কোনাে উৎস থেকে তরঙ্গ যখন শূন্য বা কোনাে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে সঞ্চালিত হয় তখন শূন্য বা কোনাে মাধ্যমের বিন্দুগুলাে কম্পিত হতে থাকে। যেকোনাে মুহূর্তে একই দশা সম্পন্ন বিন্দুগুলাে যে রেখায় বা তলের উপর অবস্থিত থাকে তাকে তরঙ্গমুখ বলে।
ত্রিমাত্রিক স্থানে কোনাে বিন্দু কম্পিত হলে যে তরঙ্গের সৃষ্টি হয় সেটি ত্রিমাত্রিক তরঙ্গ। এই ক্ষেত্রে সেই বিন্দুকে কেন্দ্র করে একটি গােলক কল্পনা করলে ঐ গােলকের পৃষ্ঠের উপর অবস্থিত বিন্দুগুলি সমদশা সম্পন্ন। সুতরাং এই ক্ষেত্রে গােলকীয় তরঙ্গমুখ পাওয়া যাবে। আর যদি গােলকের ব্যাসার্ধ খুব বড় হয় তবে সেক্ষেত্রে গােলকীয় তরঙ্গমুখের ক্ষুদ্র অংশকে সমতল তরঙ্গমুখ হিসাবে বিবেচনা করা যাবে।
তরঙ্গমুখের প্রকারভেদ
তরঙ্গমুখ সাধারণত তিন প্রকারের হয়।
(ক) গােলীয় তরঙ্গমুখ : কোনাে বিন্দু উৎস বা ক্ষুদ্র ছিদ্র থেকে আলােক তরঙ্গ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে যে তরঙ্গমুখ অগ্রসর হয় সেটি গােলাকার তরঙ্গমুখ।
(গ) সমতল তরঙ্গমুখ : অসীমে অবস্থিত উৎস থেকে যে রশ্মিগুলাে আসে সেগুলাে সমান্তরাল হওয়ায় এর তরঙ্গমুখ সমতল হয়। ফলে সমতল তরঙ্গমুখ সৃষ্টি হয়।তরঙ্গমুখের বৈশিষ্ট
তরঙ্গমুখের কতকগুলি বৈশিষ্ট আছে, তা নিচে দেয়া হলাে–
- তরঙ্গমুখের যেকোনাে বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্ব ঐ বিন্দুতে তরঙ্গের বেগের দিক নির্দেশ করে।
- কোনাে তরঙ্গের বেগ বলতে প্রকৃত পক্ষে তরঙ্গমুখের বেগকে বােঝায়। অর্থাৎ, তরঙ্গের বেগ v হলে তরঙ্গমুখের বেগও v।
- তরঙ্গমুখ সমতল বা গােলীয় যাই হােক না কেন, পরস্পর দুটি সমদশা সম্পন্ন তরঙ্গমুখের লম্ব দূরত্বকে ঐ তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে।
- একই তরঙ্গমুখের উপর অবস্থিত যে কোনাে দুটি বিন্দুর মধ্যে দশা পার্থক্য সর্বদাই শূন্য।