অপোলার যৌগের অণুগুলোর মধ্যে যে দুর্বল আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল আছে তাকে ভ্যানডার ওয়ালস আকর্ষণ বল বলে। এ বল যে কত দুর্বল তা একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝানো যায়। যেমন ক্লোরিন অণুর বন্ধন বিভাজন শক্তি (Bond dissociation energy) 57 kCal/mole. অথচ ক্লোরিন অণু অন্য ক্লোরিন অণুর আকর্ষণ থেকে মুক্ত হতে 5 k.Cal/mole শক্তির প্রয়োজন, এই দুর্বল ভ্যানডার ওয়ালস শক্তি দ্বারা ক্লোরিন অণুগুলো পরস্পরকে আকর্ষণ করে অসংখ্য অণু একত্রে জমাট বেঁধে থাকতে পারে। ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে বৈজ্ঞানিক ভ্যানডার ওয়ালস (Van Der Waals) সর্বপ্রথম এই দুর্বল আকর্ষণ বলের অস্তিত্ব নির্ণয় করেন। তাঁর নাম অনুসারে একে ভ্যানডার ওয়ালস বল (Van Der Waals Force) বলা হয়।
ভ্যানডার ওয়ালস বল অণুর আকারের উপর নির্ভর করে। অণুর আকার যত বড় হবে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব তত বেশি হবে। এ জন্য অণুর আকার বৃদ্ধির সাথে সাথে ভ্যানডার ওয়ালস আকর্ষণ বলও বৃদ্ধি পায়। তাই গ্রুপ VIIA এর মৌলের অণুর আকার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায় বলে ফ্লোরিনের চেয়ে ক্লোরিন তার চেয়ে ব্রোমিন ও তার চেয়ে আয়োডিনের স্ফুনাঙ্ক বেশি। অণুসমূহ পরস্পরের অতি নিকটে আসলে অণুগুলোর মধ্যে অস্থায়ী ডাইপোল তৈরি হয় এবং আকর্ষণ ঘটে। এই আকর্ষণের কারণে গ্যাসীয় পদার্থকে চাপ বৃদ্ধি করে এবং তাপ কমিয়ে তরল করা যায়, ভ্যানডার ওয়ালস বলের কোনো দিক নির্দেশনা নাই, ডাইপোল-ডাইপোল আকর্ষণ বল অপেক্ষা এ বলের শক্তি খুবই কম।