কোষপ্রাচীর জড় পদার্থের তৈরি। কোনো কোনো কোষপ্রাচীরে ছিদ্র থাকে। এদের কূপ বলে। পাশাপাশি কোষের মধ্যে কূপের মাধ্যমে উদ্ভিদ অন্তঃকোষ সংযোগ রক্ষা করে।
জীবজগতে মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্ব।
জীবজগতে মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের যাবতীয় কাজের জন্য শক্তি উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ করে। শ্বসনের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম, কো-এনজাইম ধারণ করে। এখানে শ্বসনের বিভিন্ন পর্যায় সম্পন্ন হয়। শ্বসন ছাড়াও কতিপয় জৈবনিক কাজের সাথে এ অঙ্গাণুটি জড়িত। একে কোষের ‘পাওয়ার হাউস’ বা ‘শক্তিঘর’ বলা হয়। মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের শ্বসন অঙ্গ এবং এতে শ্বসনের ক্রেবস চক্র ও ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র বা প্রান্তীয় জারণ সম্পন্ন হয়। মাইটোকন্ড্রিয়ার অনুপস্থিতিতে শ্বসনের ক্রেবস চক্রের বিক্রিয়াসমূহ ও প্রান্তীয় জারণ সম্ভব নয়। আবার অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশনের মাধ্যমে ATP মাইটোকন্ড্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।
মাইটোকন্ড্রিয়ার অনুপস্থিতিতে অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন প্রক্রিয়ায় ATP উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া ATP বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এনজাইমের কো-এনজাইম হিসেবে কাজ করে। ATP এর অভাবে এসব বিক্রিয়া বন্ধ হবে। তাছাড়া ATP ফসফেট ত্যাগ করে ADP তে পরিবর্তনের সময় যে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় তা বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। মাইটোকন্ড্রিয়ার অনুপস্থিতিতে শক্তির অভাবে জীবের বিপাক প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যদিকে মাইটোকন্ড্রিয়া ডিম্বাণু ও শুক্রাণু তৈরিতে সহায়তা করে। মাইটোকন্ড্রিয়ার অভাবে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত হবে। মাইটোকন্ড্রিয়া স্নেহ বিপাকে সহায়তা করে। এর অনুপস্থিতিতে শ্বসন প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন হবে না এবং জীবের বিপাকীয় প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে জীবনাবসান ঘটবে।
এটা স্পষ্ট যে, মাইটোকন্ড্রিয়ার অনুপস্থিতিতে শ্বসনের ব্যাঘাত, ATP উৎপাদন ব্যাহত, বিপাক ক্রিয়া বন্ধ, ডিম্বাণু ও শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত, শক্তি উৎপাদনসহ প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি হবে, যা জীবের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই জীবজগতে মাইটোকন্ড্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম।