পারকিনসন রােগ মস্তিষ্কের এমন এক অবস্থা, যেখানে হাতে ও পায়ের কাঁপুনি হয় এবং আক্রান্ত রােগীর নড়াচড়া, হাঁটাহাঁটি করতে সমস্যা হয়। এ রােগ সাধারণত 50 বছর বয়সের পরে হয়। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে যুবক-যুবতীদেরও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে রােগটি তার বংশে রয়েছে বলে ধরা হয়।
স্নায়ু কোষ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে থাকে, যার একটি হলাে ডােপামিন। ডােপামিন শরীরের পেশির নড়াচড়ায় সাহায্য করে। পারকিনসন রােগাক্রান্ত রােগীর মস্তিষ্কে ডােপামিন তৈরির কোষগুলাে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। ডােপামিন ছাড়া ঐ স্নায়ু কোষগুলাে পেশি কোষগুলােতে সংবেদন পাঠাতে পারে না। ফলে মাংসপেশি তার কার্যকারিতা হারায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পারকিনসনের কারণে রােগীর মাংসপেশি আরও অকার্যকর হয়ে উঠে, ফলে রােগীর চলাফেরা, লেখালেখি ইত্যাদি কাজ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
পারকিনসন রােগ সাধারণত ধীরে ধীরে প্রকট রূপে দেখা দেয়। প্রাথমিক অবস্থায় রােগী হালকা হাত বা পা কাঁপা অবস্থায় থাকে। ফলে চলাফেরা বিঘ্নিত হয়। এছাড়াও চোখের পাতার কাঁপুনি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া, সােজাসুজি হাঁটার সমস্যা, কথা বলার সময় মুখের বাচনভঙ্গি না আসা অর্থাৎ মুখ অনড় থাকা মাংসপেশিতে টান পড়া বা ব্যথা হওয়া, নড়াচড়ায় কষ্ট হওয়া, যেমন চেয়ার থেকে উঠা কিংবা হাঁটতে শুরু করার সময় অসুবিধে হওয়া। এই ধরনের নানা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।
ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি গ্রহণ, পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করার মাধ্যমে রােগী অনেকটা সুস্থ থাকে।