অষ্টম অধ্যায় : আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সূচনা, পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অষ্টম অধ্যায় : আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সূচনা, পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র

admin

7 Min Read
প্রশ্ন-১. আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান কাকে বলে?
উত্তর :
 আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ও কোয়ান্টাম তত্ত্ব এবং এদের প্রয়োগের সফলতায় একদিকে ক্ষুদ্র জগতের পরমাণু; পরমাণু ও নিউক্লিয়াসের গঠন-উপাদান; অণু ও কঠিন পদার্থে পরমাণুর সমাবেশ প্রক্রিয়া, অন্যদিকে বৃহত্তম জগতের মহাবিশ্বের উদ্ভব ও বিবর্তন সম্পর্কিত পদার্থবিজ্ঞানের যে শাখা তাকেই আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বলে।

প্রশ্ন-২. কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান কি?
উত্তর :
 কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান হচ্ছে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে কোয়ান্টাম তত্ত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে বিশাল কোন বস্তু যেমন তারা ও ছায়াপথ এবং বিশ্বতত্ত্বমূলক ঘটনা যেমন মহাবিস্ফোরণ বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যা করা যায়।

প্রশ্ন-৩. স্টেফান-বোলৎস্ম্যান সূত্র কি?

উত্তর : কোন কৃষ্ণবস্তুর একক ক্ষেত্রফল হতে প্রতি সেকেন্ডে বিকির্ণ তাপের পরিমাণ এর পরম তাপমাত্রার চতুর্থঘাতের সমানুপাতিক।প্রশ্ন-৪. প্রসঙ্গ কাঠামো কাকে বলে?
উত্তর :
 যে পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতি বা স্থিতি পরিমাপ করা হয়, তাকে প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

প্রশ্ন-৫. জড় প্রসঙ্গ কাঠামো কাকে বলে?
উত্তর :
 পরস্পরের সাপেক্ষে ধ্রুব বেগে গতিশীল যেসব কাঠামোতে নিউটনের গতিসূত্র অর্জন করা যায়, তাদের জড় প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

প্রশ্ন-৬. অজড় প্রসঙ্গ কাঠামো কাকে বলে?
উত্তর :
 যে সকল প্রসঙ্গ কাঠামো পরস্পরের সাথে ধ্রুব বেগে গতিশীল নয় অর্থাৎ যে সকল প্রসঙ্গ কাঠামোর ত্বরণ থাকে তাদেরকে অজড় প্রসঙ্গ কাঠামো বলে।

প্রশ্ন-৭. তেজস্ক্রিয়তার এস. আই. একক কি?
উত্তর :
 তেজস্ক্রিয়তার এস. আই. একক হলো বেকেরেল।

প্রশ্ন-৮. ধরন অনুসারে প্রসঙ্গ কাঠামো কত প্রকার?
উত্তর :
 ধরন অনুসারে প্রসঙ্গ কাঠামো দুই প্রকার।

প্রশ্ন-৯. গ্যালিলিয়ান রূপান্তর কি?
উত্তর : সময়কে পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষ বিবেচনা করে, দুটি জড় কাঠামোর অবস্থান স্থানাঙ্ক ও সময়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনকারী সমীকারণসমূহকে গ্যালিলিয়ান রূপান্ত বলা হয়।প্রশ্ন-১০. লরেন্টজ রূপান্তর কি?
উত্তর : আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের স্বীকার্যগুলোর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যে রূপান্তর বিধি আপেক্ষিক গতিশীল প্রসঙ্গ কাঠামোসমূহের স্থান ও কালের সম্পর্ক প্রকাশ করে তাকে লরেন্টজ রূপান্তর বলা হয়।

প্রশ্ন-১১. দৈর্ঘ্য সংকোচন কাকে বলে?
উত্তর : পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে স্থির কোনো দণ্ডের দৈর্ঘ্য অপেক্ষা দণ্ডটি দৈর্ঘ্য বরাবর পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল হলে নির্ণীত দৈর্ঘ্য কম হবে অর্থাৎ দৈর্ঘ্য সংকুচিত হবে। এ ঘটনাকে দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে।

