প্রশ্ন-১. বল কাকে বলে?
উত্তর : যা স্থির বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করতে চায় বা যা গতিশীল বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায় তাকে বল বলে।
প্রশ্ন-২. বলের মাত্রা কি?
উত্তর : বলের মাত্রা হচ্ছে [MLT-2]
প্রশ্ন-৩. বলের একক কি?
উত্তর : বলের একক হচ্ছে kgms-2 বা Newton।
প্রশ্ন-৪. বলের প্রকৃতি কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : বলের প্রকৃতি দুই প্রকার। যথা- ১. স্পর্শ বল ও ২. অস্পর্শ বল।
প্রশ্ন-৫. স্পর্শ বল কাকে বলে?
উত্তর : যে বল সৃষ্টির জন্য দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়োজন তাকে স্পর্শ বল বলে।
প্রশ্ন-৬. অস্পর্শ বল কাকে বলে?
উত্তর : দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ছাড়াই যে বল ক্রিয়া করে তাকে অস্পর্শ বল বলে।
প্রশ্ন-৭. বল কীভাবে পরিমাপ করা হয়?
উত্তর : বস্তুর ভর ও ত্বরণের গুণফল দ্বারা পরিমাপ করা হয়।
প্রশ্ন-৮. সাম্য বল কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুর ওপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি বলের লব্ধি শূন্য হয় অর্থাৎ বস্তুটি সাম্যাবস্থায় থাকে, তবে ঐই বলগুলোকে সাম্য বল বলে।
প্রশ্ন-৯. বল ধ্রুবক কি?
উত্তর : কোনো স্প্রিং-কে এর সাম্যাবস্থান হতে একক পরিমাণ সংকুচিত বা প্রসারিত করতে বা যেকোনো সরল ছন্দিত গতিসম্পন্ন বস্তু এর সাম্যাবস্থান হতে একক সরণ লাভ করলে এর ওপর যে প্রত্যয়নী বল প্রযুক্ত হয় তাকে বল ধ্রুবক বলে।
প্রশ্ন-১০. কাজহীন বল কাকে বলে?
উত্তর : কোনো সচল বস্তুর সরণের লম্ব দিকে এক বা একাধিক বল বস্তুটির উপর ক্রিয়া করতে পারে। এই বলগুলোর অভিমুখ সরণের অভিমুখের সাথে ৯০° কোণে থাকলে বস্তুর সরণের সময় এই বলগুলো কোনো কাজ করে না। এই ধরনের বলকে কাজহীন বল বলে।
প্রশ্ন-১১. ক্ষেত্র-জনিত বল কাকে বলে?
উত্তর : দুটি বস্তু পরস্পরের সাথে সংস্পর্শে না এলেও এদের মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলগুলি ক্রিয়াশীল হতে পারে। এরূপ বলকে ক্ষেত্র বল বা ক্ষেত্র-জনিত বল (Field Force) বলে।
প্রশ্ন-১২. পরিবর্তনশীল বল কাকে বলে?
উত্তর : যে বলের মানের ও দিকের অথবা যেকোনো একটির পরিবর্তন হয় তাকে পরিবর্তনশীল বল বলে।
প্রশ্ন-১৩. সংসক্তি বল কি?
উত্তর : একই পদার্থের দুই বা ততোধিক অণুগুলোর মধ্যে যে আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে তাই হলো সংসক্তি বল।
প্রশ্ন-১৪. স্থির বল কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুর উপর বল ক্রিয়া করলে সে বল যদি মানে ও দিকে অপরিবর্তিত হয় তবে তাকে স্থির বল বলে।
প্রশ্ন-১৫. মৌলিক বল কাকে বলে?
উত্তর : যেসব বল মূল বা স্বাধীন অর্থাৎ যেসব বল অন্য বল থেকে উৎপন্ন বা অন্য কোনো বলের কোনো রূপ নয় বরং অন্যান্য বল এসব বলের কোনো না কোনো রূপের প্রকাশ তাদেরকে মৌলিক বল বলে।
প্রশ্ন-১৬. ১ নিউটন বল কাকে বলে?
উত্তর : যে পরিমাণ বল 1 kg ভরের কোনো বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে 1ms-2 ত্বরণ সৃষ্টি করে তাকে ১ নিউটন বল বলে।
প্রশ্ন-১৭. একক বল কাকে বলে?
উত্তর : একক ভরের কোন বস্তুর উপর একক ত্বরণ সৃষ্টি করতে যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে একক বল বলে।
প্রশ্ন-১৮. দুর্বল নিউক্লিয় বল কাকে বলে?
উত্তর : প্রোটন নিউট্রন অনুপাত যথাযথ না হলে নিউক্লিয়াসের অস্থিতিশীলতা বা বিটা ক্ষয়ের জন্য যে বল দায়ী তাকে দুর্বল নিউক্লিয় বল বলে।
প্রশ্ন-১৯. সবল নিউক্লিয় বল কাকে বলে?
উত্তর : যে আকর্ষণ বল প্রোটন নিউট্রন তথা নিউক্লিয় কণা বা নিউক্লিয়নগুলোকে একত্রিত করে নিউক্লিয়াস গঠন করে তাকে সবল নিউক্লিয় বল বলে।
প্রশ্ন-২০. লরেঞ্জ বল কাকে বলে?
উত্তর : কোন স্থানে একই সময়ে একটি তড়িৎক্ষেত্র ও একটি চৌম্বকক্ষেত্র বিদ্যমান থাকলে সেখানে একটি গতিশীল আধান যে লব্ধি বল অনুভব করে তাকে লরেঞ্জ বল বলে।
প্রশ্ন-২১. প্রত্যায়নী বল কাকে বলে?
উত্তর : বল প্রয়োগে কোন বস্তু বিকৃত হলে স্থিতিস্থাপকতার কারণে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে বস্তুর মধ্যে যে বল উৎপন্ন হয় তাকে প্রত্যায়নী বল বলে। এ প্রত্যায়নী বল মূলত স্থিতিস্থাপক বল।
প্রশ্ন-২২. স্থিতিস্থাপক বল কাকে বলে?
উত্তর : স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে বাইরে থেকে বল প্রয়োগে কোনো বস্তুর আকার-আকৃতির পরিবর্তন ঘটানোর পর বল অপসারণ করলে যে বলের কারণে তা আবার পূর্বের আকার আকৃতি ফিরে পায় তাকে স্থিতিস্থাপক বল বলে।
প্রশ্ন-২৩. ঘর্ষণ বল কি?
উত্তর : যখন একটি বস্তু অপর একটি তলের উপর দিয়ে চলে তখন গতির বিরুদ্ধে যে বল কাজ করে তাকে ঘর্ষণ বল বলে।
প্রশ্ন-২৪. ঘূর্ণন বল কাকে বলে?
উত্তর : স্ক্রুকে খোলার জন্য একটি মোচড় বল প্রয়োগ করলে ঘূর্ণন সৃষ্টি হয়। এরূপ বলকে ঘূর্ণন বল বলে।
প্রশ্ন-২৫. বলের অংশক কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুকণার ওপর একাধিক বল প্রযুক্ত হওয়ার ফলে যে প্রভাব পড়ে যদি কোনো একটি বল প্রয়োগ করলেও ঐ একই প্রভাব পড়ে, তবে প্রথমোক্ত একাধিক বলগুলি প্রত্যেককে পরের ঐ একটি বলের অংশক বলে।
প্রশ্ন-২৬. তাড়িত চৌম্বক বল কাকে বলে?
উত্তর : দুটি আহিত বস্তু বা কণা তাদের আধানের কারণে একে অপরের উপর যে বল প্রয়োগ করে তাকে তাড়িত চৌম্বক বল বলে।
প্রশ্ন-২৭. বলের ঘাত কি?
উত্তর : বলের ঘাত হলো বলের মান ও ক্রিয়াকালের গুণফল।
প্রশ্ন-২৮. বলের ঘাতের একক ও মাত্রা কি?
