প্রশ্ন-১. আধান কি?
উত্তর : চার্জযুক্ত পরমাণুই হচ্ছে আধান।
প্রশ্ন-৩৯. পৃথিবীর বিভব শূন্য কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : পৃথিবী এতই বৃহৎ যে এর থেকে কিছু আধান আদান বা প্রদান করলে এর চার্জের কোন পরিবর্তন হয় না। তাই পৃথিবীর বিভব শূন্য ধরা হয়।
প্রশ্ন-৪০. সুষম তড়িৎক্ষেত্র বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কোনো তড়িৎক্ষেত্রের সকল বিন্দুতে প্রাবল্য যদি একই হয় অর্থাৎ তড়িৎক্ষেত্রের সকল বিন্দুতে প্রাবল্যের মান সমান এবং দিক একই হয় তবে ঐ তড়িৎক্ষেত্রকে সুষম তড়িৎক্ষেত্র বলা হয়। সুষম তড়িৎক্ষেত্রের বলরেখাগুলোর পরস্পর সমান্তরাল ও সম ঘনত্ববিশিষ্ট হয়।
প্রশ্ন-৪১. আকাশে বিজলী চমকায় কেন?
উত্তর : মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে স্থির বৈদ্যুতিক আধান উৎপন্ন হয়। আহিত দুৎটি মেঘ খন্ডের অবস্থান কাছাকাছি থাকলে বিদ্যুৎক্ষরণ চলতে থাকে এবং আলোর ঝলকানি দেখা যায়। এভাবেই আকাশে বিজলী চমকায়।
প্রশ্ন-৪২. ট্যাংকারে জ্বালানী পূর্ণ করার পূর্বে ট্যাংকারকে ভূ-সংযুক্ত করা হয় কেন?
উত্তর : ট্যাংকারে জ্বালানী পূর্ণ করার সময় স্থির বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়ে জ্বালানীতে আগুন ধরে যেতে পারে বলে ট্যাংকারকে ভূ-সংযুক্ত করা হয় যেন উৎপন্ন বিদ্যুৎ নিউট্রাল হয়ে যায়।
প্রশ্ন-৪৩. বিভব পার্থক্য কীভাবে আধান স্থানান্তরে ভূমিকা রাখে বর্ণনা কর।
উত্তর : বিভব পার্থক্য মূলত উৎপন্ন হয় আধানের ঘনত্বের তারতম্যের কারণে। তড়িৎ ক্ষেত্রের দুটি বিন্দুর মধ্যে বা কোনো বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্যে বিভবপার্থক্য থাকলে উচ্চ বিভবের বিন্দু হতে নিম্ন বিভবের বিন্দুতে ধনাত্মক আধান স্থানান্তরিত হয়। ঋণাত্মক আধান বা ইলেকট্রন বিবেচনা করলে নিম্ন বিভবের বিন্দু হতে উচ্চ বিভবের বিন্দুতে ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হয়। এভাবে বিভব পার্থক্য আধান স্থানান্তরে ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন-৪৪. স্বর্ণপাত তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রকে কীভাবে ধনাত্মক আধানে আহিত করা যায়- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : একটি কাঁচদন্ডকে রেশম দিয়ে ঘষলে কাঁচদন্ডে ধনাত্মক আধানের উদ্ভব হয়। ঐ আহিত কাচদন্ডকে তড়িৎবীক্ষণের চাকতি বা গোলকের গায়ে স্পর্শ করালে দন্ড হতে খঅনিকটা আধান চাকতিতে চলে যায়। এই আধান সুপরিবাহী ধাতব দন্ডের মধ্য দিয়ে স্বর্ণপাত তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রের সোনার পাতদ্বয়ে পৌঁছে। ফলে সোনার পাত দুটি একই জাতীয় আধান পেয়ে পরস্পরকে বিকর্ষণ করে এবং পরস্পর থেকে দূরে সরে যায়। এ অবস্থায় কাঁচদন্ড সরিয়ে নিলে যদি পাতদ্বয়ের মধ্যবর্তী ফাঁক না কমে, তাহলে যন্ত্রটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয়েছে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
প্রশ্ন-৪৫. আবেশ প্রক্রিয়ায় কোনো নতুন আধানের উদ্ভব হয় না- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : একটি কাচদন্ডকে রেশমের কাপড় দ্বারা ঘষে অনাহিত পরিবাহক দন্ড AB এর A প্রান্তের নিকট আনলে পরিবাহকের মুক্ত ইলেকট্রনগুলো কাচদন্ডের ধনাত্মক আধান দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে A প্রান্তে সরে আসে। এখানে নতুন কোনো আধানের সৃষ্টি হয় না। আহিত কাচদন্ডের উপস্থিতির কারণে সমপরিমাণ বিপরীত জাতীয় আধান পৃথক হয়ে পরিবাহকের দুপ্রান্তে অবস্থান করে। কাচদন্ডকে সরিয়ে নিয়ে কোনো তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পপরীক্ষা করলে AB পরিবাহকে কোনো আধানের অস্তিত্বের সন্ধান পাওয়া যায় না। অর্থাৎ আধানগুলো একত্রিত হয়ে পরিবাহককে পুনরায় অনাহিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। সুতরাং বলা যায়, আবেশ প্রক্রিয়ায় কোনো নতুন আধানের সৃষ্টি হয় না।
