পর্যায় সারণিতে গ্রুপ-৩ থেকে গ্রুপ-১২ পর্যন্ত গ্রুপে অবস্থিত মৌলসমূহকে অবস্থান্তর মৌল বলে। অবস্থান্তর মৌলসমূহের নিজস্ব বর্ণ রয়েছে। এরা ধাতব পদার্থ হিসেবে প্রচুর ব্যবহৃত হয়। সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন প্রদান করে আয়নিক যৌগ তৈরি করে। কোনো পর্যায়ের অবস্থান্তর মৌলসমূহের মধ্যে বামদিকের মৌল থেকে ডানদিকের মৌল দ্বারা গঠিত যৌগের বৈশিষ্ট্য আয়নিক থেকে সমযোজীতে পরিবর্তিত হয়।
অবস্থান্তর মৌলের বৈশিষ্ট্য
অবস্থান্তর মৌলের কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ধর্ম আছে। যেমন–
(i) এদের পরিবর্তনশীল যোজনী থাকে।
(ii) এরা রঙিন যৌগ গঠন করে।
(iii) এরা জটিল যৌগ গঠন করে।
(iv) এরা প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
(v) এরা সাধারণ তাপমাত্রায় কঠিন।
(vi) এরা প্যারাম্যাগণেটিক ধর্ম প্রদর্শন করে।
অবস্থান্তর মৌল রঙিন যৌগ গঠন করে কেন?
অবস্থান্তর ধাতুর অধিকাংশ যৌগই কঠিন অবস্থায় বা দ্রবণে রঙিন হয়। কারণ অবস্থান্তর ধাতুর আয়নগুলোর d-উপস্তর অসম্পূর্ণ থাকে। একই উপস্তরের মধ্যে নিম্নস্তর হতে উচ্চস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রনকে উন্নীত করতে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় তা বেশ কম। এরূপ সামান্য পরিমাণ শক্তি দৃশ্যমান পরিসরে আলোর বিকিরণ হতে পাওয়া যায়। ফলে অবস্থান্তর ধাতুর আয়নগুলোর এরূপ ধর্ম আছে যে এরা দৃশ্যমান পরিসর হতে নির্দিষ্ট বিকিরণ শোষণ করে এবং বর্ণযুক্ত হয়।
কোনো যৌগ অথবা আয়ন কঠিন বা দ্রবীভূত অবস্থায় দৃশ্যমান আলোর বিশেষ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি শোষণ করলে ঐ যোগের বা আয়নের রং সৃষ্টি হয়। অবস্থান্তর মৌলের আয়নের ক্ষেত্রে এরূই ঘটে থাকে।