মাল্টি প্রসেসিং সিস্টেম বা অপারেটিং সিস্টেম কি? এর প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা ও অসুবিধা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

মাল্টিপ্রসেসিং বলতে দুই বা ততোধিক নির্দেশনা সমান্তরালভাবে দুই বা ততোধিক কেন্দ্রীয় প্রসেসর বা সিপিইউ কর্তক পরিচালিত হওয়া বুঝায়। এসব সিপিইউ একই সময়ে কোন প্রোগ্রামের আলাদা আলাদা নির্দেশ পালন করে কিংবা সম্পূর্ণভাবে আলাদা আলাদা প্রোগ্রামও নির্বাহ করতে পারে। মাল্টিপ্রোগ্রামিং সিস্টেমের সাথে মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেমের মূল পার্থক্য হলো মাল্টিপ্রোগ্রামিং-এ একটিমাত্র প্রসেসর ব্যবহৃত হয়, আর মাল্টিপ্রসেসিং-এ একাধিক প্রসেসর ব্যবহৃত হয়।

মিনি এবং মেইনফ্রেম কম্পিউটারে মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। মাল্টিপ্রসেসিং পদ্ধতিতে কাজের গতি অত্যন্ত দ্রুত হয়। এ পদ্ধতিতে একাধিক প্রসেসর ব্যবহৃত হয় বলে এর উপর বেশি নির্ভরশীল হওয়া যায়, কারণ একটি প্রসেসর খারাপ হয়ে গেলেও কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে যায় না। শুধু কাজের গতি কমে আসে। মহাকাশযান, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কলকারখানা এসব ক্ষেত্রে মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেমকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. সুসম মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম (Symmetric multiprocessing system)

২. অসম মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম (Asymmetric multiprocessing system)।

সুসম মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম (Symmetric Multi Processing system)
সাধারণত এ সিস্টেমটি বেশি ব্যবহৃত হয় যেখানে একাধিক প্রসেসর থাকে এবং প্রত্যেকটি প্রসেসরে আলাদা আলাদা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। এসকল অপারেটিং সিস্টেম প্রয়োজনে প্রত্যেকে প্রত্যেকের সাথে যোগাযোগ করে। এ জাতীয় মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেমকে ডিভাইস বণ্টনের দিক থেকে চারভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
ক) সমজাতীয় মাল্টিপ্রসেসর
খ) অসমজাতীয় মাল্টিপ্রসেসর
গ) এ্যারে প্রসেসর
ঘ) পাইপলাইন প্রসেসর
অসম মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেম (Asymmetric multiprocessing system)
অসম মাল্টিপ্রসেসিং সিস্টেমে একটিমাত্র অপারেটিং সিস্টেম থাকে এবং প্রত্যেকটি প্রসেসর একটি নিদিষ্ট কার্য সম্পাদন করে থাকে। একটি প্রধান প্রসেসর পুরো সিস্টেমটিকে কন্ট্রোল করে থাকে এবং অন্যান্য প্রসেসরগুলো মাস্টার প্রসেসরের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করে এবং সে মতো কাজ করে।
মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যঃ
১. একসাথে একাধিক প্রোগ্রাম প্রসেস করতে পারে।
২. একটি প্রসেসর কাজ করতে না পারলে অন্য প্রসেসর কাজ চালিয়ে নিতে পারে।
৩. কোন প্রসেসর খালি হলে অলসভাবে না বসে থেকে বাকি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত কাজকে প্রসেস করে থাকে।
৪. বিভিন্ন প্রসেসরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কন্ট্রোল প্রসেসর থাকে।
৫. কাজের গতি অত্যন্ত দ্রুত হয়।
৬. একটি প্রসেসর খারাপ হয়ে গেলেও কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে যায় না।
৭. সিস্টেম তৈরি বেশ জটিল ও ব্যয়বহুল।
মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেমের সুবিধাঃ
  • এ সিস্টেমে একাধিক প্রসেসর দ্বারা প্রসেসিং হয় বলে কাজের গতি দ্রুত হয়।
  • কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি।
  • সিপিইউ কখনো অলস বসে থাকে না।
মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেমের অসুবিধাঃ
  • এ সিস্টেম খুব ব্যয়বহুল।
  • বড় মেমোরির প্রয়োজন হয়।
  • এ প্রক্রিয়া প্রসেসরের উপর নির্ভরশীল।

মাল্টিপ্রসেসিং ও মাল্টিপ্রোগামিং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য কি?

মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম

১. এ সিস্টেমে দুই বা ততোধিক প্রসেসর ব্যবহৃত হয়।

২. অধিক ব্যয়বহুল।

৩. কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি।

৪. কাজের গতি দ্রুত হয়।

৫. কাজের সিস্টেম অপেক্ষাকৃত সহজ।

৬. এ প্রক্রিয়া প্রসেসরের উপর নির্ভরশীল।

উদাহরণঃ ইউনিক্স, লিনাক্স, উইন্ডোজ এনটি ইত্যাদি।

মাল্টিপ্রোগামিং অপারেটিং সিস্টেমে

১. মাল্টিপ্রোগামিং-এ একটিমাত্র প্রসেসর ব্যবহৃত হয়।

২. কম ব্যয়বহুল।

৩. কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা কম।

৪. কাজের গতি তুলনামূলক কম দ্রুত হয়।

৫. কাজের সিস্টেম অপেক্ষাকৃত জটিল।

৬. এ প্রক্রিয়া ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল নয়।

উদাহরণঃ উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ ৯৮, ম্যাকওএস।