সমযোজী বন্ধন কি? (What is Covalent Bond in Bengali/Bangla?)
ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে দুইটি পরমাণুর মধ্যে যে বন্ধনের সৃষ্টি হয়, তাই সমযোজী বন্ধন। সমযোজী বন্ধন বিশিষ্ট যৌগকে সমযোজী যৌগ বলা হয়। সমযোজী যৌগ নিম্ন গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট, বিদ্যুৎ কুপরিবাহী, সাধারণত পানিতে অদ্রবণীয়, কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়।
সমযোজী বন্ধনের গঠন
যখন দুটি অধাতু পরমাণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয় তখন কোন পরমাণুর পক্ষে ইলেকট্রন ত্যাগ করা সহজ হয় না। এসব ক্ষেত্রে পরমাণুসমূহ তাদের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রন শেয়ার করে নিস্ক্রিয় গ্যাসের ন্যায় সুস্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। এভাবে সমযোজী বন্ধনের সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ : হাইড্রোজেন পরমাণুতে একটিমাত্র ইলেকট্রন আছে। হাইড্রোজেনের পক্ষে হিলিয়াম (He) পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করা সহজ। সেজন্য এর কক্ষপথে আরো একটি ইলেকট্রন প্রয়োজন। যখন দু’টি হাইড্রোজেন পরমাণু পরস্পরের সন্নিকটে আসে তখন পরমাণুদ্বয় ইলেকট্রন ত্যাগ না করে একে অন্যের ইলেকট্রন শেয়ার করে। এ অবস্থায় ইলেকট্রন দু’টি উভয় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যবর্তী স্থানে পরিভ্রমণ করে; যুগ্মভাবে অংশীদার হয় এবং হাইড্রোজেন অণু সৃষ্টি করে।
সমযোজী বন্ধনের শ্রেণীবিভাগ (Classification of Covalent Bond)
ইলেকট্রন শেয়ারের সংখ্যার ভিত্তিতে সমযোজী বন্ধনকে তিনভাগে ভাগ করা হয়। যথা:
১. একক বন্ধন (Single bond)
২. দ্বি-বন্ধন (Double bond)
৩. ত্রি বন্ধন (Triple bond)
একক বন্ধন : অণু গঠনের সময় দুটি পরমাণুর প্রত্যেকে একটি করে ইলেকট্রন সরবরাহ করে যদি একজোড়া ইলেকট্রন শেয়ার করে তবে যে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয় তাকে একক বন্ধন বলে।
দ্বি-বন্ধন : অণু গঠনের সময় দু’টি পরমাণু বহিস্তরে অষ্টক পূর্ণতার জন্য যদি প্রত্যেকে দু’টি করে ইলেকট্রন সরবরাহ করে দু’জোড়া ইলেকট্রন শেয়ার করে তবে যে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয় তাকে দ্বি-বন্ধন বলে।
ত্রি-বন্ধন : অণু গঠনের সময় দু’টি পরমাণু বহিস্তরে অষ্টক পূর্ণতার জন্য যদি প্রত্যেকে তিনটি করে ইলেকট্রন সরবরাহ করে তিন জোড়া ইলেকট্রন শেয়ার করে তবে যে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয় তাকে ত্রি-বন্ধন বলে।
এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রশ্নঃ–
- সমযোজী বন্ধন কী?
- সমযোজী বন্ধনের প্রকারভেদ।
- সমযোজী বন্ধন গঠনের শর্ত কি কি?
- সমযোজী বন্ধন কিভাবে গঠিত হয়?
- সমযোজী বন্ধনের বৈশিষ্ট্য কী কী?