ধাতু : যে সকল মৌলিক পদার্থ সাধারণ অবস্থায় কঠিন, দৃঢ়, উজ্জ্বল বা চকচকে, ওজনে ভারী, আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ করে এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী সেই মৌলিক পদার্থকে ধাতু বলে। যেমন– লােহা, তামা, সােনা ইত্যাদি।
অধাতু : যেসব মৌল চকচকে নয়, আঘাত কররে ঝনঝন শব্দ করে না এবং তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী নয়, তাদেরকে অধাতু বলে। যেমন– হাইড্রোজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, অক্সিজেন, সালফার ইত্যাদি।
ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য :
১. রাসায়নিক ধর্মের পার্থক্য :
ধাতু
- ধাতব অক্সাইডসমূহ ক্ষারকীয় এবং পানিতে দ্রবণীয় হলে ক্ষার উৎপন্ন হয়।
- ধাতুসমূহ এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে লবণ উৎপন্ন করে।
- ধাতুর ক্লোরাইডসমূহ আয়নিক লবণ ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য। এদের মধ্যে Cl- আয়ন বিদ্যমান।
- ধাতুসমূহ খুবই কমসংখ্যক স্থিত হাইড্রাইড তৈরি করে। Na, K, Ca লবণ স্থিত ধরনের হাইড্রাইড তৈরি করে, যাতে H- আয়ন বিদ্যমান।
- ধাতুসমূহের সাধারণত চারটির অধিক যোজ্যতা ইলেকট্রন থাকে না।
- ধাতুসমূহ সাধারণত বিজারক পদার্থ।
অধাতু
- অধাতুর বৈশিষ্ট্য পূর্ণ অক্সাইডসমূহ অম্লীয়। অন্যান্য অক্সাইডসমূহ হয় অম্লীয় অথবা নিরপেক্ষ।
- অধাতুসমূহ এসিডের হাইড্রোজেনকে প্রতিস্থাপন করে লবণ উৎপন্ন করে না।
- অধাতু ক্লোরাইডসমূহ সমযোজী, উদ্বায়ী তড়িৎ অবিশ্লেষ্য এবং সাধারণত পানি দ্বারা পানি যোজিত হয়।
- অধাতুসমূহ অনেক স্থিত হাইড্রাইড তৈরি করে। এরা সমযোজী, সরল হাইড্রাইডসমূহ গ্যাসীয় এবং পানিশূন্য অবস্থায় তড়িৎ অবিশ্লেষ্য।
- অধাতুসমূহের চারটির অধিক যোজ্যতা ইলেকট্রন থাকে।
- কার্বন ব্যতীত অন্যান্য অধাতুগুলো জারক পদার্থ।
২. ভৌত ধর্মের পার্থক্য :
ধাতু
- ধাতুসমূহ বিদ্যুৎ ও তাপ সুপরিবাহী।
- ধাতুসমূহের বিশেষ দ্যুতি আছে। এরা আলোক বিচ্ছুরণ করতে পারে।
- ধাতুসমূহ ঘাতসহ, প্রসারণশীল ও নমনীয়, এদেরকে সরু তার ও পাতে পরিণত করা যায়।
- আঘাতে ধাতুসমূহ হতে টুনটুন শব্দ হয়।
- ধাতুসমূহকে জোড়া লাগানো যায়।
- ধাতুসমূহ অপেক্ষাকৃত উচ্চ গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট।
অধাতু
- অধাতুসমূহ প্রধানত বিদ্যুৎ ও তাপ অপরিবাহী।
- অধাতুসমূহের দ্যুতি নেই। এরা আলোক বিচ্ছুরণে অক্ষম।
- অধাতুসমূহ ঘাতসহ ও নমনীয় নয়, এদেরকে পাতলা পাতে ও সরু তারে পরিণত করা যায় না।
- অধাতুকে আঘাত করলে কোনো শব্দ হয় না।
- অধাতুসমূহকে জোড়া লাগানো যায় না।
- অধাতুগুলো সাধারণত অপেক্ষাকৃত নিম্ন গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট।