রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় দুটি পরমাণুর বহিঃস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন গ্রহণ বা বর্জন বা শেয়ার দ্বারা উভয় পরমাণুই নিকটবর্তী নিস্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল দ্বিত্ব বা অষ্টক কাঠামো লাভ করলে পরমাণুদ্বয়ের মধ্যে সৃষ্ট যে শক্তি তাদেরকে যুক্ত করে অণু গঠন করে তাকে রাসায়নিক বন্ধন (Chemical bond) বলে।
রাসায়নিক বন্ধন প্রধানত দুই প্রকার। যথা:
(i) আয়নিক বা তড়িৎযোজী বন্ধন : ধাতু ও অধাতুর মধ্যকার বন্ধন;
(ii) সমযোজী বন্ধন : অধাতু ও অধাতুর মধ্যকার বন্ধন;
এছাড়া আরো কয়েক ধরনের রাসায়নিক বন্ধন দেখা যায়। যথা:
(i) ধাতব বন্ধন : ধাতব দন্ডে বিদ্যমান পরমাণুসমূহের বন্ধন;
(ii) হাইড্রোজেন বন্ধন : হাইড্রোজেন পরমাণু যখন উচ্চ তড়িৎ-ঋণাত্মক মৌল যেমন ফ্লোরিন, অক্সিজেন, ক্লোরিন এবং নাইট্রোজেনের সাথে মিলিত হয়ে সমযোজী যৌগ গঠন করে, তখন এদের মধ্যে পােলারিটি বা দ্বিমেরু সৃষ্টি হয়। এ রূপে সৃষ্ট পােলার অণুসমূহ যখন পরস্পরের নিকটে আসে তখন একটি অণুর ধনাত্মক হাইড্রোজেন প্রান্ত অন্য অণুর ঋণাত্মক প্রান্তের দিকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে একটি দুর্বল বন্ধন সৃষ্টি করে। এই দুর্বল আকর্ষণকে হাইড্রোজেন বন্ধন বলে। হাইড্রোজেন বন্ধনকে ডট ডট “……” চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
(iii) সন্নিবেশ বন্ধন।
রাসায়নিক বন্ধন কেন গঠিত হয়? (Why chemical bond is formed?)
প্রতিটি মৌলের পরমাণু তার নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করে স্থিতিশীল অবস্থায় যেতে চায়। এ স্থিতিশীল কাঠামো অর্জনের জন্য প্রতিটি মৌল রাসায়নিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কখনও ইলেকট্রন আদান-প্রদান কিংবা কখনো ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে রাসায়নিক বন্ধন গঠিত হয়। সোডিয়াম ক্লোরাইড-এ ইলেকট্রন আদান-প্রদানের মাধ্যমে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।