ও গলে যায় এবং শীতল করলে পুনরায় পূর্বের মতো কঠিন হয়। এই প্রক্রিয়া একের পর এক করা যায়। এরা গঠনে সরল শিকল পলিমার। যেমন, পলিথিন, পলিস্টারিন প্লাস্টিক। আবার থার্মোসেট প্লাস্টিকগুলাে প্রস্তুতকালে প্রথমবারের মতাে তরল থেকে শীতল করে কঠিন করা যায়। পুনরায় গলানো যায় না।
এরা গঠনে ক্রস-লিংক জটিল পলিমার। যেমন, ব্যাকলাইট, মেলামাইন পলিমার ইত্যাদি। বিদ্যুৎ ও তাপ অপরিবাহী বস্তুরূপে এরা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ফিটিংস ও সসপ্যানের হাতল তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। আবার অনেক ‘থার্মোসেট’ গ্লাস-অবস্থান্তর তাপমাত্রা, Tg এর চেয়ে ঊর্ধ্ব তাপমাত্রায় ‘ইলাস্টোমার’ প্লাস্টিকে রূপান্তরিত হয়। যা ইলাস্টিকের মতো ধর্ম লাভ করে। যেমন রাবার ব্যান্ড।