পৃথিবীর মহাদেশগুলোর চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। এরূপে সমুদ্রের উপকূলরেখা থেকে তলদেশ ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে। মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার। এটি ১০ কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে।
উপকূলভাগের বন্ধুরতার ওপর এর বিস্তৃতি নির্ভর করে। উপকূল যদি বিস্তৃত সমভূমি হয়, তবে মহীসোপান অধিক প্রশস্ত হয়। মহাদেশের উপকূলে পর্বত বা মালভূমি থাকলে মহীসোপান সংকীর্ণ হয়। ইউরোপের উত্তরে বিস্তীর্ণ সমভূমি থাকায় উত্তর মহাসাগরের মহীসোপান খুবই প্রশস্ত (প্রায় ১ হাজার ২৮৭ কিলোমিটার)।
আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ স্থান মালভূমি বলে এর পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের মহীসোপান খুবই সরু। স্থলভাগের উপকূলীয় অঞ্চল নিমজ্জিত হওয়ার ফলে অথবা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য হওয়ার কারণে মহীসোপানের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া সমুদ্রতটে সমুদ্রতরঙ্গও ক্ষয়ক্রিয়ার দ্বারা মহীসোপান গঠনে সহায়তা করে থাকে।
মহীঢাল কাকে বলে?
মহীসোপানের শেষ সীমা থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সঙ্গে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে। সমুদ্রে এর গভীরতা ২০০ থেকে ৩০০০ মিটার। এটা অধিক খাড়া হওয়ার জন্য খুব প্রশস্ত নয়। এটি গড়ে প্রায় ১৬ থেকে ৩২ কিলোমিটার প্রশস্ত। মহীঢালের উপরিভাগ সমান নয়। অসংখ্য আন্তসাগরীয় গিরিখাত অবস্থান করায় তা খুবই বন্ধুর প্রকৃতির। এর ঢাল মৃদু হলে জীবজন্তুর দেহাবশেষ, পলি প্রভৃতির অবক্ষেপণ দেখা যায়।