প্রশ্ন-৪৬. ‘আবেশী ও আবিষ্ট আধান একটি অন্যটির বিপরীতধর্মী’ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আহিত বস্তু যে আধান তড়িৎ আবেশের মাধ্যমে পরিবাহকে আবেশ সৃষ্টি করে তাকে আবেশী আধান বলে এবং তড়িৎ আবেশের ফলে কোনো পরিবাহকে যে আধানের সঞ্চার হয় তাকে আবিষ্ট আধান বলে। আবেশ প্রক্রিয়ায় তড়িৎ আকর্ষণের কারণে আবিষ্ট বস্তুতে আধান সৃষ্টি হওয়ায় এবং পরস্পর বিপরীতধর্মী আধানের কারণে আকর্ষণ বলের সৃষ্টি হওয়ায় আবেশী ও আবিষ্ট আধান একটি অন্যটির বিপরীতধর্মী।
প্রশ্ন-৪৭. ভোল্টমিটারকে বর্তনীর সাথে সমান্তরালে যুক্ত করার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বর্তনীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য মাপার জন্য ভোল্টমিটার ব্যবহার করা হয়। বর্তনীর যে দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য মাপতে হয় সেই দুই প্রান্তে ভোল্টমিটারকে সমান্তরালে যুক্ত করা হয়। কারণ সিরিজে যুক্ত থাকলে এটি মূল তড়িৎপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে বিভব পার্থক্যের মানের পরিবর্তন ঘটাবে।
প্রশ্ন-৪৮. ঘর্ষণে কেন বস্তু আহিত হয় বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : কোনো বস্তুর সাথে আরেকটি বস্তুর ঘর্ষণ হলে বা সংস্পর্শে আনা হলে যে বস্তুর ইলেকট্রন আসক্তি বেশি তা অপর বস্তু হতে ইলেকট্রন সংগ্রহ করে ঋণাত্মক আধানে আহিত হয় এবং অপরটি ধনাত্মক আধানে আহিত হয়। এভাবে ঘর্ষণের ফলে কোনো বস্তু আহিত হয়।
প্রশ্ন-৪৯. স্বর্ণপাত তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রের ভেতরে পানি নিরোধক পদার্থ ব্যবহৃত করা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : স্বর্ণপাত তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রের অভ্যন্তরে জলীয় বাষ্প থাকলে যন্ত্রের সুবেদিতা কমে যায়। পানি পোলার যৌগ হওয়ায় জলীয়বাষ্প পাতদ্বয়েরর সংস্পর্শে এসে পাতদ্বয়ের মধ্যকার ফাঁক পরিবর্তন করে দিতে পারে। এতে প্রকৃত চার্জের পরিমাণ সম্পর্কে ভুল ধাণা হতে পারে। তাই যন্ত্রের ভেতরে পানি শোষক পদার্থ H2SO4 বা CaC12 একটি আলাদা পাত্রে রাখা হয়।
প্রশ্ন-৫০. তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্রে স্বর্ণপাত ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর : তড়িৎবীক্ষণের পাত দুটি খুব হালকা ও পাতলা হওয়া দরকার। পাত দুটিতে সমপ্রকৃতির আধান থাকে বলে বিকর্ষণ বলের প্রভাবে পাত দুটি বিস্ফোরিত হয়। পাত দুটি হালকা হলে বিস্ফোরণ বেশি হবে এবং পর্যবেক্ষণের সুবিধা হবে। স্বর্ণকে খুব পাতলা পাতে পরিণত করা যায়। উপরন্তু এ ধাতুর সঙ্গে বায়ুর কোনো রাসায়নিক ক্রিযা না হওয়ায় পাতটি সহজে নষ্ট হয় না। এসব কারণে তড়িৎবীক্ষণে স্বর্ণপাত ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-৫১. দুটি আধানের মধ্যবর্তী তড়িৎ বল কোন কোন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : দুইটি আধানের মধ্যবর্তী তড়িৎ বল নির্ভর করে,
১. আধানদ্বয়ের পরিমাণের উপর,
২. আধানদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের উপর,
৩. আধানদ্বয় যে মাধ্যমে অবস্থিত তার প্রকৃতির উপর।
ধারকের শক্তি (Energy of a Capacitor) বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ধারকের শক্তি বলতে মূলত একটি চার্জিত ধারকের সঞ্চিত শক্তিকে বুঝায়। একটি ধারককে চার্জিত করতে থাকলে ধারকস্থিত চার্জ নবাগত চার্জকে বিকর্ষণ করে। ফলে এই বিকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে কাজ সম্পাদন করে ধারকটিকে চার্জিত করতে হয়। এভাবে কোন ধারককে চার্জিত করতে মোট কৃত কাজ উক্ত ধারকে শক্তিরূপে সঞ্চিত থাকে। এই শক্তিকে ধারকের স্থিতিশক্তি বা বিভব শক্তি বলে। ধারকের এই শক্তি পরবর্তীতে বর্তনীতে তড়িচ্চালক শক্তিরূপে রূপান্তরিত হয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করে। ধারকের ডিসচার্জিং এর সময় এই শক্তি তড়িৎ প্রবাহসহ অন্যান্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।