নিয়ন একটি গ্যাসীয় মৌলিক পদার্থ। এটি একটি নিস্ক্রিয় গ্যাস। এর প্রতীক Ne এবং এর পারমাণবিক সংখ্যা ১০। নিয়ন পর্যায় সারণির গ্রুপ-১৮ এবং পর্যায়-২ অবস্থিত।
বায়ুমণ্ডলের বায়ুকে তরল করে আংশিক পাতন করে নিয়ন গ্যাস পাওয়া যায়। সূর্যে প্রচুর পরিমাণে নিয়ন গ্যাস আছে বলে ধারণা করা হয়।
১৮৯৮ সালে লন্ডনে ব্রিটিশ পদার্থবিদ স্যার উইলিয়াম র্যামজি (১৮৫২-১৯১৬) ও মরিস ডব্লিউ. ট্র্যাভার্স (১৮৭২-১৯৬১) নিয়ন আবিষ্কার করেন। র্যামসি বাতাসের একটি উপাদানকে ঠাণ্ডা করলে তা তরলে পরিণত হয়, পরে এই তরলকে গরম করে গ্যাসগুলোকে আবদ্ধ করেন। ১৮৯৮ সালের মে মাসের শেষভাগ থেকে ছয় সপ্তাহ ধরে গ্যাসগুলো থেকে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও আর্গন আলাদা করা হয়, কিন্তু বাকি গ্যাসগুলো তাদের পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে আলাদা ছিল। বাকি গ্যাসগুলোর প্রথমটি ছিল ক্রিপ্টন। ক্রিপ্টন সরানোর পর পরের গ্যাসটি স্পেক্ট্রোস্কপিক ডিসচার্জের মাধ্যমে উজ্জ্বল লাল আলো প্রদান করে। এই গ্যাসটি জুনে আবিষ্কার করা হয়, যার নাম দেওয়া হয় নিয়ন। র্যামসির পুত্রের সুপারিশে গ্যাসটির নামকরণ করা হয় লাতিন novum (নতুন) শব্দের গ্রিক সমবর্গীয় শব্দ অনুসারে।
নিয়ন গ্যাসের ব্যবহার (Use of Neon)
১. নিয়ন বাতি ও নিয়ন চিহ্ন প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়।
২. আলোকসজ্জার জন্য নিয়ন গ্যাস ইলেকট্রিক বাল্বে ব্যবহৃত হয়।
৩. সবুজ ঘরে উদ্ভিদ ও ফুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে নিয়ন গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৪. টেলিভিশন সেট, বেতার চিত্র এবং শব্দ চলচ্চিত্র ইত্যাদি’তে নিয়ন ব্যবহার করা হয়।
৫. বৈদ্যুতিক যন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে নিয়ন ও হিলিয়াম এর মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
৬. বিমানের পাইলটেরা আলোক সংকেতরূপে নিয়ন আলো ব্যবহার করে। কারণ এটি ঘন কুয়াশার মধ্যেও দৃশ্যমান হয়।
৭. নিয়ন আলো উজ্জ্বল লাল হয়ে থাকে। কিন্তু সবুজ বা নীল বর্ণের আলো তৈরিতে অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস বা মার্কারির সাথে নিয়ন গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
৮. ভোল্টমিটার, রেকটিফায়ার প্রভৃতি যন্ত্র সংরক্ষণে হিলিয়াম-নিয়ন গ্যাসের মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।