যে দ্রবণের ঘনমাত্রা সঠিকভাবে জানা থাকে তাকে প্রমাণ দ্রবণ (Standard Solution) বলে। অন্য কথায়, যে দ্রবণে নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব নির্দিষ্ট আয়তন দ্রবণে বা নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবকে দ্রবীভূত থাকে তাকে প্রমাণ দ্রবণ বলে। সাধারণত আয়তন মাত্রিক বিশ্লেষণে মােলার দ্রবণ বা দশমাংশ মােলার দ্রবণ প্রমাণ দ্রবণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ 1M মোলার দ্রবণ একটি প্রমাণ দ্রবণ। কারণ এর নির্দিষ্ট আয়তনে নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত আছে অর্থাৎ এর ঘনমাত্রা জানা এবং তা 1M।
প্রমাণ দ্রবণের প্রকারভেদ
প্রমাণ দ্রবণকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-
(i) প্রাইমারী বা মূখ্য প্রমাণ দ্রবণ
(ii) সেকেন্ডারি বা গৌণ প্রমাণ দ্রবণ।
- প্রাইমারী বা মুখ্য প্রমাণ দ্রবণ : বিশুদ্ধ ও শুষ্ক অবস্থায় পাওয়া যায় এরূপ পদার্থের একটি নির্দিষ্ট ওজনকে সরাসরি রাসায়নিক তুলাদণ্ডে ওজন করে ও উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত করে যে দ্রবণ পাওয়া যায় তাকে মূখ্য বা প্রাইমারী প্রমাণ দ্রবণ বলে। এ ধরনের দ্রবণকে আবদ্ধ অবস্থায় অনেকদিন রেখে দিলেও দ্রবণটির মাত্রার কোনো পরিবর্তন হয় না। এরূপ দ্রবণ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত পদার্থগুলি বায়ুর প্রতি নিষ্ক্রিয় হয়। অর্থাৎ পদার্থগুলি বায়ু হতে পানি শোষণ করে না বা বায়ুর CO2 এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে না এবং বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা সাধারণ উষ্ণতায় জারিত হয় না। এ সকল পদার্থকে প্রাইমারী স্টান্ডার্ড পদার্থ বলে। উদাহরণ : অনার্দ্র Na2CO3 এর দ্রবণ, অক্সালিক এসিড (C2H2O4.2H2O) এর দ্রবণ, পটাশিয়াম ডাইক্রোমেট (K2Cr2O7) এর দ্রবণ।
- সেকেন্ডারী বা গৌণ প্রমাণ দ্রবণ : কিছু পদার্থ আছে যাদের সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ ও শুষ্ক অবস্থায় পাওয়া যায় না কিংবা যাদের ওজন সরাসরি রাসায়নিক তুলাদণ্ডের মাধ্যমে পরিমাপ করা যায় না। ফলে উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত করে প্রমাণ দ্রবণ প্রস্তুত করা যায় না। তাছাড়া এসব পদার্থের দ্রবণ অনেকদিন রেখে দিলে দ্রবণের মাত্রার পরিবর্তন হয়। এই সকল পদার্থগুলিকে সেকেন্ডারী বা গৌণ প্রমাণ দ্রব্য এবং এদের দ্বারা প্রস্তুতকৃত দ্রবণকে সেকেন্ডারী বা গৌণ প্রমাণ দ্রবণ বলে। উদাহরণ : NaOH, KOH, HCI, H2SO4, HNO3, KMnO4 প্রভৃতি।