উত্তর : বলের ঘাতের একক NS বা kgms-1। এটি বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের সমান। এর মাত্রা MLT-1।
প্রশ্ন-২৯. কেন্দ্রমুখী বল কাকে বলে?
উত্তর : যে বল কোনো বস্তুকে বৃত্তাকার পথে ঘোরানোর জন্য বৃত্তাকার পথের কেন্দ্রাভিমুখে ক্রিয়া করে তাকে কেন্দ্রমুখী বল বা অভিকেন্দ্র বল বলে।
প্রশ্ন-৩০. ঘাত বল কাকে বলে?
উত্তর : অতি উচ্চমানের যে বল অল্প সময়ের জন্য ক্রিয়া করে তাকে ঘাত বল বলে। ক্রিকেট বলের ওপর ব্যাট দ্বারা আঘাত ঘাতবলের একটি উদাহরণ। বলের মান এবং ক্রিয়াকালের গুণফল দ্বারা বলের ঘাত বিবেচনা করা হয়।
প্রশ্ন-৩১. কেন্দ্রবিমুখী বল কি?
উত্তর : কেন্দ্রবিমুখী বল হচ্ছে কেন্দ্রমুখী বলের সমান ও বিপরীতমুখী। যে বল বৃত্তের কেন্দ্রের উপর ব্যাসার্ধ বরাবর কেন্দ্রের বাইরের দিকে ক্রিয়া করে তাকে কেন্দ্রবিমুখী বল বলে।
প্রশ্ন-৩২. আসঞ্জন বল কাকে বলে?
উত্তর : একটি পদার্থকে অন্য একটি পদার্থের সংস্পর্শে রাখলে পদার্থ দুটির অণুগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বল অনুভূত হয়। বিভিন্ন পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বলকে আসঞ্জন বল (Adhesive Force) বলে। যেমন – ব্লাক বোর্ডে যখন চক দিয়ে লেখা হয় তখন চক ব্লাক বোর্ডে লেগে থাকে। এক্ষেত্রে ব্লাক বোর্ড ও চকের অণুগুলোর মধ্যে যে আকর্ষণ বল, তাই আসঞ্জন বল।
প্রশ্ন-৩৩. মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র কাকে বলে?
উত্তর : যেকোনো অঞ্চলে একটি ভর রাখলে এর উপর মহাকর্ষীয় বল ক্রিয়া করে তখন এই অঞ্চলকে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র বলে।
প্রশ্ন-৩৪. বল প্রয়োগে বস্তুর কী কী ধরনের পরিবর্তন হয়?
উত্তর : বল প্রয়োগে বস্তুর যেসব পরিবর্তন হয় তা নিচে দেওয়া হলো–
- স্থির বস্তু গতিশীল হয় বা হতে চায়।
- গতিশীল বস্তু স্থির হয় বা হতে চায়।
- চলন্ত বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন হয়।
- বস্তুর আকার বা আয়তন পরিবর্তন হয়।
প্রশ্ন-৩৫. 50N বল বলতে কী বুঝ?
উত্তর : 50N বল বলতে বুঝি 1 kg ভরের কোনো বস্তুর উপর 1 N বল প্রয়োগ করলে বস্তুর সরণ বলের দিকে 50 m হয়।
প্রশ্ন-৩৬. অভিকেন্দ্র বল একটি কার্যহীন বল– ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ অভিকেন্দ্র বল সব সময় গতিপথের লম্বদিকে ক্রিয়া করায় ঐ বলের অভিমুখে বস্তুর কোনো সরণ হয় না। সুতরাং অভিকেন্দ্র বল কোনো কাজ করে না। এই কারণে অভিকেন্দ্র বলকে কার্যহীন বল (no-work force) বলে।
প্রশ্ন-৩৭. প্রযুক্ত বল ভরবেগের পরিবর্তনের সমানুপাতিক বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : প্রযুক্ত বল ভরবেগের পরিবর্তনের সমানুপাতিক বলতে আমরা বুঝি যে প্রযুক্ত বলের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে বস্তুর ভরবেগ বৃদ্ধিপায় আবার প্রযুক্ত বলের পরিমাণ হ্রাস করলে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন কমে যায়।