প্রশ্ন-১২. সময় সম্প্রসারণ কাকে বলে?
উত্তর : স্থির পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল ঘড়ি ধীরে চলার ঘটনাকে সময় সম্প্রসারণ বলে।

প্রশ্ন-১৩. কৃষ্ণ বিবর বা কৃষ্ণ গহ্বর কাকে বলে?
উত্তর : মহাকাশে এমন কিছু বস্ত আছে যা থেকে আলো বেরিয়ে আসতে পারে না বলে তা দেখা যায় না অথচ এর অস্তিত্ব বোঝা যায় তার মহাকর্ষ প্রভাব থেকে। এরূপ বস্তকে কৃষ্ণ বিবর বা কৃষ্ণ গহ্বর বলে।

প্রশ্ন-১৪. কার্য অপেক্ষক কাকে বলে?
উত্তর : কোনো ধাতব পৃষ্ট হতে শূন্য বেগসম্পন্ন ইলেকট্রন নির্গত করতে যতটুকু শক্তির প্রয়োজন তাকে ঐ ধাতুর কার্য অপেক্ষক বলে।

প্রশ্ন-১৫. কম্পটন প্রভাব বা কম্পটন ক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর : একবর্ণী এক্স রশ্মির বিক্ষেপনের ফলে বিক্ষিপ্ত বিকিরণের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অথবা কম্পাংকের পরিবর্তন ঘটে। এই ঘটনা বা ক্রিয়াকে কম্পটন প্রভাব বা কম্পটন ক্রিয়া বলে।

প্রশ্ন-১৬. তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা কি?
উত্তর : তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা হলো এমন একটি ধারণা যাতে উল্লেখ করা হয় যে, সকল শক্তি তরঙ্গ-সদৃশ এবং কণা-সদৃশ উভয় ধর্ম প্রদর্শন করে।
প্রশ্ন-১৭. সূচন কম্পাঙ্ক কাকে বলে?
উত্তর :
 প্রত্যেক ধাতুর ক্ষেত্রে একটি নূন্যতম কম্পাঙ্ক আছে যার চেয়ে কম কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট কোনো আলো ঐ ধাতু থেকে ইলেকট্রন নির্গত করতে পারে না। ঐ নূন্যতম কম্পাঙ্ককে ঐ ধাতুর সূচন কম্পাঙ্ক বলে।
প্রশ্ন-১৮. ডি ব্রগলি তরঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর : প্রত্যেক চলমান পদার্থ কণার সাথে একটি তরঙ্গ যুক্ত থাকে। এই তরঙ্গকে ডি ব্রগলি তরঙ্গ বলে।
প্রশ্ন-২০. কালো বস্তু কাকে বলে?
উত্তর : যে বস্তু তার ওপর আপতিত সকল দৃশ্য ও অদৃশ্য তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ শোষণ করে তাকে কালো বস্তু বলে।
প্রশ্ন-২১. এক্স-রে কী?
উত্তর : দ্রুতগতি সম্পন্ন ইলেকট্রন কোন ধাতুকে আঘাত করলে তা থেকে উচ্চ ভেদন ক্ষমতাসম্পন্ন অজানা প্রকৃতির এক প্রকার বিকিরণ উৎপন্ন হয়, এ বিকিরণকে এক্স-রে বলে।
প্রশ্ন-২২. এক্স-রে কত প্রকার?
উত্তর : এক্স-রে দুপ্রকার;
(ক) কোমল এক্স-রে এবং
(খ) কঠিন এক্স-রে।
প্রশ্ন-২৩. প্রসঙ্গ বিন্দু কাকে বলে?
উত্তর : প্রসঙ্গ কাঠামোর অন্তর্গত যে বিন্দুর সাপেক্ষে কোনো বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করা হয় তাকে প্রসঙ্গ বিন্দু বলে।
প্রশ্ন-২৪. কম্পটন তরঙ্গদৈর্ঘ্য কাকে বলে?
উত্তর : কোনো ফোটন একটি স্থির ইলেকট্রনকে আঘাত করার পর যদি সমকোণে বিক্ষিপ্ত হয়, তবে এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনকে কম্পটন তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে।
প্রশ্ন-২৫. কাল দীর্ঘায়ন কাকে বলে?
উত্তর : কোনো পর্যবেক্ষক তার সাপেক্ষে স্থির কোনো ঘটনা যে সময় ধরে ঘটতে দেখবে, ঘটনাকে পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল হলে সে তা অধিক সময় ধরে ঘটতে দেখবে। এ ঘটনাকে কাল দীর্ঘায়ন বলে।
একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্ব কী?
উত্তর : চারটি মৌলিক বলকে একই তত্ত্বের মাধ্যমে প্রকাশ করাকে বলা হয় একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্ব (Unified field theory)।

ফোটন কাকে বলে?

উত্তরঃ কোন বস্তু থেকে আলো বা কোনো শক্তির নিঃসরণ নিরবিচ্ছিন্নভাবে হয় না। আলো তথা যে কোনো বিকিরণ গুচ্ছ গুচ্ছ আকারে প্যাকেট বা কোয়ান্টাম হিসেবে নিঃসৃত হয়। আলোর এই কোয়ান্টাম বা প্যাকেটকে ফোটন বলে।

কোনো ঘড়ির নিশ্চল অবস্থায় সময়ের পাঠ এবং পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল অবস্থায় সময়ের পাঠের তুলনা কর।
উত্তর : কাল দীর্ঘায়ন অনুসারে কাল বা সময়ের পরিমাণ পর্যবেক্ষক ও যা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তার আপেক্ষিক গতি দ্বারা প্রভাবিত। যে ঘড়ি কোনো পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে গতিশীল সেই ঘড়ি যদি গতিশীল না হয়ে নিশ্চল থাকতো তাহলে যে সময় দেয় তার চেয়ে গতিশীল অবস্থায় কম সময় দেবে।
গ্যালিলীয় রূপান্তর আপেক্ষিক তত্ত্বে গ্রহণযোগ্য নয়- মাইকেলসন-মর্লির পরীক্ষার আলোকে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মাইকেলসন-মর্লির পরীক্ষায় ব্যতিচার নকশায় অপসারণ ব্যতিচার রেখায় বিস্তৃতির 25 ভাগের এক ভাগ যা মাইকেলসনের সূক্ষ্ম যন্ত্রে মাপা সম্ভব হয়। এই অপসারণের পরিমাণ এতই সামান্য যে, তাকে নগণ্য ধরা যায়। অর্থাৎ মাইকেলসনের মতে ব্যতিচার রেখাগুলোর কোনো অপসারণ হয়নি। এটি হতে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, স্থিতিশীল ইথার প্রকল্পের ফলাফল ভুল অর্থাৎ পৃথিবী ও ইথারের মধ্যে কেনো আপেক্ষিক বেগ নেই। এই পরীক্ষাটি পৃথিবীর গভীরে, উপরে, বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে, এমনকি লেজার রশ্মি ব্যবহার করেও একই ফলাফল পাওয়া যায়। ফলে ইথার প্রবাহ তত্ত্বটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
এই সমস্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে আইনস্টাইন তাঁর দ্বিতীয় স্বীকার্যে বলেছিলেন, শূন্য স্থানে আলোর বেগ বিশ্বজনীনভাবে ধ্রুব, এটি উৎস বা পর্যবেক্ষণ বা মাধ্যমের গতির ওপর নির্ভর করেনা। কিন্তু গ্যালিলিয়ান রূপান্তর অনুসারে পরীক্ষায় প্রাপ্ত শূন্যস্থানে আলোর বেগের মান, উৎস অথবা পর্যবেক্ষণ বা মাধ্যমের গতির ওপর নির্ভর করে। এ কারণেই গ্যালিলীয় রূপান্তর আপেক্ষিক তত্ত্বে গ্রহণযোগ্য নয়।