ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য কি?

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ধাতু : যে সকল মৌলিক পদার্থ সাধারণ অবস্থায় কঠিন, দৃঢ়, উজ্জ্বল বা চকচকে, ওজনে ভারী, আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ করে এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী সেই মৌলিক পদার্থকে ধাতু বলে। যেমন– লােহা, তামা, সােনা ইত্যাদি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অধাতু : যেসব মৌল চকচকে নয়, আঘাত কররে ঝনঝন শব্দ করে না এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী নয়, তাদেরকে অধাতু বলে। যেমন– হাইড্রোজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, অক্সিজেন, সালফার ইত্যাদি।

 

ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য :

১. রাসায়নিক ধর্মের পার্থক্য :

ধাতু

  • ধাতব অক্সাইডসমূহ ক্ষারকীয় এবং পানিতে দ্রবণীয় হলে ক্ষার উৎপন্ন হয়।
  • ধাতুসমূহ এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে লবণ উৎপন্ন করে।
  • ধাতুর ক্লোরাইডসমূহ আয়নিক লবণ ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য। এদের মধ্যে Cl- আয়ন বিদ্যমান।
  • ধাতুসমূহ খুবই কমসংখ্যক স্থিত হাইড্রাইড তৈরি করে। Na, K, Ca লবণ স্থিত ধরনের হাইড্রাইড তৈরি করে, যাতে H- আয়ন বিদ্যমান।
  • ধাতুসমূহের সাধারণত চারটির অধিক যোজ্যতা ইলেকট্রন থাকে না।
  • ধাতুসমূহ সাধারণত বিজারক পদার্থ।

 

অধাতু

  • অধাতুর বৈশিষ্ট্য পূর্ণ অক্সাইডসমূহ অম্লীয়। অন্যান্য অক্সাইডসমূহ হয় অম্লীয় অথবা নিরপেক্ষ।
  • অধাতুসমূহ এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে লবণ উৎপন্ন করে না।
  • অধাতু ক্লোরাইডসমূহ সমযোজী, উদ্বায়ী তড়িৎ অবিশ্লেষ্য এবং সাধারণত পানি দ্বারা পানি যোজিত হয়।
  • অধাতুসমূহ অনেক স্থিত হাইড্রাইড তৈরি করে। এরা সমযোজী, সরল হাইড্রাইডসমূহ গ্যাসীয় এবং পানিশূন্য অবস্থায় তড়িৎ অবিশ্লেষ্য।
  • অধাতুসমূহের চারটির অধিক যোজ্যতা ইলেকট্রন থাকে।
  • কার্বন ব্যতীত অন্যান্য অধাতুগুলো জারক পদার্থ।

 

২. ভৌত ধর্মের পার্থক্য :

ধাতু

  • ধাতুসমূহ বিদ্যুৎ ও তাপ সুপরিবাহী।
  • ধাতুসমূহের বিশেষ দ্যুতি আছে। এরা আলোক বিচ্ছুরণ করতে পারে।
  • ধাতুসমূহ ঘাতসহ, প্রসারণশীল ও নমনীয়, এদেরকে সরু তার ও পাতে পরিণত করা যায়।
  • আঘাতে ধাতুসমূহ হতে টুনটুন শব্দ হয়।
  • ধাতুসমূহকে জোড়া লাগানো যায়।
  • ধাতুসমূহ অপেক্ষাকৃত উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট।

 

অধাতু

  • অধাতুসমূহ প্রধানত বিদ্যুৎ ও তাপ অপরিবাহী।
  • অধাতুসমূহের দ্যুতি নেই। এরা আলোক বিচ্ছুরণে অক্ষম।
  • অধাতুসমূহ ঘাতসহ ও নমনীয় নয়, এদেরকে পাতলা পাতে ও সরু তারে পরিণত করা যায় না।
  • অধাতুকে আঘাত করলে কোনো শব্দ হয় না।
  • অধাতুসমূহকে জোড়া লাগানো যায় না।
  • অধাতুগুলো সাধারণত অপেক্ষাকৃত নিম্ন গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট।